দৌলতদিয়া ঘাটে আটকে আছে পণ্যবাহী ৩০ কার্গো জাহাজ

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

দৌলতদিয়া-বাঘাবাড়ী নৌরুটে নাব্য সংকট

দৌলতদিয়া ঘাটে আটকে আছে পণ্যবাহী ৩০ কার্গো জাহাজ

  • গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৭ নভেম্বর, ২০১৯

দৌলতদিয়া-বাঘাবাড়ী নৌরুটে নাব্য সংকটের কারণে এক সপ্তাহ ধরে পণ্যবাহী কার্গো চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গত সোমবার বিকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে আসা এ ধরনের অন্তত ৩০টি পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ ঘাটের কাছে আটকে ছিল। সংকট কাটাতে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করেনি। সংশ্লিষ্টরা জানান, পাথর, কয়লা, গম, সারসহ বিভিন্ন পণ্যবোঝাই এসব কার্গো বিভিন্ন দেশ থেকে চট্টগ্রাম ও মোংলা নদীবন্দরে আসছে। সেখান থেকে পণ্যবোঝাই কার্গোগুলো ঘাটে আটকা পড়ছে। পরে কিছু পণ্য আনলোড করে ছোট কার্গো বা ট্রলারে বাঘাবাড়ী পাঠানো হচ্ছে। এরপর হালকা হয়ে যাওয়া কার্গোগুলো বাঘাবাড়ীর উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে। এতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি যথাসময়ে গন্তব্যে মালামাল পৌঁছাতেও ব্যাঘাত ঘটছে।

বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয় জানায়, চট্টগ্রাম বা মোংলা থেকে পণ্য বাঘাবাড়ী পৌঁছতে সময় লাগে ৪ থেকে ৫ দিন। নৌপথের ৬-৭টি স্থানে ডুবোচর জেগে ওঠায় সরাসরি যেতে না পেরে তিন দিনে দৌলতদিয়ায় পৌঁছে খালাসের জন্য আরো কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যে কারণে বাঘাবাড়ী পৌঁছতে ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে। সরেজমিন জানা যায়, দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ঘাটের কাছে চরে নোঙর রয়েছে ৩০টির মতো কার্গো জাহাজ। এসব কার্গোতে পাথর, কয়লা সার ও গম রয়েছে। ১৫০ জনের মতো শ্রমিক বলগেটে খালাসের কাজ করছেন। আমদানি করা পাথর ও কয়লা দক্ষিণ আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া ও ভারত এসেছে। এসব পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পাবনার নগরবাড়ী এবং সেখান থেকে ঈশ্বরদী হয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে যাবে। এমভি সামিন-সোহেল ১, এমভি সোবহান ১, এমভি সনজিদ, এমভি সাদি বেঙ্গল, এমভি নুসরাত ইসলাম, এমভি আরাফাত ময়দান, এমভি সাহারাস্তি-২, এমভি আনিকা সামিহা, এমভি ওয়াফি, এমভি খিজির তরী, এমভি প্রিন্স অব সোবহান, এমভি নাফিজ-২, এমভি আসাদ-১, এমভি সামিরা গোলাপ, এমভি সোলারজেট-১, এমভি সামি-সাবা, এমভি বিউটি অব লোহাগাড়া, এমভি সাথী ভাই-২, এমভি সুলতানা মান্নান, এমভি সুপার স্টার-৩, এমভি আজমাইন আরাফ, এমভি ওয়াটার লিলি, এমভি মাস্টার সোহাগসহ নাম না জানা আরো কয়েকটিসহ অন্তত ৩০টির মতো কার্গো নদীতে ভাসতে দেখা যায়। প্রতিদিনই কার্গোর সংখ্যা বাড়ছে। এক সপ্তাহ ধরে অধিকাংশ জাহাজ অপেক্ষা করছে।  ঘাটে শ্রমিক জোগানের দায়িত্বে থাকা আরিফ ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড কমিশন এজেন্টের সহব্যবস্থাপক আ. লতিফ বলেন, ১৫০ জনের মতো শ্রমিক কাজ করছেন। অধিকাংশ শ্রমিক নগরবাড়ী থেকে এসেছে। নাব্য স্বল্পতার কারণে এক সপ্তাহ ধরে এখানে জাহাজ ভিড়ছে। শ্রমিক সংকট থাকায় পণ্য খালাস কাজ দ্রুতগতিতে করা যাচ্ছে না। তিনি আরো জানান, প্রতি বস্তা মাল থেকে ট্রান্সপোর্টকে ৩ টাকা করে দেয়।

এর মধ্যে শ্রমিকদের দিতে হয় বস্তাপ্রতি ২.৬০ টাকা। বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক আবদুর রহিম বলেন, দৌলতদিয়া-বাঘাবাড়ী নৌপথের ৬-৭টি স্থানে ডুবোচরে সরাসরি জাহাজ যেতে পারছে না। এসব স্থানে পানির গভীরতা রয়েছে ৭-৮ ফুট। পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলে প্রয়োজন অন্তত ১১ ফুট। বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে নগরবাড়ী ৯ ফুট এবং বাঘাবাড়ী পর্যন্ত ৮ ফুট গভীরতার জাহাজ চলাচলের ব্যাপারে আগেই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জাহাজ মালিকরা তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই করায় জাহাজগুলো দৌলতদিয়া ঘাটে আটকা পড়ছে। বিআইডব্লিউটিএর নিজস্ব দুটি ড্রেজার রয়েছে। গত সোমবার পর্যন্ত অগভীর স্থানে খনন কাজ শুরু হয়নি বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads