দিনপ্রতি ৭ কোটি রুপি

সংগৃহীত ছবি

বলিউড

দিনপ্রতি ৭ কোটি রুপি

  • বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ৫ মার্চ, ২০২০

সালমান খান বলিউডের ‘ভাইজান’। রিয়েলিটি শো, স্টেজ শো কিংবা বিজ্ঞাপন সব জায়গায় রেকর্ডসংখ্যক পারিশ্রমিক হাঁকেন। বিগবসে নাকি প্রতি পর্বে ১৩ কোটি রুপি করে নেন। সে ধারা থেকে বের হননি সালমান। একটি মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপনের জন্য দিনপ্রতি নিয়েছেন ৭ কোটি রুপি।

চায়নিজ স্মার্টফোনটির শুটিং হয়েছে মুম্বাইয়ের মেহবুব স্টুডিওতে গত মাসে। ফোন কোম্পানিটি অবশ্য তাকে টাকাটা সঙ্গে সঙ্গেই পরিশোধ করে দিয়েছে। কারণ, তারা ভালো করেই জানে, সালমান খানের বিশাল ফ্যান-ফলোয়ারের কথা। ভক্তদের অনেকেই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সবকিছুতেই সালমানকে অনুকরণ করার চেষ্টা করে।

শুধু তা-ই নয়, সালমান এই মোবাইলটির প্রচারণার জন্য আলাদা করে চার থেকে পাঁচ দিন সময় দেবেন। তখনো তাকে সমপরিমাণ অর্থ প্রতিদিনের জন্য দিতে হবে।

এদিকে নারী-পুরষ একসঙ্গে থাকতে গেলে বিয়ে জরুরি নয় বলে মন্তব্য করেছেন বলিউড অভিনেতা সালমান খান। সম্প্রতি ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথোপকথনে এই মন্তব্য করেছেন তিনি।

সালমান বলেন, ‘বিয়ে একটি সামাজিক প্রথা। সমাজকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করে নারী-পুরুষ। সেই সম্পর্ক ছিন্ন করতে গেলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। তবে সাম্প্রতিককালে অনেক চর্চিত বিয়েই ভেঙেছে। তাই একসঙ্গে থাকতে গেলে, বিয়ে জরুরি নয়। দুটি মানুষ যদি নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্ব চায়, একসঙ্গে জীবনযাপন করতে চায়, তার জন্য বিয়ে বাধ্যতামূলক নয়।

সালমান আরও বলেন, ‘নানা কারণে বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠান থেকে অনেকেরই বিশ্বাস উঠে গেছে। বিয়ে এখন এক মৃতপ্রায় প্রতিষ্ঠান। তাই আমিও বিয়েতে বিশ্বাস করি না।’

সালমান-ভক্তরা এ বছর তাকে পর্দায় পাবে ‘রাধে ইউর মোস্ট ওয়ান্টেড ভাই’-এ। ছবিটি মুক্তি পাবে ঈদে। আর আগামী বছরের ঈদে তার ‘কাভি ঈদ কাভি দিওয়ালি’ মুক্তির কথা রয়েছে।

বলিউডে সালমান মানে সবচেয়ে আলোচিত আবার তিনিই সব সময় হন সমালোচিত, এত কিছুর পরও তিনি বলিউডে সব থেকে জনপ্রিয়। তবে তিনি যতটা আলোচিত, ততটা আবার সমালোচিতও বটে। তার একটি কারণও রয়েছে, তিনি সময় অসময়ে বিভিন্ন নায়িকাদের প্রেমে জড়ান। তাদের সঙ্গে রসায়ন শেষে আবার অন্য নায়িকা বেছে নেন। এর আগে, তিনি কখনো সঙ্গীতা বিজলানি, কখনো ঐশ্বরিয়া রায়, কখনো আমিশা প্যাটেল, বা হালের ক্যাটরিনা কাইফ আবার কখনো জেরিন খান, ডেইজি খানের মতো নায়িকাদের সঙ্গে প্রেম করেছেন। তবে গণমাধ্যমে এসব নায়িকার কথা এলেও সালমানকে নিয়ে আরো বহু মডেল তারকার নাম শোনা গেছে। 

তবে সমালোচিত হওয়ার জন্য শুধু নায়িকাই নয় সালমানের আরো বহু ‘কুকীর্তি’ রয়েছে মিডিয়ার আর্কাইভে। ২০০২ সালের কথা। ওই সময় মদ্যপ অবস্থায় এক সড়ক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে সালমান খানকে অনেক থানা-পুলিশ করতে হয়েছে। ২০১৫ সাল অর্থাৎ ১৩ বছর পরে এসে সেই মামলা থেকে তিনি মুক্তি পান। এখানেই শেষ নয়, আরো অনেক কারণে নেগেটিভ আলোচনায় এসেছেন সালমান খান। কিছুদিন আগে জোধপুরের আদালত ২০ বছরের পুরোনো মামলায় কালো হরিণ শিকারের দায়ে সালমান খানের জন্য পাঁচ বছরের জেল ও দশ হাজার রুপি জরিমানা ধার্য করেন। যদিও পরবর্তী সময়ে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

ওই অভিযোগটা ছিল এমন, ১৯৯৮ সালের ২ অক্টোবর তিনি জোধপুরের কানকানি গ্রামে বিরল প্রজাতির দুটি কালো হরিণ শিকার করেছিলেন। সে সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সাইফ আলী খান, সোনালি বেন্দ্রে ও টাবু। যদিও এই তিনজনই এর আগে আদালতের কাছে নির্দোষ বলে রায় পান। এ ছাড়া সালমান অন্ধকার জগতের (আন্ডারওয়াল্ড) বাদশাহ দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ইন্টারনেটেও তার বহু ছবি পাওয়া গেছে।

তবে সালমান খান যেমন বিতর্কিত, তেমনই জনপ্রিয়। এর একটি কারণও আছে, তিনি ব্যক্তিগতভাবে খুবই মানবিক। ‘বিয়িং হিউম্যান’ নামের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি অনেককাল ধরে জড়িত। আর প্রায় সময় এই দাতব্য প্রতিষ্ঠানের টি-শার্ট পরে ঘুরতে দেখা যায় তাকে। তবে সালমানও এই প্রতিষ্ঠানের জন্য কম করেন না।

এই দাতব্য প্রতিষ্ঠানের প্রতি তার দরদের একটি দৃষ্টান্ত যদি বলি, ২০১১ সালের সিনেমা ‘চিল্লার পার্টি’র প্রযোজকদের একজন ছিলেন সালমান। এই সিনেমা থেকে পাওয়া মোট আয় তিনি বিয়িং হিউম্যানে ব্যয় করেন। সিনেমাটি সেবার শিশুদের ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে।

এ ছাড়া সালমান ইন্ডাস্ট্রিতে আরো জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হলো, ভারতের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি অনেকের ক্যারিয়ার গড়ে দিয়েছেন। যাদের ক্যারিয়ার সালমান গড়েছেন তাদের হিসাব বলে শেষ করা যাবে না। একসময়ের জনপ্রিয় গায়ক ও সংগীত পরিচালক হিমেশ রেশামিয়ার ক্যারিয়ারে বড় অবদান সালমান খানের। এ জন্য এই ইন্ডাস্ট্রিতে এ-ও বলা হতো, এই সালমানই নাকি হিমেশের গডফাদার। আজকের দিনের অন্যতম সেরা নায়িকাদের একজন ক্যাটরিনা কাইফ। তারও বলিউডে ক্যারিয়ার গড়ে দিয়েছেন সালমান। নব্বইয়ের দশকের হিট নায়ক গোবিন্দ যখন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন তখনই সালমান তার সঙ্গে ‘পার্টনার’ সিনেমায় অভিনয় করেন। এর মধ্য দিয়ে গোবিন্দর ডুবন্ত নৌকা আরো কিছুকালের জন্য ভেসে ওঠে। তা ছাড়াও একে একে জেরিন খান ও ডেইজি খানদের মতো নায়িকাদের তিনি বলিউডে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।

সালমান খানের সবচেয়ে খারাপ বছর ছিল ২০১৮। এই সালটা হয়তো তিনি নিজেও মনে রাখতে চান না। কারণ, গেল বছর তিনি বিভিন্ন রূপে সিনেমায় হাজির হয়েছিলেন। এর মধ্যে একটি সিনেমা ছিল ‘রেস থ্রি’। এর কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন সালমান। সঙ্গে ছবিটির প্রযোজকও ছিলেন তিনি। আরেকটি হলো ‘লাভযাত্রী’। এ সিনেমাটিরও প্রযোজনা করেছেন সালমান। এ ছাড়া ‘জিরো’, ‘ইয়ামলা পাগলা দিওয়ানা ফিরসে’ ও ‘ওয়েলকাম টু নিউইয়র্ক’ এই তিনটি সিনেমায় ক্যামিও করেছেন সালমান। এর সবগুলোই মোটামুটি ব্যর্থ ছিল।

তবে একটি ভালো ফল আসছিল রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস’-এর দ্বাদশ সিজন থেকে। এটি এশিয়ান একাডেমির বেস্ট হোস্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিল। তবে শুধু বলিউডের হিসেবে বলা যায়, সালমান খানের জন্য সময়টা বর্তমানে ভালোই। তবে তার নামটা যেহেতু সালমান খান, তাই তিনি এখনো সমান জনপ্রিয়তা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads