দালাল ছাড়া হয় না কাজ

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস

দালাল ছাড়া হয় না কাজ

  • নুরুজ্জামান, মানিকগঞ্জ
  • প্রকাশিত ১২ মার্চ, ২০২১

সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের খাবাশপুর গ্রামের ঝর্ণা রাণী সরকার চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে জরুরিভিত্তিতে পাসপোর্ট করতে পাসপোর্ট অফিসের দালাল রনির মাধ্যমে গত বছরের ১৭ নভেম্বর আবেদন করেন। আবেদনের সময় দালালকে দিতে হয়েছে ১০ হাজার টাকা। এরপর বারবার পাসপোর্ট পেতে মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক অফিস ও ঢাকা অফিসে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন তার স্বামী বাদল চন্দ্র সরকার। এভাবে প্রায় পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পাসপোর্ট হাতে পাননি। অন্যদিকে সিংগাইরের চান্দহর ইউনিয়নের সিরাজপুর গ্রামের সজীব হোসেন সৌদি আরবে বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি থেকে তার পাসপোর্ট নবায়ন করেন। বাংলাদেশে এসে ফিঙ্গার দিতে মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করলে পাসপোর্ট অফিসের এক কর্মকর্তা তাকে বলেন মানিকগঞ্জে এই পাসপোর্ট একটিভ করা সম্ভব না। এই পাসপোর্টের ফিঙ্গারের জন্য ঢাকায় যেতে হবে। নানা হয়রানির পরে সজিব গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা অফিসে ফিঙ্গারের জন্য আবেদন করেন। এরকম অসংখ্য পাসপোর্ট গ্রহীতা দালালদের খপ্পরে পড়ে নানা রকম হয়রানির শিকার হচ্ছে।

জানা গেছে, মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সুপারিনটেনডেন্ট মনিরুজ্জামান পাসপোর্ট গ্রহীতাদের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য কাউন্টারে বসেন। আর সেখান থেকেই পাসপোর্ট গ্রহীতাদের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের সময় আবেদনকারীকে নানা রকম হয়রানি করে দালালচক্রের মাধ্যমে অবৈধভাবে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন। নানা অজুহাতে আবেদনকারীদের আবেদন ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর বাইরে থেকে দালালের ফোনে ফেরত দেওয়া আবেদন জমা নেওয়া হয়। একইভাবে উচ্চমান সহকারী টুকটুকি, জামান দালালদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে পাসপোর্ট তৈরিতে নানা রকমের অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মানিকগঞ্জের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সামনের রাস্তাজুড়ে দালালদের সারিবদ্ধ লাইন। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই দালালচক্র অফিসের কর্মচারীদের ম্যানেজ করে বিভিন্ন রকমের পাসপোর্টের জন্য ভিড় জমাচ্ছে। এসব দালালচক্রের কেউ কেউ পাসপোর্ট অফিসের সামনে দোকান বসিয়ে আবার কেউ কেউ বাড়িতে বসেই মোবাইল ফোনে পাসপোর্ট অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে পাসপোর্ট তৈরির কাজ করছে।

মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসেপোর্ট অফিসের সুপারিনটেনডেন্ট মনিরুজ্জামান বলেন, আমার অফিসের বাইরে কে কি করে-সেটা তো আমার জানার কথা না। আমি কারো কাছ থেকে কোনো টাকা-পয়সা নেই না।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসেপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মাকসুদুর রহমান বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে কোনো ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads