তিস্তার বালুচর ভরে গেছে কৃষকের সোনার ফসলে

ছবি: বাংলাদেশের খবর

কৃষি অর্থনীতি

তিস্তার বালুচর ভরে গেছে কৃষকের সোনার ফসলে

  • এস কে সাহেদ, লালমনিরহাট
  • প্রকাশিত ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

তিস্তা নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় জেগে ওঠেছে বালুচর। আর সেই চালু চরে ভুট্টা ও সবজিসহ নানা সফল ফলাচ্ছেন তিস্তা পাড়ের সংগ্রামী কৃষকরা। গেল বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুন স্বপ্ন বুণনে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমনিরহাটের তিস্তা চরাঞ্চলের চাষিরা। 

তিস্তা, ধরলা আর সানিয়াজান নদী বেষ্টিত লালমনিরহাটের প্রায় অর্ধশত চরাঞ্চল রয়েছে। এর মধ্যে তিস্তায় রয়েছে ৩৪টি চর। এসব বালু চরে চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক পরিবারের সদস্যরা। কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবারের সকল সদস্য মিলে একযোগে কৃষি কাজে মাঠে নেমে পড়েন। পুরুষদের সঙ্গে পরিবারের নারী সদস্যরাও গৃহস্থলীর কাজ শেষ করে কৃষি কাজে যোগ দেন। চরাঞ্চলের বালুময় জমিতে কঠোর পরিশ্রম করে ফসল ফলানোই এক মাত্র আয়ের উৎস চরবাসীর। তাই ফসলের ভালো ফলন পেতে দিনভর মাঠে কঠোর পরিশ্রম করেন তারা। 

গতবারের বন্যা ও আর ভারী বৃষ্টিতে আমন ধানের ক্ষেত বন্যা নষ্ট হয়েছে। অনেক কৃষকের গোলা শূন্য হয়ে পড়েছে। তাই খাদ্যের যোগান ও সংসারের খরচ মেটাতে বালুময় জমিতে ফসল ফলানোর সংগ্রামে নেমে পড়েছেন চরবাসী। চরাঞ্চলের এসব বালু জমিতে প্রচুর সেচ দিয়ে আলু, ভুট্টা, বাদাম, মিষ্টি কুমড়া, তরমুজ, তামাক, মরিচ, রসুন ও পেঁয়াজসহ নানান জাতের সবজি চাষাবাদ করেন চরবাসী।

তবে সেচ ব্যবস্থা চরাঞ্চলের চাষাবাদে সব থেকে বড় সমস্যা। বালু জমি হওয়ায় সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ফসলের ক্ষেতে সেচ দিতে হয় চাষিদের। অনেকের  সেচ পাম্প না থাকায় ভাড়ায় চালিত শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে পলিথিনের বিশেষ পাইপ দিয়ে প্রতি ঘণ্টা ১০০ টাকা দামে পানি ক্রয় করতে হয় তাদের। যা ব্যয়বহুল ও পরিশ্রমের। আর এভাবেই প্রতিবছর কঠোর শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে স্বপ্ন দেখেন চরাঞ্চলের চাষিরা। শুষ্ক মৌসুমের চাষাবাদে অর্জিত আয়ে বন্যাকালীনসহ বাকী সময় চলে চরবাসীর প্রতিটি পরিবারের সংসার।

কালীগঞ্জ উপজেলার তিস্তা চরাঞ্চল চর বৈরাতি গ্রামের আমিনুল, রেহানা কৃষক দম্পত্তি জানান, গোয়াল ভরা গরু আর গোলা ভরা ধান ছিল আমাদের। বাপ-দাদার ভিটে-মাটি সব বিলিন হয়ে গেছে তিস্তায়। কিছুই অবশিষ্ট নেই। যা আছে সবই বালুর চর। সংসার চালাতে ওই বালু চরে পানি সেচ দিয়ে ভুট্টা, রসুন, পেঁয়াজ ও আলুর চাষাবাদ করছি। প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে নিবীড় পরিচর্যা করছি এসব ফসলের।

সদর উপজেলার আনন্দ বাজার এলাকার তিস্তা গোবর্ধন চরের কৃষক জয়নাল আবেদীন (৫০) বলেন, এক সময় অনেক জমি-জমা ছিল। যা কেড়ে নিয়েছে তিস্তা । শীত মৌসমে পানি কমে যাওয়ায় সেই জায়গা আবার জেগে উঠেছে। আর সেখানে এখন তামাক, ভুট্টা ও পেয়াজ চাষ আবাদ করছি। এসব ফসল বিক্রি করেই চালাতে হবে সারা বছরের সংসার খরচ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads