তবু টোলমুক্ত হচ্ছে না সেতু

ছবি: বাংলাদেশের খবর

যোগাযোগ

নির্মাণ ব্যয়ের পাঁচগুণ আদায়

তবু টোলমুক্ত হচ্ছে না সেতু

  • ইমরান আহমদ, সিলেট
  • প্রকাশিত ১৭ অক্টোবর, ২০২১

বড় ধরনের নির্মাণ ব্যয় সামাল দিতেই সাধারণত সড়ক বা সেতু থেকে টোল আদায় করা হয়ে থাকে। টোল নীতিমালাতেও বলা আছে ২০০ মিটারের কম দৈর্ঘ্যের সেতু থেকে টোল আদায় করা যাবে না। এর চেয়ে বড় দৈর্ঘ্যের সেতুর ক্ষেত্রেই সাধারণত, ধীরে ধীরে অল্প অল্প করে টোল সংগ্রহের মাধ্যমে সরকার তুলে নেয় নির্মাণের খরচ। সহজ হিসেবে খরচ উঠে গেলে সেতুগুলো টোলমুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও একটি সেতুতে টোল চালু হলে তা থেকে যেন আর মুক্তি মিলে না। নির্মাণ ব্যয়ের ৪/৫ গুণ রাজস্ব আদায়ের পরও সিলেটের বিভিন্ন সেতু থেকে টোল আদায় চলছেই।

সিলেট সড়ক বিভাগে সব মিলিয়ে পাঁচটি সেতু থেকে টোল আদায় করা হয়ে থাকে। সেতুগুলো হচ্ছে-সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের বিশ্বনাথ উপজেলায় অবস্থিত লামাকাজি এম. এ খান সেতু, ঢাকা থেকে সিলেট প্রবেশের পথে ওসমানীনগর উপজেলায় অবস্থিত শেরপুর সেতু, বিয়ানীবাজার উপজেলায় অবস্থিত শেওলা সেতু, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত ফেঞ্চুগঞ্জ সেতু, সিলেট শহরতলির শাহপরান সেতু। এ পাঁচটি সেতুর সব কটি সেতু থেকেই নির্মাণ ব্যয়ের কয়েক গুণ রাজস্ব জমা পড়েছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে। তবে সেতুগুলো এখনো টোলমুক্ত হয়নি, আদৌ হবে কি না সে ব্যাপারেও কোনো নিশ্চয়তা মেলেনি। টোল আদায় করা হয় এমন সেতুর মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো সেতু হচ্ছে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের বিশ্বনাথ উপজেলায় অবস্থিত লামাকাজি এম এ খান সেতু। ১৯৮৪ সালে নির্মিত সেতুতে ব্যয় হয় সাত কোটি ৬১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। ১৯৯০ সালের ৩ আগস্ট থেকে এ সেতু থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে। টোল আদায়ের ৩১ বছরে ব্যয়ের চার গুণের অধিক রাজস্ব আদায় হলেও এখনো বন্ধ হয়নি।

টোল বন্ধের জন্য দীর্ঘদিন থেকে শ্রমিকরা দাবি জানিয়ে এলেও কোনো উদ্যোগ গ্রহণ নাকরায় গতকাল শনিবার থেকে আন্দোলনে নেমেছেন শ্রমিকরা। আন্দোলনরত শ্রমিকরা বলছেন, অনেক টোল দিয়েছি, আর টোল দেয়া হবে না। গতকাল সকালে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের লামাকাজির এম.এ খান সেতুতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে সিলেট-সুনামগঞ্জ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

এদিকে সিলেট সড়ক বিভাগের সরবরাহ করা তথ্য মতে, ১৯৯০ সালের ৩ আগস্ট টোল আদায় শুরুর পর থেকে ৩১ বছরে এ সেতু থেকে টোল বাবদ সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৩৪ কোটি ২৫ লাখের মতো। অর্থাৎ ২১৭ মিটার দীর্ঘ এ সেতু থেকে সরকারের প্রাপ্তিযোগ হয়েছে প্রায় ৪ গুণ থেকে বেশি। তবে রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে শেরপুর সেতু। ২৬৯ মিটার দীর্ঘ এ সেতু থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ৫ গুণ। ১৯৯০ সালে ১০ কোটি এক লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতু থেকে টোল আদায় শুরু হয় ১৯৯১ সালের ১ এপ্রিল থেকে। চলতি বছর পর্যন্ত ৩০ বছরে এ সেতু থেকেও পাঁচ গুণের অধিক রাজস্ব আয় হয়েছে। আর সিলেটের বাকি সেতুগুলোর ক্ষেত্রেও নির্মাণ ব্যয়ের ২-৩ গুণ টোল জমা পড়েছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে।

সিলেটের সেতুগুলো কবে টোলমুক্ত হবে এ ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়নি সিলেটের সড়ক বিভাগ থেকে। সরকারি নির্দেশনার ওপরই বিষয়টি নির্ভর করছে বলে জানান সিলেট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী উৎপল সামন্ত।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads