ঢাকা-জলপাইগুড়ি ট্রেন চালুর ঘোষণা ২৭ মার্চ

সংগৃহীত ছবি

যোগাযোগ

ঢাকা-জলপাইগুড়ি ট্রেন চালুর ঘোষণা ২৭ মার্চ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ মার্চ, ২০২১

রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ি যাত্রীবাহী ট্রেন চালুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ২৭ মার্চ দেওয়া হবে। গতকাল সোমবার দুপুরে রেল ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, ২৬ মার্চ ট্রেনটি চালুর ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। সেই সিদ্ধান্ত পাল্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২৭ মার্চ যৌথভাবে এ ঘোষণা দেবেন। ট্রেনটির নাম মিতালী এক্সপ্রেস রাখার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। সপ্তাহে দুই দিন ঢাকা ও জলপাইগুড়ি থেকে এ ট্রেন চলাচল করবে। তবে মহামারী পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ট্রেন চলাচল শুরু হবে না।

ট্রেনটি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট-চিলাহাটি-নিউ জলপাইগুড়ি (সোমবার ও বৃহস্পতিবার- ট্রেন নম্বর-৩১৩১) এবং নিউ জলপাইগুড়ি-চিলাহাটি-ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট (রোববার ও বুধবার- ট্রেন নম্বর-৩১৩২) চলাচল করবে। এ পথে যাতায়াত দূরত্ব ৫৯৫ কিলোমিটার। ট্রেনে ১০টি বগি থাকবে। এসি সিট ১৪৪টি, এসি চেয়ার ৩১২টি এবং এসি বার্থ থাকছে ৯৬টি। এসি বার্থ ভ্যাট ও ট্রাভেল ট্যাক্স মিলে ৪ হাজার ৯০৫ টাকা, এসি সিট ৩ হাজার ৮০৫ টাকা এবং এসি চেয়ার ২ হাজার ৭০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্রেনের ইমিগ্রেশন ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে ও চিলাহাটিতে হবে। 

মন্ত্রী বলেন, চিলাহাটিতে শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গের যাত্রীদের জন্য রাখা হবে, চাহিদা অনুসারে সেখানে বগি দিয়ে ইমগ্রেশন করে যাত্রী ওঠানো হবে। চিলাহাটি স্টেশন থেকে যে যাত্রী ওঠানামা করবে সে স্টেশনে শুধুমাত্র এসি চেয়ার শ্রেণিতে আসন বরাদ্দ থাকবে। চিলাহাটি থেকে এসি চেয়ারে ভাড়া হবে এক হাজার ২৩৫ টাকা। প্রাথমিকভাবে ভারতীয় রেক (বগি) দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে। আয়ের আনুপাতিক অংশ পারস্পরিক আলোচনাসাপেক্ষে ঠিক করা হবে। অর্ধ শতাব্দীর বেশি বন্ধ থাকার পর গত ১৭ ডিসেম্বর আবারো চালু হয় বাংলাদেশের চিলাহাটি থেকে ভারতের হলদিবাড়ি রুটে ট্রেন চলাচল।

উদ্বোধনের দিন চিলাহাটিতে রেলমন্ত্রী বলেছিলেন, এ পথ দিয়ে আপাতত দুই দেশের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে। দুই দেশের সম্মতিক্রমে আগামী ২৬ মার্চ থেকে ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ আমল থেকেই চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দার্জিলিং থেকে খুলনা হয়ে কলকাতা পর্যন্ত এ রেলপথে নিয়মিত একাধিক যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করত। ১৯৬৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের পর তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া আগামী বছর ডিসেম্বরে ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার ট্রেন চালু হবে বলে জানান মন্ত্রী। বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ১০টি প্রজেক্টের মধ্যে রেলওয়ের দুটি অগ্রাধিকার প্রজেক্ট রয়েছে। একটি হচ্ছে পদ্মা লিংক, আরেকটা হচ্ছে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ। আগামী বছরের জুনের মধ্যে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের প্রজেক্ট শেষ হওয়ার কথা। এই লক্ষ্যেই আমাদের প্রজেক্টের কাজ এগিয়ে চলেছে। কাজের অগ্রগতিও সন্তোষজনক। তবে আমরা আরো অতিরিক্ত ছয় মাস হাতে রেখেছি। জুনের মধ্যে যদি আমরা কাজ শেষ করতে নাও পারি, তাহলে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ইনশাআল্লাহ আমরা বাংলাদেশের অন্য জেলার সঙ্গে রেলপথে কক্সবাজারকে সংযুক্ত করতে পারব।

উল্লেখ্য, কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণে বর্তমান সরকারের এ প্রকল্প গৃহীত হয় ২০১১ সালে। প্রথমে অর্থের সংস্থান ও পরে জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় প্রকল্পটি শুরু করতেই অনেক দেরি হয়ে যায়। ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের জন্য শেষ পর্যন্ত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে ১৫০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads