ট্রাম্পের দাবি সালমানকে দায়ী করেনি সিআইএ

ছবি : ইন্টারনেট

বিদেশ

খাশোগি হত্যাকাণ্ড

ট্রাম্পের দাবি সালমানকে দায়ী করেনি সিআইএ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৪ নভেম্বর, ২০১৮

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ তাদের মূল্যায়ন প্রতিবেদনে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করেনি বলে দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফ্লোরিডার অবকাশযাপন কেন্দ্র মার-আ-লগোতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন দাবি করেন। 

ট্রাম্প বলেন, সিআইএ তাদের তদন্তের উপসংহার টানেনি। আমার কাছে প্রতিবেদনটি আছে। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, আমি জানি না, কীভাবে কেউ উপসংহারে পৌঁছাবে যে ক্রাউন প্রিন্সই এটা করেছে!

সম্প্রতি সিআইএ’র এক সূত্রের বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, সৌদি যুবরাজের নির্দেশেই জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে সিআইএ। তুরস্কের কাছ থেকে পাওয়া সব তথ্য-প্রমাণ এবং কনস্যুলেটের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে পাওয়া ভিডিও বিশ্লেষণ করে সিআইএ জানিয়েছে, ক্রাউন প্রিন্স সালমানের নির্দেশেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। খাশোগির কণ্ঠ থামিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। এ বিষয়ে সালমান যুক্তরাষ্ট্রে সৌদির রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত এক প্রিন্সকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার তুরস্কের সংবাদমাধ্যম হুরিয়াত ডেইলি নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র কাছে সৌদি যুবরাজের একটি ফোন রেকর্ড রয়েছে। ওই ফোনকলে সৌদি যুবরাজ ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খাশোগিকে চুপ করিয়ে’ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমটি দাবি করে, গত মাসে আঙ্কারা সফরের সময় সিআইএ পরিচালক ওই ফোন রেকর্ড থাকার ‘ইঙ্গিত’ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কথা বলতে চাই না। আপনারা তাদেরই জিজ্ঞেস করুন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট অবশ্য খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই সৌদি আরবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা অটুট রাখার ওপর জোর দিচ্ছিলেন। গত মঙ্গলবারও ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, সৌদি আরব আমাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র। তারা আমাদের দেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে যুবরাজ বিন সালমান আগেভাগে অবগত থাকলেও থাকতে পারেন। কিংবা নাও থাকতে পারেন। যেটাই সত্য হোক, সৌদির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে চিড় ধরবে না।

ব্যক্তিগত প্রয়োজনে গত ২ অক্টোবর তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়েছিলেন রাজপরিবারের বিভিন্ন নীতির সমালোচক হিসেবে পরিচিত খাশোগি। এরপর থেকেই তার আর কোনো খোঁজ নেই। সৌদি গুপ্তচররা ওই কনস্যুলেটের ভেতরেই তাকে মেরে ফেলেছে বলে প্রথম থেকে দাবি করে আসছে আঙ্কারা। শুরুর দিকে উড়িয়ে দিলেও রিয়াদ পরে কনস্যুলেটের ভেতর খাশোগি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে নেয়। এ ঘটনার সঙ্গে ক্রাউন প্রিন্সের কোনো যোগসাজশ নেই বলে সৌদি আরব দাবি করলেও মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশ ছাড়া এ ধরনের কিছু হওয়া একেবারেই অসম্ভব। সর্বশেষ সিআইএ’র মূল্যায়নেও কনস্যুলেটের ভেতর সাংবাদিক মেরে ফেলার ঘটনায় সৌদি ক্রাউন প্রিন্সকে দায় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো।

এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ মিত্র আরব দেশগুলো সফরে বেরিয়েছেন। আরব আমিরাত দিয়ে তার এ আঞ্চলিক সফর শুরু হয়েছে।

আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডের পর এটিই সৌদি আরবের অন্যতম ক্ষমতাধর এ ব্যক্তির প্রথম বিদেশ সফর। মোহাম্মদ এ মাসের শেষদিকে আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সে হতে যাওয়া জি-২০ সম্মেলনেও যোগ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানেই তার সঙ্গে তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads