প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিশংসনের প্রক্রিয়ায় কোনো প্রত্যক্ষদর্শী বা কাউন্সেলরকে কি সিনেটররা প্রশ্ন করতে পারবেন, এমন বিষয় এখন আলোচনায়। বলা হচ্ছে, তারা তা পারবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের কাছে লিখিত জমা দেওয়ার মাধ্যমে। এক্ষেত্রে সাক্ষীদের সিনেট ফ্লোরে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক নয়। তাদেরকে আগে দেওয়া সাক্ষ্যের ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন কমিটির আইনপ্রণেতারা। এক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাটদের দাবি, হোয়াইট হাউজের কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা। তার মধ্যে রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত চিফ অব স্টাফ মাইক মালভানি এবং সাবেক উপদেষ্টা জন বল্টন। তবে রিপাবলিকানরা যদি চায় স্বল্প সময়ের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ করতে তবে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ নাও করা হতে পারে। গত মঙ্গলবার রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাকনেল সিনেটে বলেছেন, সিনেটের দায়িত্ব হলো এ প্রক্রিয়ায় বিচারক এবং জুরির ভূমিকায় শুনানি করা।
ট্রাম্প কি কোনো প্রমাণ দেবেন?
সিনেটে নিজে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ আছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের। এক্ষেত্রে তিনি হোয়াইট হাউজের আইনজীবী প্যাট সিপোলোনেকে বেছে নিতে পারেন তার পক্ষে বক্তব্য দেওয়ার জন্য। প্যাট সিপোলোনে ইমপিচমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হচ্ছে, নিজের টিমে প্রতিনিধি পরিষদের কিছু রক্ষণশীলকে রাখতে পারেন। তার মধ্যে রয়েছেন ওহাইওর কংগ্রেসম্যান জিম জর্ডান ও টেক্সাসের ডন র্যাচক্লিফ।
জো বাইডেনকে কি সাক্ষ্য দিতে হবে?
অভিশংসন প্রক্রিয়া কীভাবে সাজাবেন তা মিচ ম্যাকনেল নির্ধারণ করবেন। তার ওপরই নির্ভর করবে জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টার বাইডেনকে সাক্ষ্য দিতে হবে কি না। এর আগে সাক্ষ্য দেওয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন জো বাইডেন। তিনি এনপিআর’কে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ থেকে মনোযোগ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান।
কতদিন লাগবে অভিশংসনে
প্রতিনিধি পরিষদের অভিশংসন সিনেটে পাঠানোর পর প্রতিদিনই এ নিয়ে বিবেচনায় নিতে হবে সিনেটকে। শুধু রোববার বাদ যাবে। তা ছাড়া চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন এ বিষয়ের ওপর কার্যক্রম চলবে। এক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমারের মতে দ্রুততার সঙ্গে অভিশংসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ১২৬ ঘণ্টার মতো সময় লাগতে পারে। সেই সময়সূচি এরকম :
১৮ ডিসেম্বর : এদিন প্রতিনিধি পরিষদে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অভিশংসিত করা হয়েছে।
৬ জানুয়ারি : সিনেটে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু হবে। গাইডলাইন এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হবে।
৭ জানুয়ারি : জুরি হিসেবে সিনেটরদের এবং প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের শপথ গ্রহণ।
৯ জানুয়ারি : হাউজ প্রসিকিউটর এবং হোয়াইট হাউজ কাউন্সেল প্রতিটি পক্ষের সামনে যুক্তিতর্ক উত্থাপনের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হবে।
এতে আরো সময় লাগতে পারে। তবে ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাইমারি নির্বাচন শুরু হচ্ছে। এর আগেই অভিশংসন প্রক্রিয়া শেষ করার আশা করছে ডেমোক্র্যাটরা।