টাঙ্গাইলের ম্যাপ : সংগৃহীত

টাঙ্গাইলে আটটি আসনে ৫০ জন প্রার্থী লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষের

নির্বাচন

টাঙ্গাইলে আটটি আসনে ৫০ জন প্রার্থী লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষের

  • টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮

মোস্তফা কামাল নান্নু, টাঙ্গাইল
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের ৮টি আসনে এখন ভোটের হাওয়া বইছে। সর্বত্র এখন ভোটের আলোচনায় সরগরম। হাট-বাজার, চায়ের দোকান, সর্বত্রই ভোটের আলোচনা। এবারে নির্বাচনী মাঠে শুধু মিছিল মিটিং করে নয়, নিজের নামে উন্নয়ন ও প্রতিশ্রুতি সুরেলা গানের মাধ্যমে প্রচারে নেমেছে প্রার্থীরা। এতে করে প্রত্যেক প্রার্থীই স্ব স্ব অবস্থানে নিজেদের বিজয় নিশ্চিত বলে দাবি করছেন।
টাঙ্গাইলের আটটি আসনে ৫০ জন প্রার্থী নির্বাচনে চুড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। প্রতিক পাওয়ার পর থেকেই জোরেসোড়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন প্রার্থীরা।

টাঙ্গাইলে ১২ উপজেলার ৮টি আসনে ১১টি পৌরসভা ও ১১৮টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ১০০১টি। আসনগুলোতে মোট ভোটার রয়েছে ২৭ লাখ ৮ হাজার ৩৯৮জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ৯১১জন এবং মহিলা ভোটার ১৪ লাখ ৪ হাজার ৪৮৭জন। এদের মধ্যে নতুন ভোটার হয়েছেন ৪১ হাজার ৩৩৭জন।
প্রতিদ্বন্দ্বীকারী প্রার্থীরা হলেন, ১৩০-টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ভোলার সাথে বিএনপি প্রার্থী সরকার শহীদের দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে। এ আসনের মধুপুর উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ৮৩, পুরুষ ভোটার- ১ লাখ ৯ হাজার ৪১৬ জন, মহিলা ভোটার ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০৯ জন।


ধনবাড়ী উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ৭ টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট কেন্দ্র ৫৬, পুরুষ ভোটার ৬৯হাজার ৬৩২ জন ও মহিলা ভোটার ৭২ হাজার ৪৩৪ জন। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯১ জন।

১৩১-টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তানভীর হাসান ছোট মনির সাথে বিএনপি প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু লড়ছেন। বিএনপি প্রার্থী বর্তমানে কারাগারে থাকলেও দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে। আসনের গোপালপুর উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ৭৫, এই উপজেলায় পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১ হাজার ৯৫ জন, মহিলা ভোটার ১ লাখ ১ হাজার ১৯৩ জন।
ভূঞাপুর উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ৫৭টি, এতে পুরুষ ভোটার ৭৪ হাজার ১৩৯ জন ও মহিলা ভোটার ৭২ হাজার ২৪৩ জন। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭০ জন।


১৩২-টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আতাউর রহমান খানের সাথে বিএনপি প্রার্থী লুৎফর রহমান খান আজাদ প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলেও বিএনপিকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না তেমন। এতে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী হতাশ হয়ে আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করছেন। আসনে ১টি পৌর ও ১৪টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ১১৯, এতে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৭ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৬৯ জন। এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয় প্রায় নিশ্চিৎ।

১৩৩-টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী এখন সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের লিয়াকত আলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি থাকাবস্থায় মনোনয়ন পেতে ব্যার্থ হওয়ায়, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হয়ে ধানের শীষ প্রতিকে লড়ছেন। যে কারণে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে গ্রহন করতে পারছেনা। এদিকে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর সাথে নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বীতা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, গত রবিবার লতিফ সিদ্দিকী নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা দেয়ায়, এ আসনটি আওয়ামী লীগের জন্য প্রায় নিশ্চিৎ হয়ে উঠেছে।
এ আসনে ২টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ১০৮টি, এতে পুরুষ ভোটর ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৫ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ, ৫৬ হাজার ১৮৩ জন।


টাঙ্গাইল-৫ (সদর) এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. ছানোয়ার হোসেন, বিএনপি প্রার্থী মাহমুদুল হাসান, জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিউল্লাহ আল মুনির, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ সিদ্দিকী প্রতিদ্বন্দ্বী করছেন। এই আসনের নির্বাচনে চতুর্মুখী প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে। চারজনই নিজের অবস্থান ধরে রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আসনে ১টি পৌরসভা ও ১২ ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ১২৭ টি, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫৭৩ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৬৫ জন।

টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আহ্সানুল ইসলাম টিটু ও বিএনপি প্রার্থী গৌতম চক্রবর্তীর দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে। তবে সুবিধা জনক অবস্থানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী। কারণ আওয়ামী লীগ সকল ক্রোন্দল কাটিয়ে মাঠ দখলে রেখেছে তারা। এদিকে, সে তুলনায় বিএনপি প্রার্থীকে তেমন মাঠে পাচ্ছে না ভোটাররা। তাছাড়া বিএনপির শাসনামলে গৌতম চক্রবর্তী পানি সম্পদ মন্ত্রী থাকাবস্থায় দৃশ্যত কোন উন্নয়ন দেখাতে পারেননি।
এ আসনের দেলদুয়ার উপজেলায় ৮টি ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্র ৫৬টি, পুরুষ ভোটার ৮০ হাজার ৪৮০ জন ও মহিলা ভোটার ৮০ হাজার ৯১৩ জন।
নাগরপুর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ৮৫, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৯২ জন। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯০ হাজার ৪৪৬ জন। এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয় নিশ্চিৎ বলে মনে করেন এ এলাকার ভোটাররা।

টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী একাব্বর হোসেনের সাথে বিএনপি প্রার্থী আবুল কালাম সিদ্দিকীর দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে। আসনে ১টি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ১১৩, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭৮ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৬২ হাজার ৭৯৫ জন।

টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জোয়াহেরুল ইসলামের সাথে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কুঁড়ি সিদ্দিকীর দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে। আসনের বাসাইল উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ৫৩, পুরুষ ভোটার ৬৫ হাজার ২৮০ জন ও মহিলা ভোটার ৬৮ হাজার ৩৭৯ জন।
সখীপুর উপজেলায় ১ টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ৬৯, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩ হাজার ১৭৫ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৯ হাজার ৮১২ জন। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬৪৬ জন।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
তাং- ২৫.১২.২০১৮

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads