জেলা প্রশাসনের শীতবস্ত্রের বরাদ্দ শেষ, শিশুদের জন্য নেই বিকল্প ব্যবস্থা

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

জেলা প্রশাসনের শীতবস্ত্রের বরাদ্দ শেষ, শিশুদের জন্য নেই বিকল্প ব্যবস্থা

  • লালমনিরহাট প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯

গত ৫দিনেও সুর্যের দেখা নেই। একটুকরো গরম কাপড়ের অভাবে প্রচন্ড শীতে কষ্ট পাচ্ছে তিস্তা চরের নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। শেষ হয়ে গেছে জেলা প্রশাসনের প্রথম পর্যায়ের বরাদ্দকৃত শীতবস্ত্র। শীতার্ত শিশুদের জন্য নেই বিকল্প ব্যবস্থা। হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা।

গত বুধবার থেকে রোববার পর্যন্ত ৫দিনব্যাপী বইছে হাড়কাঁপা শীতের সাথে হিমেল হাওয়া। ঘন কুয়াশায় ঢাকা আকাশে এই ৫দিনেও মেলেনি স‍ূর্যের দেখা। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মতো পড়া কুয়াশার সঙ্গে হিমেল হাওয়া যুক্ত হয়ে বেড়ে গেছে শীতের প্রকোপ। শীতে কাবু হয়ে পড়েছে মানুষসহ গৃহপালিত পশুপাখি। শীতবস্ত্রের অভাবে নিদারুণ কষ্টে পড়েছেন তিস্তা ও ধরলার চরাঞ্চলের নিম্নে আয়ের হাজার হাজার মানুষ। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। সব থেকে বেশি কষ্ট পোহাচ্ছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। সরকারিভাবে যেসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এছাড়াও এবছর শিশুদের জন্য নেই সরকারি কোন শীতবস্ত্র বা সোয়েটার। অভিযোগ উঠেছে সরকারি শীতবস্ত্রের হিংভাগ জেলা ও উপজেলা শহরেই বিতরন করা হয়েছে। ফলে এখনো সরকারী বরাদ্দের কম্বল তিস্তা চরের অনেক এলাকায় পৌঁছায়নি। একটুকরো গরম কাপড়ের অভাবে প্রচন্ড শীতে কষ্ট পাচ্ছে তিস্তা চরের নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া হাজারও মানুষ। তবে বেসরকারিভাবে জেলার বিভিন্ন স্থানে শীতবস্ত্র বিতরন শুরু হওয়ায় কিছুটা চাহিদা পুরন হচ্ছে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা: কাসেম আলী জানান, গত বুধবার থেকে রোববার দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫দিনে শীতজনিত রোগে আক্রন্ত হয়ে ২৩৫জন রোগী জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ১২৭জন নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী যার অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। গত ৫দিনে শুধু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৪০জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ১থেকে ৫বছরের শিশুর সংখ্যা বেশি। আর ৫দিনে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৩৩জন শিশু। হাসপাতালগুলোর বহি বিভাগেও বেড়েছে শীতজনিত রোগীর ভিড়। এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন কয়েকশত রোগী।

কুয়াশার কারণে সব ধরনের দূরপাল্লার বাসের সিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ধীরগতির কারণে এমনটাই ঘটছে বলে বাস চালকদের দাবি। দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যান বাহন। ঢাকা থেকে লালমনিরহাটমুখী সব নৈশ্যকোচ ভোরে পৌঁছার কথা থাকলেও বেলা ১১টার দিকে জেলার টার্মিনালে পৌঁছেছে। কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া কার্যালয় থেকে জানা গেছে, গতকাল রোববার সীমান্ত ঘেঁষা লালমনিরহাটের তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জেলা ত্রাণ ও পুনবাসন কর্মকর্তা আলী হায়দার বলেন, সরকারিভাবে শীতবস্ত্র হিসেবে প্রথম পর্যায়ে ২৯ হাজার ১০০ পিস কম্বল বরাদ্দ এলে তা বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে আরো ৫হাজার কম্বল শীঘ্রই আসছে। এছাড়া শিশুদের জন্য সোয়েটার চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, শীতার্ত ছিন্নমুল মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। নতুন করে শীতবস্ত্রের কম্বল ও শিশুদের জন্য সোয়েটার চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে তা দ্রুত বিতরণ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads