একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মনোনয়ন দেওয়া বোকামি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি আরো বলেন, জামায়াত নেতারা ধানের শীষ নিয়ে প্রার্থী হবে জানলে ঐক্যফ্রন্টের দায়িত্ব নিতাম না। গত বুধবার ভারতের ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।
নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হওয়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২২ নেতার বিএনপির প্রতীকে নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে দৈনিকের প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে আমাকে বলতে হচ্ছে জামায়াত নেতাদের মনোনয়ন দেওয়াটা ছিল বোকামি। আমি লিখিত দিয়েছি যে, জামায়াতকে কোনো সমর্থন দেওয়া এবং ধর্ম, মৌলবাদ, চরমপন্থাকে সামনে আনা যাবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘যদি জানতাম জামায়াত নেতারা বিএনপির প্রতীকে নির্বাচন করবেন, তাহলে আমি দলের সঙ্গে যোগ দিতাম না। ভবিষ্যৎ সরকারে যদি জামায়াত নেতাদের কোনো ভূমিকা থাকে, তাহলে আমি তাদের সঙ্গে একদিনও থাকব না।’
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম আইনমন্ত্রী হন এবং ১৯৭২ সালে দেশের সংবিধান তৈরি কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পান। ১৯৭৪ সালে দায়িত্ব পান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘কয়েক মাস আগে আমার সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং নবগঠিত ঐক্যফ্রন্টের দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করেন। আমি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত ছিলাম। সে কারণে এ দায়িত্ব নিতে রাজি হই। সে সময় দেশের সুশীল সমাজ, সাংবাদিক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলকে দমনের কথা জানতাম।’
ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের বিষয়ে ড. কামাল বলেন, ‘ভারতকে বিএনপি বলেছে, তাদের ভুল ছিল। খালেদা জিয়া যখন ভারত গেলেন, তখন তিনি তাদের এটা বলেছেন। এটা তাদের ভুল উপলব্ধির প্রক্রিয়ার অংশ, খালেদা জিয়া নিজেদের অবস্থান সংশোধন শুরু করেছেন।’
নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট জিতলে প্রধানমন্ত্রী হবেন কি না জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বলেন- ‘আমি হ্যাঁ বা না বলব না। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই এবং কোনো পদ ও বেতন ছাড়াই কাজ করতে আগ্রহী।’
নির্বাচন নিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি ভোটের দিনের অপেক্ষায় আছি। ভোটের দিন একটি স্বাধীনতার দিন। যদি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তাহলে তা হবে দ্বিতীয় স্বাধীনতার দিন। এখন গণতন্ত্র বিপদগ্রস্ত। যদি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তাহলে স্বাধীনতা অর্থপূর্ণ হবে।’
দেশের পুলিশ ও প্রশাসনে দলীয়করণের অভিযোগের প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘পুলিশের দিকে দেখুন তারা কী করছে?’ পুলিশ এখন দলীয় লাঠিয়ালে পরিণত হয়েছে বলেও ড. কামাল হোসেন অভিযোগ করেন।