জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে আইবিএ জেইউ সান্ধ্যকালীন কোর্সের এক শিক্ষার্থী ও তার বান্ধবীকে ছিনতাই করতে গিয়ে নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তার হাতে আটক হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থী। আজ রোববার দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্টানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটকৃতরা হলেন, মো. সজিব কাজী, আসিফ আহমেদ (বাংলা বিভাগ), মো. সোহেল রানা, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ইয়া রাফিউ শিকদার (লোক প্রশাসন)। এরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের (৪৭ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে মো. সোহেল রানা, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ইয়া রাফিউ শিকদার ছাত্রলীগ কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানার অনুসারী বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় ভূক্তভোগী ওই দু’জন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগপত্রে তারা বলেছেন, ‘আইবিএ জেইউ সন্ধ্যকালীন কোর্সের শিক্ষার্থী মো. জাহেদুর রহমান অর্ণব এবং তার বান্ধবী ক্যাম্পাসে বোর্টানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন এলাকায় ঘুরতে আসেন। এসময় সেখানে উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদেরকে (ভূক্তভোগী) অনৈতিক কাজ করা অবস্থায় পেয়েছেন এমন অভিযোগ করে বিষয়টি মীমাংসার জন্য নগদ ২৫ হাজার টাকা দবি করেন। টাকা না দিলে প্রক্টরের কাছে সোর্পদ করবে বলে হুমকিও দেন। এসময় ভূক্তভোগী মো. জাহেদুর রহমান অর্ণবকে মারধর এবং তার বান্ধবীকে গালিগালাজ করে ওই কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে মো. জাহেদুর রহমান অর্ণব তার কয়েকজন বন্ধুকে ফোন করে ডেকে আনেন। এক পর্যায়ে জাহেদুরকে তার বন্ধুদের সামনে মারধর করতে থাকলে খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও অন্যান্য সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের উদ্ধার করে অভিযুক্তদেরসহ প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন’।
অভিযোগ রয়েছে ওই তিনজন ছাত্রলীগ কর্মী মিলে কয়েকদিন আগে ক্যাম্পাসে বহিরাগতকে ছিনতাই ও কর্মরত সাংবাদিক এবং নারী শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করেছে। সেই ঘটনায় এই তিনজনের বিরুদ্ধে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং তাদের ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল সোমবার জরুরী ডিসিপ্লিনারী বৈঠক আহবান করা হয়েছে। বৈঠকে ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথীদের জন্য প্রণীত শৃঙ্খলা বিধিমালা ৪ ও ৫ ধারা মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের কেউ নয়। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি অতিদ্রুত ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে অপরাধীদেরকে যথাযথ শাস্তি প্রদান করা হোক’।