জাবালে নূরের চালকসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ফাইল ছবি

আইন-আদালত

বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু

জাবালে নূরের চালকসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১ ডিসেম্বর, ২০১৯

রাজধানীতে দুই চালকের রেষারেষিতে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী রাজীব ও দিয়া নিহতের ঘটনায় মামলার রায়ে জাবালে নূর পরিবহনের দুই চালকসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করেন।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী আবদুল করিম রাজীব ও দিয়া খাতুন মীম নিহত হয়।

বাসের চালক মাসুম বিল্লাহ, জুবায়ের সুমন ও হেলপার কাজী আসাদকে(পলাতক) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। এছাড়া বাকি দুই আসামি হেলপার এনায়েত হোসেন এবং বাস মালিক জাহাঙ্গীর আলম খালাস পেয়েছেন।

রায় ঘোষণার আগে কারাগার থেকে জাবালে নূর পরিবহনের মালিক জাহাঙ্গীর আলম, দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং তাদের সহকারী এনায়েত হোসেনকে আদালতে হাজির করা হয়।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে প্রাণ হারায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬)। 

আহত হয় আরো ১০-১৫ শিক্ষার্থী। ঘটনার দিনই নিহত মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। 

২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন। ২৫ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশ আসামিদের অব্যাহতির আবেদন না মঞ্জুর করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন। 

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঘটনার দিন দুপুরে চালক ও তাদের সহকারীরা বেশি লোক ওঠানোর লোভে যাত্রীদের কথা না শুনে এবং তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে জিল্লুর রহমান উড়াল সড়কের ঢালের সামনে রাস্তা ব্লক করে দাঁড়ায়। এ সময় আরেকটি বাসের চালক মাসুম বিল্লাহ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪-১৫ শিক্ষার্থীর ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থী নিহত এবং নয়জন আহত হয়। 

জাবালে নূরের যে তিন বাসের রেষারেষিতে ওই দুর্ঘটনা ঘটে, সেগুলোর নিবন্ধন নম্বর হলো ঢাকা-মেট্রো-ব-১১-৯২৯৭, ঢাকা-মেট্রো-ব-১১-৭৬৫৭ এবং ঢাকা-মেট্রো-ব-১১-৭৫৮০। এর মধ্যে ঢাকা-মেট্রো-ব-১১-৯২৯৭ নম্বর বাসের চাপায় নিহত হয় দুই শিক্ষার্থী। 

বাসটি চালাচ্ছিলেন মাসুম বিল্লাহ। ঢাকা-মেট্রো-ব-১১-৭৬৫৭ নম্বর বাসের চালক ছিলেন জুবায়ের এবং ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০ নম্বর বাসের চালক ছিলেন সোহাগ। 

এ মামলার ছয় আসামি। এদের মধ্যে জাবালে নূর পরিবহনের মালিক জাহাঙ্গীর আলম, দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং তাদের সহকারী এনায়েত হোসেন কারাগারে। জাবালে নূর পরিবহনের আরেক মালিক শাহাদাত হোসেন জামিনে রয়েছেন। তার পক্ষে মামলা উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। চালকের সহকারী কাজী আসাদ এখনো পলাতক। 

হত্যার ঘটনায় ড্রাইভারদের দোষী দাবি করে দিয়ার বাবা বলেছেন, ছেলে-মেয়েগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে মেরে ফেলেছে তারা, ওদের সর্বোচ্চ সাজা হওয়া উচিত। 

তিনি বলেন, সেদিন ছেলে-মেয়েরা ক্লাস শেষ করে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিল। ড্রাইভাররা যদি গাড়ি স্লো করত তাহলে রাজীব ও দিয়াকে হারাতে হতো না। অদক্ষ ড্রাইভাররা অসুস্থ প্রতিযোগিতা করে ওদেরকে মেরে ফেলেছে। ড্রাইভারদের উপযুক্ত সাজা হওয়া উচিত। এ সাজা দেখে যেন অন্য ড্রাইভারের মনে ভয় আসে। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads