জাপার প্রত্যাশা ৪৫ আ.লীগ ছেড়েছে ৪২

লোগো আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি

রাজনীতি

জাপার প্রত্যাশা ৪৫ আ.লীগ ছেড়েছে ৪২

চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ আজ

  • কামাল মোশারেফ
  • প্রকাশিত ৮ ডিসেম্বর, ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টিকে (জাপা) ৪২টি আসন দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আসন ছাড় দেওয়া হচ্ছে রংপুর বিভাগে। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে এই তালিকা প্রকাশ করতে পারে দলটি। দলীয় সূত্র জানায়, আজ শনিবার যেকোনো সময় জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল ২৪০টি আসন নিজেদের দখলে রেখে শরিকদের মধ্যে ৬০টি আসন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ৪০ থেকে ৪২টি আসন পাবে জাতীয় পার্টি। এ ছাড়া ১৪ দলের শরিকদের দিয়েছে ১৬টি আসন। এর মধ্যে জোটের শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিকে পাঁচটি, যুক্তফ্রন্টকে তিনটি, জাসদকে তিনটি, তরিকত ফেডারেশনকে দুটি ও জাসদ একাংশকে একটি এবং আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর দল জেপিকে দুটি আসন দেওয়া হয়েছে।

আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে জাপা শুরু থেকেই ১০০ আসন দাবি করে আসছিল। পরে ওই তালিকা ছোট করে ৬০টি আসন চেয়েছিল জাপা। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ৪২টি আসন দিতে রাজি হয়েছে।  

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, মহাজোটের শরিক জাপাকে ৪০ থেকে ৪২টি আসন দেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওযামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

জাপার একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, জাতীয় পার্টিকে সবচেয়ে বেশি আসন ছাড় দেওয়া হচ্ছে রংপুর বিভাগে। এই বিভাগে দলটিকে নয়টি আসন দেওয়া হচ্ছে। আসনগুলো হচ্ছে রংপুর-১ (মশিউর রহমান রাঙ্গা), রংপুর-৩ (হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ), নীলফামারী-৩ (কাজী ফারুক কাদের), নীলফামারী-৪ (শওকত চৌধুরী অথবা আহসান আদেলুর রহমান আদেল), কুড়িগ্রাম-১ (আক্কাস আলী), কুড়িগ্রাম-২ (পনির উদ্দিন আহমেদ), কুড়িগ্রাম-৪ (আসাফউদ্দৌলা তাজ), লালমনিরহাট-৩ (জিএম কাদের) এবং গাইবান্ধা-১ (শামীম হায়দার পাটোয়ারী)।  ঢাকা বিভাগে পাঁচটি আসন নিশ্চিত হয়েছে দলটির। এর মধ্যে রাজধানীর দুটি। আসনগুলো হলো ঢাকা-৪ (সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা) এবং ঢাকা-৬ (কাজী ফিরোজ রশীদ)। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৩ (লিয়াকত হোসেন খোকা), নারায়ণগঞ্জ-৫ (একেএম সেলিম ওসমান) এবং কিশোরগঞ্জ-৩ (মুজিবুল হক চুন্নু)। রাজশাহী বিভাগের মধ্যে কেবল বগুড়াতেই চারটি আসনে দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হলো— বগুড়া-২ (শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ), বগুড়া-৩ (নূরুল ইসলাম তালুকদার), বগুড়া-৬ (নূরুল ইসলাম ওমর) ও বগুড়া-৭ (আলতাফ আলী)। বরিশাল বিভাগে নিশ্চিত হওয়া দুটি আসন হচ্ছে— বরিশাল-৬ (নাসরিন জাহান রত্না) এবং পিরোজপুর-৩ (রুস্তম আলী ফরাজী)। এ ছাড়া আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন বরিশাল-২ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা)। তবে এই আসনে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার ইউনুছকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আজকালের মধ্যে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এ ছাড়া পটুয়াখালী-১ আসন জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের মনোনয়ন আপিলেও বাদ পড়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগে গতবার পাঁচটি আসনে ছাড় দেওয়া হলেও এবার দেওয়া হয়েছে দুটি। আসন দুটি হচ্ছে— ময়মনসিংহ-৪ (বেগম রওশন এরশাদ) ও ময়মনসিংহ-৮ (ফখরুল ইমাম)। সিলেট বিভাগে পাওয়া দুটি আসন হচ্ছে— সিলেট-২ (ইয়াহহিয়া চৌধুরী) এবং সুনামগঞ্জ-৪ (পীর ফজলুর রহমান মেসবাহ)। এ বিভাগে গত নির্বাচনে তিনটি আসন পেয়েছিল জাপা। চট্টগ্রাম বিভাগে বর্তমানে জাতীয় পার্টির সাতজন সংসদ সদস্য থাকলেও চারজনকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। আসনগুলো হচ্ছে চট্টগ্রাম-৫ (আনিসুল ইসলাম মাহমুদ), ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (জিয়াউল হক মৃধা অথবা রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া), লক্ষ্মীপুর-২ (এমএ নোমান), ফেনী-৩ ও (মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী)। সব মিলিয়ে ৪২ থেকে ৪৫টি আসনে মহাজোটের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জাপার।

জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে দলের চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, দুয়েক দিনের মধ্যেই মহাজোটে জাতীয় পার্টির প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।  জাতীয় পার্টি ৪৫ আসন পেতে পারে। মহাজোটের অন্যান্য শরিক দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আছে, তাই একাদশ জাতীয় নির্বাচন খুব শক্ত হবে। এ কারণেই যারা জয়ী হতে পারবেন তাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে। মহাজোটভুক্ত দলগুলোর জনপ্রিয় প্রার্থীরাই অগ্রাধিকার পাবেন। সেক্ষেত্রে কোন দলের প্রার্থী তা বিবেচনা করা হবে না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads