জাপার কৌশল ‘দুই ধরনের প্রার্থী’ প্রত্যাহার পর্যন্ত থাকবেন ২০০ জন

লোগো জাতীয় পার্টি

রাজনীতি

জাপার কৌশল ‘দুই ধরনের প্রার্থী’ প্রত্যাহার পর্যন্ত থাকবেন ২০০ জন

  • কামাল মোশারেফ
  • প্রকাশিত ২৭ নভেম্বর, ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে জাতীয় পার্টির দরকষাকষি শেষ হয়নি। জাপা মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনের পর ৪৫টি আসন পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে দলের আরেকটি সূত্র ৩০টি আসন পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেছে, জাপা মহাজোট থেকে আরো বেশি আসন পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।  জাতীয় পার্টির একটি সূত্র জানিয়েছে, নেতাকর্মীদের খুশি রাখতে দলটি নির্বাচনে দুই ক্যাটাগরিতে (ধরন) মনোনয়নপত্র বিতরণ করেছে। জাতীয় পার্টি দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করতে চেয়েও দলীয় নেতাকর্মীদের তোপের মুখে তা করতে পারেনি। পরে দলটির পক্ষ থেকে ২০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

আওয়ামী লীগের ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে মহাজোটের তালিকা প্রকাশের কথা ছিল। কিন্তু কৌশলগত কারণে তা প্রকাশ করা হয়নি। এদিকে মহাজোটের শরিক হিসেবে ৩০টি আসন পাচ্ছে দলটি- এমন খবরে হতাশ হয়ে পড়েছেন জাপার নেতাকর্মীরা। এজন্য গত দুদিন ধরে জাপার চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে ভিড় জমাচ্ছেন দলটির বর্তমান এমপিসহ মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।

দলটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, মহাজোট থেকে গত রোববার পর্যন্ত ৩০টি আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি। যাদের মনোনীত করা হয়েছে, তাদের রোববার রাতে জাপার মহাসচিব চিঠি দিয়েছেন। আর যারা চিঠি পাননি, তারা যেন বিষয়টি আঁচ করতে না পারেন, সেজন্য ২০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার কৌশল নিয়েছে দলটি। এতে যেসব নেতা পাবেন না, তারা দলে বিদ্রোহ বা বিরোধে জড়াবেন না।

অন্যদিকে জাপার কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, মহাজোট থেকে যারা মনোনীত হয়েছেন সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে জেনে গেছেন। দলটির একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের কাছে সর্বশেষ ৫০টি আসন দাবি করা হয়েছে। কিন্তু তারা ৩০ থেকে ৪০টি আসনের বেশি দিতে চাচ্ছে না। তবে এই নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

এদিকে, দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করতে গতকাল বিকালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। কিন্তু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের স্লোগানের মুখে শেষ পর্যন্ত মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকা ঘোষণা করা হয়নি। পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও তিনি আসেননি।

কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করে জাপা মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, জাতীয় পার্টি প্রায় ২০০ আসনে প্রার্থী দেবে। মনোনয়ন বাছাইয়ের পর আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত করা হবে। তিনি দাবি করেন, দুই-একদিনের মধ্যে মহাজোটের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টি প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে।

সংবাদ সম্মেলন শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি মহাজোটগতভাবে ৪৫টি আসন পেয়েছে। তাদের ইতোমধ্যে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া গতকাল মহাজোটের প্রার্থী তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ না করায় জাপার বর্তমান সংসদ সদস্য ও মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ঢাকা-১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনে জাপার বর্তমান এমপি সালমা ইসলামের আসনে আওয়ামী লীগ শীর্ষ ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানকে, চট্টগ্রাম-৯ আসনে জাপার বর্তমান এমপি জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর জায়গায় মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে, কুমিল্লা-২ আসনে জাপার বর্তমান এমপি আমির হোসেনের স্থানে ব্যবসায়ী আবদুল মাতলুব আহমেদের স্ত্রী সেলিমা আহমেদকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে। তা ছাড়া ঢাকা-১৭ আসনে এইচএম এরশাদ মহাজোটের মনোনয়ন দাবিদার হলেও এখানে আওয়ামী লীগ চলচ্চিত্র অভিনেতা ফারুককে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads