জঙ্গিবাদের উত্থান মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিমাদের টানাপড়েনে

ছবি : সংগৃহীত

অপরাধ

জঙ্গিবাদের উত্থান মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিমাদের টানাপড়েনে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৭ মে, ২০১৯

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে পশ্চিমাদের রাজনৈতিক টানাপড়েনের কারণে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে। গতকাল সোমবার সকালে ‘রিপোর্টিং অন টেরোরিজম’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) ও ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের যৌথ উদ্যোগে সাংবাদিকদের নিয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

দেশের স্বার্থে জঙ্গিবাদ ইস্যুতে টেলিভিশনগুলোর লাইভ টেলিকাস্টের ক্ষেত্রে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কায় জঙ্গি হামলা দেখল বিশ্ব। শ্রীলঙ্কায় একাধিক হামলা হয়েছে। তারা কয়টা বীভৎস লাশের ছবি দেখিয়েছে? শ্রীলঙ্কান সাংবাদিকরা জাতীয় স্বার্থ বড় করে দেখেছে। তাদের স্যালুট জানাই। আমাদেরও সময় হয়েছে এসব ইস্যুতে চিন্তাভাবনা করার, বিশেষ করে গণমাধ্যমের লাইভ টেলিকাস্টের ক্ষেত্রে আমাদের আরো বেশি যত্নবান হতে হবে।

যদিও আমাদের দেশের অবস্থা ও শ্রীলঙ্কার অবস্থা এক রকম নয়, তা সত্ত্বেও জাতীয় স্বার্থে জঙ্গিবাদসহ সব ইস্যুতে গণমাধ্যমের সেলফ সেন্সরশিপ প্রয়োজন। উন্নত বিশ্ব উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করেও সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করতে পারেনি। কিন্তু আমরা পেরেছি। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা জনসচেতনতা তৈরি করতে পেরেছি। আপামর জনসাধারণ এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই সচেতনতা তৈরির পেছনে গণমাধ্যম অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।

তিনি আরো বলেন, জঙ্গিদের লক্ষ্যই হচ্ছে ভীতির পরিবেশ তৈরি করা। জনমনে নিজস্ব মতামত চাপিয়ে দেওয়া। নিজেদের হিরো হিসেবে উপস্থাপন করা। হিরোইজমের মাধ্যমে জঙ্গিবাদের প্রচার ও মোটিভেশন করা, বিশেষ করে যুবসমাজকে তারা আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। এর মাধ্যমে তারা নতুন জঙ্গি তৈরি করে। তাই জঙ্গিরা চায় প্রচারণা। কারণ তারা মনে করে, তাদের কর্মকাণ্ড যত বেশি প্রচার হবে ততই তাদের প্রসার হবে।  সুতরাং এমন কোনো রিপোর্ট করা উচিত হবে না, যা জঙ্গিবাদের পক্ষে যায় বা তাদের প্রচার পায়। সন্ত্রাস কিংবা জঙ্গিবাদ সমসময় বর্জনীয়। তারা যেন কখনোই হিরো হিসেবে উপস্থাপিত না হয়। তাদের দেশের ও মানবতার শত্রু হিসেবে তুলে ধরতে হবে। গণমাধ্যমের বিশেষ করে ক্রাইম রিপোর্টার আর পুলিশ একে অপরের পরিপূরক। জাতির গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গণমাধ্যম বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এক্ষেত্রে ক্রাইম রিপোর্টাররা অগ্রবর্তী।

আমাদের দেশে স্বাধীনতাবিরোধী ও দেশবিরোধীরা আছে। তারা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির জন্য সবসময় সক্রিয়। সেটা আমরা সব সময় মোকাবেলা করে আসছি। এর পাশাপাশি জঙ্গিবাদও মোকাবেলা করেছি। গণমাধ্যমের কারণেই এসব সম্ভব হয়েছে। সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষা ও উল্টোপথে গাড়ি চলা বন্ধে প্রথমেই আমরা সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়েছি এবং তা পেয়েছিও। উল্টোপথে চলতে গিয়ে পুলিশ, সাংবাদিক, মন্ত্রী, সচিব, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আমলারাও মামলা খেয়েছেন। তবুও আমরা থামিনি। ট্রাফিক আইন অমান্যকারী ও উল্টোপথে চলাচলকারী সবার বিরুদ্ধে ট্রাফিক প্রসিকিউশন দিয়েছি। যে কারণে উল্টোপথে যান চলাচল ৮০ শতাংশ কমে এসেছে। ৯৫ শতাংশ মানুষ এখন হেলমেট ব্যবহার করছে।

কর্মশালায় আরো উপস্থিত ছিলেন সিটি প্রধান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম, উপকমিশনার মহিবুল ইসলাম, প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, ডিবিসি চ্যানেলের সম্পাদক জাহেদুল আহসান পিন্টু, ক্র্যাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ, ক্র্যাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক দীপু সারোয়ার, সহ-সভাপতি মিজান মালিক প্রমুখ। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads