চুরি হওয়া শিশুকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল পুলিশ 

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

চুরি হওয়া শিশুকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল পুলিশ 

  • সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ৭ মার্চ, ২০২১

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাকান্দির একটি বাড়ী থেকে কাওসার নামের ২৩ দিন বয়সী শিশু চুরির চার ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশ জেলা শহরের আভিসিনা হসপিটালের সামনে থেকে শিশুটিকে উদ্ধারের পর মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে।

শিশু চুরির মূলহোতা রানীকে আটক করেছে। সে রায়দৌলতপুর ইউপির মধ্যপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী। শিশুটির নাম আলিফ। তার বাবার নাম শহিদুল ইসলাম ও মায়ের নাম ফরিদা খাতুন। ১৪ বছর যাবত রানীর বাচ্চা না হওয়ায় সে শিশুটিকে চুরি করেছে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। 

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম সন্ধ্যা সাতটায় সদর থানা ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানান, শনিবার দুপরের দিকে শিশু আলিফের মা ফরিদা খাতুন শিশু সন্তানকে নিজ ঘরে রেখে বাড়ির পেছনে গাছের পাতা কুড়ানোর জন্য যান। বেশ কিছুক্ষণ পর ঘরে ঢুকে তিনি শিশু সন্তানকে দেখতে না পেয়ে আশপাশে খোঁজ নিতে থাকেন। সন্তানকে কোথাও না পেয়ে মা ফরিদা কান্নাকাটি শুরু করেন। কয়েকজন প্রতিবেশী বলেছে, বোরকা পড়া একটি নারীকে শিশু কোলে নিয়ে যেতে দেখেছে। আরেক নারীকে বাড়ীর পাশে ঘুরঘুর করতে দেখেছে। পরে তিনি কামারখন্দ থানা পুলিশকে অবহিত করেন। তাৎক্ষণিক পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং জেলার সকল থানায় ম্যাসেজ দিয়ে তল্লাশি চৌকি স্থাপন করেন। প্রাথমিকভাবে শিশু চুরির মূল হোতা রানীকে বোরকা সরবরাহকারী আলেয়া নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্য মতে পুলিশ রানীর বাড়ীতে যায়। অন্যদিকে, রানী শিশু বাচ্চাকে নিয়ে শহরের আভিসিনা হাসপাতালের সামনে এসে এক দোকানীর কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে তার বাবাকে ফোন দেন এবং হাসপাতালে আসতে বলেন। পুলিশ রানীর বাবাকে আটক করে দোকানীর নম্বরের ফোন দিয়ে লোকেশন জানে। তাৎক্ষনিক কামারখন্দ থানার ওসি রাকিবুল হুদা সদর থানার পুলিশকে অবহিত করে। সদর থানা পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে আভিসিনা হাসপাতাল ঘেরাও করে। কিছু সময় পর কামারখন্দ থানা পুলিশ রানীর বাবাকে হাসপাতালে এলাকায় আসেন। এ সময় দেখা যায় রানী বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে হাসপাতালের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। রানীর বাবা  মেয়েকে শনাক্ত করলে পুলিশ তাকে আটক করে এবং বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেন। সন্ধ্যার দিকে পুলিশ শিশু বাচ্চাকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেন।

পুলিশ সুপার জানান, চুরির মূল হোতা রানী কামারখন্দ চৌবাড়ী ডিগ্রী কলেজ থেকে বিএ পাশ করেছে। তার স্বামী শহিদুল ইসলাম কামারখন্দ কৃষি কারিগরি কলেজের একজন কর্মচারী। ১৪ বছরের দাম্পত্য জীবনে কোন সন্তান না হওয়ায়  সে বাচ্চাটি চুরি করেছিল। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী  সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতাল থেকে ২৩ দিনের শিশু মাহিম ও ২৭ ফেব্রুয়ারী সলঙ্গা থানার সাকাওয়াত এইচ মেমোরিয়ার হাসপাতাল থেকে জন্মেও ৬ঘন্টা পর  শিশু সামিউল চুরি হয়। পরে পুলিশ সলঙ্গা থানার আলোকদিয়া গ্রাম থেকে শিশু ফাহিমকে মৃত ও শিশু সামিউলকে জীবিত উদ্ধার করে এবং ৭ জনকে আটক করেছিল। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads