হাসপাতালে রোগীদের সেবার ক্ষেত্রে রোবট কাজে লাগালে কেমন হয়? গবেষকরা নার্সদের কাজের চাপ কমাতে এমন সব রোবট পরীক্ষা করছেন। তাদের দাবি, এর ফলে রোগী ও নার্স দু’পক্ষেরই সুবিধা হবে। সম্প্রতি ‘পেপার’ নামের একটি জাপানি রোবট সরাসরি রোগীর কাছে জানতে চাচ্ছে, আপনার এমআরটি পরীক্ষা হয়েছে কি? ব্যাস এটুকুই। কোনো প্রশ্নপত্র পূরণ ছাড়া রোগীর অনেক তথ্যই সে জেনে নেয়। আসলে হালে বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের রোগীরা কতটা খোলা মনে আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করতে পারেন, এমআরটি পরীক্ষার আগে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বার্ধক্যবিদ্যা বিভাগে পারো নামের সিল মাছের মতো দেখতে রোবট কাজ করছে। ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশের রোগীরা তার গায়ে হাত বুলিয়ে শান্ত হতে পারেন। ফলে নার্সদের কাজ কিছুটা কমে।
এ বিষয়ে ডিমেনশিয়া চিকিৎসক বেনইয়ামিন ফ্রিডেল বলেন, মানুষের সঙ্গে অথবা সামাজিক স্তরে যোগাযোগ আমাদের পেশায় অত্যন্ত জরুরি। তা কিন্তু আগের মতোই থাকছে। পারো-র কাজ হচ্ছে রোগীদের শান্ত করে আমাদের সেই কাজে সাহায্য করা।
রোগীদের দেখাশোনা সংক্রান্ত গবেষণা দলের প্রধান প্যাট্রিক ইয়ান হাসপাতালে আরো রোবট কাজে লাগাতে চান। তার মতে, এর ফলে নার্সদের প্রয়োজন মোটেই ফুরিয়ে যাবে না, বরং তাদের সুবিধা হবে। হালে বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্যাট্রিক ইয়ান বলেন, কাজের চাপ কমার ফলে মানুষ আরো বেশি সময় ধরে পেশায় থাকতে পারে। রোবট সেই সম্ভাবনা উজ্জ্বল করে তুলছে। তাছাড়া তরুণ প্রজন্মও এই পেশার প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে।
জার্মান এয়ারোস্পেস সেন্টার ডিএলআর-ও ভবিষ্যতে রোগীদের দেখাশোনার বিষয়ে গবেষণা করছে। যেমন ‘এডান’ নামের রোবটিক হাতসহ এক হুইলচেয়ার, যা দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেটি হাঁটা-চলা করতে পারেন না, এমন মানুষকে কার্যত স্বাধীন করে তুলবে।
ইলেকট্রোডের কল্যাণে সামান্য পেশি সঞ্চালনের মাধ্যমেও সেটি চালানো যাবে। এখনো গবেষণার পর্যায়ে থাকলেও জার্মানির প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ রোবটের সাহায্য নিতে প্রস্তুত। ডিএলআর-এর বিজ্ঞানী আনেটে হাগেনগ্রুবার বলেন, আমরা নার্সকে সরিয়ে তার জায়গায় রোবট আনতে চাই না, বরং নার্সকে তার নিয়মিত কাজে সাহায্য করতে চাই। যেমন রোবট রোগীদের নিয়ে আসা বা ফিরিয়ে আনার কাজ করলে নার্স সেবার কাজে বেশি সময় দিতে পারবেন।
জার্মানির হালে শহরে ভবিষ্যতের এই স্বপ্ন এখনই হাতেনাতে পরীক্ষা করা হচ্ছে। অপেক্ষাকৃত সহজ রোবট কাজে লাগিয়েও নার্সদের অতিরিক্ত কাজের চাপ কিছুটা কমানো সম্ভব হচ্ছে। ডয়েচে ভেলে অবলম্বনে আসিফ খান।
