পণ্যবাজার

চিকন চালের দাম বেড়েই চলেছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

চালের দাম বেড়েই চলেছে। গত সপ্তাহে নাজিরশাইল ও মিনিকেট দুই ধরনের চিকন চালের দাম বেড়েছে। যে চালের দাম ছিল ৬৪ টাকা কেজি, গতকাল শুক্রবার সেই চাল ৬৬ টাকায় বিক্রি হয়। ফলে আগের সপ্তাহের তুলনায় চিকন চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ২ টাকা। রাজধানীর বাজারে গত সপ্তাহে যে চালের দাম ছিল ৫৮ টাকা কেজি, গতকাল সেই চাল বিক্রি হয় ৬০ টাকা কেজিতে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক হলেই দাম কমবে। এদিকে ক্রেতারা বলছেন সেই স্বাভাবিক পরিস্থিতি কবে আসবে? 

কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম বলেন, মোকাম থেকেই চালের দাম বাড়তি। সে কারণে খুচরা বাজারে চালের দাম কমছে না। প্রতি কেজিতে ২০-৩০ পয়সা লাভে চাল বিক্রি করছি আমরা। বেশ কিছু দিন ধরে চালের দাম বাড়ছে বলে জানান তিনি। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি-র হিসাবে গত বছরের এই সময়ে যে চাল ৫০ টাকা কেজিতে পাওয়া যেত এখন সেই চালের কেজি ৬০ টাকা। টিসিবি-র তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে চিকন চালের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে মাঝারি চালের দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ এবং মোটা চালের দাম বেড়েছে ৩৭ শতাংশ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মোটা চালের দাম এখন ৪৮-৫০ টাকা কেজি। মাঝারি ধরনের চালের দাম ৫৮-৬০ টাকা কেজি এবং চিকন চালের দাম প্রতিকেজি ৬৫-৬৬ টাকা।

বাজার করতে আসা অনেকে বলছেন, দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে লাগামহীনভাবে বাড়ছে চালের দাম। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী খালপাড় এলাকার বাসিন্দা আবদুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এভাবে চালের দাম বাড়তে থাকলে মানুষ ভাত খাওয়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে। চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের মানুষদের চরম কষ্ট হচ্ছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জলপথে জাহাজ সংকট এবং স্থলপথে তীব্র যানজট থাকায় ভারত থেকে চাল আমদানিতে ধীরগতি রয়েছে। এ ছাড়া ভারতের বাজারে চালের দাম বেশি থাকায় আমদানিকারকরাও সময়ক্ষেপণ করছেন। তারা হয়তো চাইছেন আরেকটু শুল্ক কমিয়ে নিতে। কিন্তু শুল্ক কমিয়ে দিলে ভারতের রপ্তানিকারকরা চালের দাম আরো বাড়িয়ে দিতে পারে এমন আশঙ্কাও রয়েছে। বিষয়টি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। তাছাড়া আগেই তো সাড়ে ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক করা হয়েছে।’

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গত ২২ ফেব্রুয়ারির তথ্য অনুযায়ী ২ লাখ ৪৮ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে। এরমধ্যে সরকারি পর্যায়ে আমদানি হয়েছে ৮৩ হাজার টন এবং বেসরকরি পর্যায়ে আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার টন। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ টন চাল আমদানি হতে পারে। পুরো তথ্য পেলে সঠিক হিসাব জানা যাবে। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের একই দিনের তথ্য অনুযায়ী সরকারি গুদামে ৬ লাখ ৫৬ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এরমধ্যে ৫ লাখ ৪৩ হাজার টন চাল এবং ১ লাখ ১৩ হাজার টন গম রয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সংগ্রহ ও সরবরাহ) তাহমিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভোক্তাকে কাঙ্ক্ষিত চাল কিনতে সহায়তা করা ও প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করতে বাজারে পাওয়া বিভিন্ন নাম ব্র্যান্ডের চাল কোন কোন জাতের ধান থেকে তৈরি করা হচ্ছে তা নির্ণয় বা অনুসন্ধানে একটি সমীক্ষা হয়েছে। এ জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ১৩ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারা একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন দিয়েছে। শিগগির সুপারিশসংবলিত চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। ওই সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads