কৃষি অর্থনীতি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরকারি সংরক্ষণাগারে রাখা আমে পচন, বিপাকে চাষি

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ৮ জুলাই, ২০২৩

বদিউজ্জামান রাজাবাবু. চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: 
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরকারি সংরক্ষণাগারে আম রেখে বিপাকে পড়েছেন আমচাষি আহসান হাবিব। সংরক্ষণাগারে রাখা আমে পচন ধরায় নায্যমূল্য না পেয়ে দিশেহারা এই আমচাষি।
জানা গেছে, গত ১৪ জুন শিবগঞ্জ পৌর এলাকার একাডেমি মোড়ে অবস্থিত আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের সংরক্ষণাগারে সংরক্ষণের জন্য প্রায় ৩ টন আম রেখেছিলেন আমচাষি আহসান হাবিব। কিন্তু সংরক্ষণ তো দূরের কথা, কয়েকদিন পরেই পচতে থাকে সেই আম। এতে ক্রেতা না পেয়ে তাকে অল্প দামে বিক্রি করতে হয় আমগুলো। তার প্রায় ৩০ শতাংশর বেশি আম পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
আমচাষি আহসান হাবিব বলেন, আমার বাগানের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদপ্রাপ্ত ক্ষিরসাপাত ও ল্যাংড়া প্রায় ৩ টন আম ছিল। একদিন একাডেমি মোড়ের সরকারি সংরক্ষণাগারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি আমাকে জানান, তাদের ওখানে কাঁচা আম ৯০ দিন পর্যন্ত রাখা যায়। আমি চিন্তা করলাম, এখন তো সবার গাছেই আম রয়েছে। তাই আমগুলো যদি ঈদের পরে বিক্রি করি তাহলে ভালো দাম পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে আমি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করি। তাদের পরামর্শে প্রায় ৩ টন ল্যাংড়া ও ক্ষিরসাপাত আম সেই সংরক্ষণাগারে সংরক্ষণের জন্য রাখি। পরে ২৫ জুন গিয়েই দেখি আমার আমগুলোতে পচন ধরেছে। এ চিত্র দেখে আমি দিশেহারা হয়ে ক্রেতা খুঁজতে লাগলাম। কিন্তু এই আম কেউ কিনতে চায় না। পরে আমার পরিচিত এক আড়ৎদারের হাতে পায়ে ধরে আমগুলো দিয়েছি। তবে কত করে দাম দেবে তা এখনো জানায়নি। এমনকি টাকাও দেয়নি। আমার প্রায় আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এই আম চাষি আরও বলেন, আমগুলো যখন গাছ থেকে পাড়ি তখনই ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করা যেত। কিন্তু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে সরকারি সংরক্ষণাগারে রেখে আমি লোকসানে পড়লাম। আমার প্রায় আড়াই লাখ টাকা মূল্যের আমে এখন ৫০ হাজার টাকাও পাব কিনা সন্দেহ আছে। আমি এর ক্ষতিপূরণ চাই।
সদর উপজেলার আমচাষি তরিকুল ইসলাম জানান, আহসান হাবিব ভাই একজন দক্ষ আমচাষি। কিন্তু তার এমন অবস্থার খবর পেয়ে আমরা শঙ্কিত। সরকারি সংরক্ষণাগারে আম রেখে যদি এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা কোথায় যাব। এর সুষ্ঠ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং প্রান্তিক আমচাষিদেরকে রক্ষা করতে হবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, আহসান হাবিবের আমগুলো বেশি পরিপক্ক ছিল, তা আমরা বুঝতে পারিনি। এজন্যই আমগুলো ফেটে গেছে। তবে পচে যাওয়ার ঘটনা আমি জানি না। আমাদের এখানে ফজলি জাতের আম রাখা আছে, সেগুলো তো পাকেনি।
এ বিষয়ে আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক এস এম হাসানুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত না। আর শিবগঞ্জের সংরক্ষণাগারটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। সেখানে আম রাখার আগে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম আমাকে জানাতে পারত। আমরা সেই ক্ষতিগ্রস্ত আমচাষিকে অন্য প্রকল্পের মাধ্যমে সহযোগিতা করব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads