• বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫ | ২৬ চৈত্র ১৪৩১ | ২৬ শাওয়াল ১৪৪৬
গোয়ালন্দে স্বামী ও সতীনের অত্যাচারে কলেজ ছাত্রীর আত্মহত্যা

প্রতীকী ছবি

সারা দেশ

গোয়ালন্দে স্বামী ও সতীনের অত্যাচারে কলেজ ছাত্রীর আত্মহত্যা

  • গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১ মার্চ, ২০১৯

স্বামী ও সতীনের অত্যাচার, উপেক্ষা ও অপমান সইতে না পেরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে গোয়ালন্দে সাথী আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধু গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সে গোয়ালন্দ পৌরসভা ৯নং ওয়ার্ডের আলম চৌধুরী পাড়ার দরিদ্র পান বিক্রেতা আঃ সালাম প্রামানিকের মেয়ে। সাথী গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম সরকারী কলেজের  স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিল।

এ ঘটনায় সাথীর বাবা বাদী হয়ে শুক্রবার গোয়ালন্দঘাট থানায় সাথীর স্বামী রাসেল চৌধুরী (৩০) ও দ্বিতীয় স্ত্রী সেতু আক্তার (৩৫) এর বিরুদ্ধে সাথীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে এজাহার দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে রাসেল ও সেতু পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় সাথীর পরিবারসহ গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসী রাসেল ও সেতুকে গ্রেফতার পূর্বক কঠোর শাস্তি দাবী করেছেন।

সাথীর পরিবার ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের দিকে গোয়ালন্দ পৌরসভার জুড়ান মোল্লা পাড়ার মঞ্জু চৌধুরীর ছেলে রাসেলের সাথে সাথীর বিয়ে হয়। একটি বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর সুবাদে রাসেল সাথীকে নিয়ে ঢাকায় থাকত। কিন্তু গোয়ালন্দে এক কলেজ শিক্ষকের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী সেতুর সাথে দীর্ঘদিনের পরকিয়ার সম্পর্ক ছাড়তে পারেনি রাসেল। মাস ছয়েক আগে সেতু ও রাসেলকে ওই কলেজ শিক্ষক তার ঘরে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেললে সেতুকে তার স্বামী তৎক্ষনাত তালাক দেন। পরে রাসেল সেতুকে বিয়ে করে ঢাকার বাসায় নিয়ে উঠায়। সেখানে রাসেল ও সেতু মিলে সাথীকে শারিরীক ও মানষিক নির্যাতন চালিয়ে বাবার বাড়ীতে চলে আসতে বাধ্য করে। তারপরও সাথী সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে।

গত বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী সদর থানার খানখানাপুর ইউনিয়নের চানপুর এলাকায় রাসেলের বোনের বাড়ীতে একটি অনুষ্ঠান ছিল। রাসেলের কথামতো সাথী সেখানে একাই রিক্সাযোগে যায়। কিন্তু আগে থেকেই রাসেল সেখানে সেতুকে নিয়ে উপস্থিত হয়। অনুষ্ঠানে রাসেল সেতুকে স্ত্রী হিসেবে সকলের সাথে পরিচিত করার পাশাপাশী এক সাথে খানাপিনা ও অনুষ্ঠান উপভোগ করে। সাথী ছিল একেবারেই একাকী, উপেক্ষিত ও অপমানীত। এ নিয়ে সে অনুষ্ঠানের ফাঁকে রাসেল ও সেতুর সাথে কথা কাটাকাটি করে। তারা দু’জনই সাথীকে চরম অপমান করে তাকে জানিয়ে দেয় তাদের মাঝে সাথীর আর কোন জায়গা নেই। এরপর অপমানীত সাথী কিছু না খেয়েই পুনরায় বাবার বাড়ীতে এসে বসত ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস নেয়। সাথীর মা অসুস্থতার কারনে সে সময় রাজবাড়ীতে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ায় সে সময় বাড়ী খালি ছিল। তবে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হওয়ায় বেশ কিছুক্ষন পর সন্ধ্য সাতটার দিকে দরজা ভেঙ্গে সাথীকে ঝুলন্ত অবস্তা থেকে নামায়।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি এজাজ শফী জানান, খবর পেয়ে রাতেই সাথীর লাশ উদ্ধার করে শুক্রবার ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ীর মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় সাথীর বাবা বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে রাসেল ও সেতুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে তারা পালিয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads