গাজীপুরে শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আবারো একটি বাঘিনীর মৃত্যু হয়েছে। এর আগেও আরো দুটি বাঘের মৃত্যু হয় এ পার্কে। আরো বেশ কিছু দুর্লভ প্রাণির মৃত্যুও ঘটেছে এ সাফারি পার্কের বিভিন্ন বেষ্টনীতে। ঈদের দিন (ঈদুল আজহা) সকালে পার্কের বাঘ বেষ্টনীতে বাঘিনীটির মৃত্যু হয়েছে। এ বাঘিনীর জন্ম এ পার্কেই। গত তিন বছর আগে পার্কেই জন্ম হয়েছিল এ বাঘ শাবকের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ঈদের দিন মারা গেলেও এ খবর গোপন রাখে পার্ক কর্তৃপক্ষ। কৌশলগত কারনেই এ খবরটি তারা চেপে রেখেছিলেন। এ বাঘিনীর মৃত্যুর পরে পার্কে বাঘ কমে রইল ১২ টি। তিনি অভিযোগ করেন বাঘ সাধারণত সুলিড মাংসই খেতে পছন্দ করে। গুঁইসাপ খাওয়ার কথা নয়, তবুও তদন্ত করে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। বিভিন্ন অবহেলার কথাও তিনি স্বীকার করে এ পার্কের নানা বিষয়ে।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসিএফ) মো. তবিবুর রহমান জানান, গত ৫ আগস্ট বাঘিনীটি একটি গুঁইসাপ খেয়েছিল। এর দুই-এক দিন পর থেকে বাঘিনী খাবারে অমনোযোগি হয়ে পড়ে। দিন দিনই সে দুর্বল হয়ে পড়তে থাকে। ওদের জন্য রাখা খাবারের ধারে-কাছেও আসছিল না বাঘিনীটি। পরে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে পার্কের বন্য প্রাণি চিকিৎসালয়ে বাঘিনীকে এর চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু গত ৯ আগস্ট থেকেই বাঘটির শারীরিক অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে। বিষয়টি নজরে এলে প্রতিনিয়ত বাঘিনীকে নিবির পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। এরই মধ্যে ঈদের দিন (গত ১২ আগস্ট) সকালে বাঘিনীকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকে বাঘ বেষ্টনীতে।
পার্কের চিকিৎসা বোর্ডের সদস্য শ্রীপুর উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এসএম উকিল উদ্দীন জানান, মঙ্গলবার পার্কের কর্মকর্তাসহ চিকিৎসকদের উপস্থিতে মৃত বাঘিনীর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে চামড়া সংরক্ষণ করা হয়। পার্কের ভেতর বাঘিনীর মৃতদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত করে সংগ্রহ করা সেম্পল ঢাকা রোগ গবেষনা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. হাতেম মোহাম্মদ জুলকার নাইন মানিক জানান, পার্কের বাঘ সিংহসহ অন্য সব প্রাণি স্বাভাবিক সুস্থ্য রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক মিহির কুমার দো বলেন, মৃত বাঘিনীর পাঁচটি নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। নমুনাগুলো কেন্দ্রীয় রোগ গবেষনা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। গুঁইসাপ খাওয়ার পর থেকে দূর্বল হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। পরীক্ষার পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।