আশিকুর রহমান মিঠু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রভাব পড়েছে ধান সংগ্রহে। খোলাবাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা সরকারের কাছে বিক্রি করতে চাইছেন না। লটারির বদলে উন্মুক্তভাবে ধান সংগ্রহের ঘোষণা দিয়েও কৃষকদের কাছ থেকে একেবারে সাড়া নেই বললেই চলে। বিক্রির জন্য অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধন করেও ধান দিতে আসছেন না কৃষকরা।
সূত্র জানায়, এবার জেলা থেকে মোট ২৯৩৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলা থেকে ৫২৭ মেট্রিক টন, বিজয়নগর থেকে ২৬৮ মেট্রিক টন, আশুগঞ্জ থেকে ১৮৩ মেট্রিক টন, কসবা থেকে ৬৩৯ মেট্রিক টন, সরাইল থেকে ৩৮২ মেট্রিক টন, নাসিরনগর থেকে ৩৫২ মেট্রিক টন, আখাউড়া থেকে ২২১ মেট্রিক টন, নবীনগর থেকে ৩৩৫ মেট্রিক টন ও বাঞ্ছারামপুর থেকে ২৭ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ হয়। কিন্তু ধান সংগ্রহ শুরুর তারিখ থেকে এক মাসের বেশি সময় পার হলেও কৃষকরা ধান নিয়ে আসছেন না। অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধন করে ধান দেওয়ার কথা বলা কসবা উপজেলার কৃষকরাও এখন পর্যন্ত সাড়া দেননি। খোলাবাজারে দাম বেশি পাওয়া, সরকারিভাবে ধান দিতে শুকিয়ে আনাসহ আরো কিছু প্রক্রিয়ার কারণে কৃষকদের অনাগ্রহ। বৃহস্পতিবার জেলায় সর্বপ্রথম ধান সংগ্রহ শুরু হয় আখাউড়া উপজেলায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা এ সময় শরীফ মিয়া নামে এক কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সজীব কাউছার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ উপজেলায় মোট ২২১ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা আছে।
ধান দিতে আসা নুরপুর গ্রামের কৃষক শরীফ মিয়া বলেন, ‘সরকারের বেধে দেওয়া দরে ধান দিয়ে লোকসান গুণতে হবে। তবে একসঙ্গে সব ধান দিতে পারবো বলে এখানে নিয়ে এসেছি। এছাড়া সরকার তো বিভিন্ন সময়ে সার, বীজ দিয়ে সহযোগিতা করে। এ জন্যও কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে নিয়ে আসা।’
কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম ও খাদ্য নিয়ন্ত্রক সজীব কাউছার জানান, এবার লটারির বদলে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। যে কৃষকই আসবেন তার কাছ থেকে ধান নেওয়া হবে। সামনের দিনগুলোতে দাম কমলে কৃষকরা সরকারকে ধান দিবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধান সংগ্রহ করা হবে। প্রতি কেজি ধানের দাম ধরা হয়েছে ২৮ টাকা।
কসবা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আবু কাউছার বলেন, ‘কৃষকরা ধান দিবে বলেছেন। কিন্তু তারা আসছেন না। আমরা চেষ্টা করছি অন্তত যেন সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। মূলত খোলাবাজারে দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা সরকারের কাছে ধান দিতে চাইছেন না।’