খালেদার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের শপথ-অঙ্গীকার

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে র্যালি বের করে বিএনপি। কেন্দ্রীয় নেতারা র্যালিতে অংশ নেন  

ছবি : বাংলাদেশের খবর

মহানগর

বিএনপির স্বাধীনতা র্যালি

খালেদার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের শপথ-অঙ্গীকার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ মার্চ, ২০১৯

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে র্যালি করেছে বিএনপি। গতকাল বুধবার বিকালে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয় থেকে র্যালি বের করে বিএনপি। এদিকে গত মঙ্গলবার সাভারের স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। উভয় অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া হাজার হাজার নেতাকর্মী তাদের দলীয় প্রধান কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের শপথ নিয়েছেন। এ সময় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বাধীনতা দিবসে শপথ নিতে হবে- আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে।

দুই দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন। বিএনপির অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাকে কারবন্দি করে রেখেছে।

বেলা সোয়া ৩টায় স্বাধীনতা দিবসের র্যালিটি রাজধানীর নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মালিবাগ মোড় ঘুরে বিকাল ৪টায় পল্টনে এসে শেষ হয়। র্যালিতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী, সমর্থক অংশ নেওয়ায় সড়কের একপাশে যানবাহন চলাচল কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যালির সামনে ও পেছনে তৎপর ছিল পুলিশ। র্যালিতে অংশ নেওয়া বিএনপির নেতাকর্মী-সমর্থকরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে স্লোগান দেন। র্যালিতে বেশ কয়েকটি পিকআপ ভ্যানে বাজানো হয় দেশাত্মবোধক গান। পাশাপাশি কারাবন্দি খালেদা জিয়া ও লন্ডনে থাকা তারেক রহমানকে নিয়ে রচিত গানও বাজানো হয় ওইসব পিকআপ ভ্যান থেকে। নেতাকর্মীদের হাতে ছিল ব্যানার, ফেস্টুন, দলীয় ও জাতীয় পতাকা, বাদ্যযন্ত্র, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সংবলিত পোস্টার ইত্যাদি। 

র্যালি উদ্বোধনের সময় বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রায় ৪৮ বছর আগে আমরা স্বাধীন হয়েছি। কিন্তু আসলেও কি আমরা স্বাধীন হয়েছি? আমরা স্বাধীন নই, আমরা মুক্ত নই। একটা পাথর আমাদের বুকের ওপর চেপে বসেছে। আমাদের স্বাধীনতাকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। মুক্তচিন্তা করার যে স্বাধীনতা, কথা বলার যে স্বাধীনতা, লেখার যে স্বাধীনতা, এই আওয়ামী লীগ আজ একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করে সেই স্বাধীনতা হরণ করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী- যিনি সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, যিনি স্বাধীনতাকে সংহত করার জন্য কাজ করেছেন, সেই মহান নেত্রীকে আজ সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে, তার যে ন্যায্য অধিকার, সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তাকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। কিন্তু তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না।

খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য জনগণের ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন- আসুন, অত্যাচা- নির্যাতন-নিপীড়নের মধ্য দিয়ে দেশে যারা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চায়, তাদের অপসারিত করি এবং দলমত নির্বিশেষে জনগণের ঐক্য করে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করি, গণতন্ত্রকে মুক্ত করি। আজকের এই দিনে এই হোক আমাদের শপথ, এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

খোলা ট্রাকের ওপর নির্মিত মঞ্চে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পাশে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা কাজী আবুল বাশার, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান প্রমুখ।

র্যালি শুরু হলে তাতে যোগ দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব প্রমুখ। এছাড়া যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃৃতিক সংস্থার (জাসাস) সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান র্যালিতে নিজ নিজ সংগঠনের নেতৃত্ব দেন। বিএনপি আয়োজিত এই স্বাধীনতা র্যালিতে মহিলা দল, ছাত্রদল, যুবদল, মৎস্যজীবী দল, শ্রমিক দল, তাঁতি দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, জাসাসসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।

স্মৃতিসৌধ ও জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা

সাভার থেকে ফিরে সকাল ১০টায় দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। সেখানে জিয়ার রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন তারা।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এবং গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads