একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র ৪ দিন বাকি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। মাঠে নেমেছে বিজিবি, কোস্টগার্ড এবং সেনাবাহিনী। এরপরও থেমে নেই নির্বাচনী সহিংসতা। গতকাল সোমবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা ধরনের ঘটনা ঘটেছে। খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার পুজগাং বাজারে সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে দুজন নিহত হয়েছেন। শরীয়তপুর-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী মিয়া নূরুদ্দিন আহমেদসহ তার সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের শান্তিরহাট বাজারে নির্বাচনী প্রচারকালে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় দলের ৫০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বাহেরপাড়া এলাকায় বিএনপি প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পাবনা-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী একেএম সেলিম রেজা হাবিবের গণসংযোগে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে পীরগঞ্জ উপজেলার লোহাগাড়া বাজারে নৌকা মার্কার প্রার্থী ইয়াসিন আলীর একটি নির্বাচনী অফিসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফেনীর সোনাগাজীতে দলীয় কোন্দলে সরকার সমর্থক দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি হামলায় তিনজন গুরুতর জখম ও কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। জামালপুরের ইসলামপুরে পৌর শহরের বেপারিপাড়া মোড়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা কার্যালয়ে রাতে বিএনপির সমর্থকরা অগ্নিসংযোগ করে। অন্যদিকে সরিষাবাড়ীতে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী পথসভাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ঝালকাঠির  রাজাপুরে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পথসভায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কলেজছাত্রসহ চারজন আহত হয়েছে। নোয়াখালী-২ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর তিনটি নির্বাচনী অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় শিল্পনগরী দর্শনা তেল পাম্পের সন্নিকটে পুলিশের এ এসপি সার্কেল আবু রাসেলের গাড়িতে বোমা হামলা হয়েছে। পাবনার আটঘরিয়ায় উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের হিদাসকোল আনসার ভিডিপি ক্লাব মাঠে আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর ও ককটেল বোমা ফাটিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। চাঁদপুরে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সলিম উল্লাহ সেলিমকে পুলিশ আটক করার পর উত্তেজিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। বগুড়া-৫ আসনের শেরপুর উপজেলায় নির্বাচনী প্রচার নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া ও গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। খুলনা বিএনপির গণসংযোগ চলাকালে হামলায় ১০ জন আহত হয়েছে। কুমিল্লার লাঙ্গলকোর্টে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের হেলমেট বাহিনীর হামলায় অগ্নিসংযোগসহ অন্তত ৫০টি বসতঘর ও দোকান ভাঙচুর করা হয়। নোয়াখালী-২ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী জয়নুল আবদিন ফারুক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, তার একটি নির্বাচনী গণসংযোগে অতর্কিতে হামলা ও গুলিবর্ষণ করেছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। নরসিংদীর পলাশে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসে মঈন খানের ওপর হামলা, ব্যক্তিগত সহকারী আহত। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে পুলিশ-বিএনপির ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় পুলিশের ৭০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ। এ ঘটনায় পুলিশসহ ২০ জন আহত হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

খাগড়াছড়ি : পানছড়ি উপজেলার পুজগাং বাজারে সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুজনের মধ্যে একজন লোগাংয়ের বাসিন্দা চা দোকানি উজ্জ্বল বিকাশ চাকমা ওরফে চিক্কু চাকমা (২৫) ও অপরজন স্থানীয় রাস্তার নির্মাণশ্রমিক চট্টগ্রামের বাসিন্দা সোহেল রানা (৩০)। এ সময় সন্ত্রাসীরা ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থী নতুন কুমার চাকমার নির্বাচনী অফিসও জ্বালিয়ে দেয়। ইউপিডিএফ (প্রসীত) ঘটনার জন্য জেএসএস (এমএনলারমা) গ্রুপকে দায়ী করেছে।   

খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম সালাউদ্দিন জানান, গতকাল দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে ১০-১৫ জনের পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের একটি দল পুজগাং বাজারে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এ সময় ঘটনাস্থলে তারা দুজন নিহত হয়। ঘটনার পর পুজগাং বাজারটি বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে সন্ত্রাসীরা ইউপিডিএফের স্বতন্ত্র প্রার্থী নতুন কুমার চাকমার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেয়। এদিকে ইউপিডিএফের জেলা সংগঠক মাইকেল চাকমা ঘটনার জন্য জেএসএস (এমএনলারমা) গ্রুপকে দায়ী করে অবিলম্বে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জেএসএস (এমএন-লারমা) গ্রুপের কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা বলেন, এলাকাটি ইউপিডিএফ (প্রসীত) গ্রুপ অধ্যুষিত। এখানে অন্য কোনো সংগঠনের কার্যক্রম নেই। ঘটনার সঙ্গে জেএসএস (এমএন-লারমা) কোনোভাবেই জড়িত নয়।

শরীয়তপুর : শরীয়তপুর-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী মিয়া নূরুদ্দিন আহমেদসহ তার সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে। এতে নূরুদ্দিন মাথা ও ঘাড়ে আঘাত পেয়েছেন। এ ছাড়া দলের ৫০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নূরুদ্দিন নেতাকর্মীদের নিয়ে গোসাইরহাট উপজেলার কুদালপুর থেকে মিছিল করে উপজেলা সদরে যাচ্ছিলেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মিছিলটি সদরের পট্টি এলাকায় পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। এতে বিএনপি প্রার্থী নূরুদ্দিন মাথা ও ঘাড়ে আঘাত পান। নূরুদ্দিনের স্বজনরা জানান, তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নেওয়া হয়।

লক্ষ্মীপুর : সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের শান্তিরহাট বাজারে গতকাল সোমবার সকালে নির্বাচনী প্রচারকালে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় দলের ৫০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ১৬ জনকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আহতরা হলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর সদর আসনের ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়াসহ ৩০ জন। অপরদিকে আওয়ামী লীগ নেতা মো. সিরাজ, যুবলীগ কর্মী মো. জুয়েলসহ ২০ জন আহত হয়।

মুন্সীগঞ্জ : টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বাহেরপাড়া এলাকায় বিএনপি প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় মিজান সিনহাসহ ৫-৭ জন আহত হয়েছে। গত রোববার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় মিজান সিনহাকে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহত মিজান সিনহার স্ত্রী জাহানারা সিনহা, ছেলে তানভীর সিনহা ও মেয়ে তাসলিম সিনহাকেও চিকিৎসা দেওয়া হয়। এছাড়া অপর আহত মিজান সিনহার নিরাপত্তাকর্মী মো. মামরুল ইসলামকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা জানায়, রাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি যোগে ঢাকা থেকে সপরিবারে নিজ গ্রামের বাড়ি লৌহজং উপজেলার কলমা গ্রামে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তার নির্বাচনী আসনের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বাহেরপাড়া এলাকায় পৌঁছলে মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলির কর্মী-সমর্থকরা গাড়ির গতিরোধ করে ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালায়। এদিকে মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে বিএনপিদলীয় প্রার্থী শাহ-মোয়াজ্জেম হোসেনের গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে। এ সময় ৫টি গাড়ি ভাঙচুর ও ৪ বিএনপি কর্মী আহত হয়। গতকাল সোমবার দুপুর ২টার দিকে জেলার সিরাজদিখান উপজেলার বয়রাগাদি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে

পাবনা : পাবনা-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী একেএম সেলিম রেজা হাবিবের গণসংযোগে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। হামলায় প্রার্থীর ভাইসহ ১০ কর্মী সমর্থক আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে সুজানগর উপজেলার সাগরকান্দি বাজারে এই ঘটনা ঘটে।

ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে পীরগঞ্জ উপজেলার লোহাগাড়া বাজারে নৌকা মার্কার প্রার্থী ইয়াসিন আলীর একটি নির্বাচনী অফিসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত রোববার রাত ৩টায় দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ওই অফিসের কাপড়ের বেড়াসহ নৌকা মার্কার পোস্টার পুড়ে যায়।

সোনাগাজী (ফেনী) : দলীয় কোন্দলে সরকার সমর্থক দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি হামলায় তিনজন গুরুতর জখম ও কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার বগাদানা ইউপির পাইকপাড়া গ্রামে হামলায় খুরশিদ আলম ও মো. ইউনুছ নামে দুই আওয়ামী লীগ কর্মী গুরুতর জখম হয়েছে।

ইসলামপুর (জামালপুর) : পৌর শহরের বেপারিপাড়া মোড়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফরিদুল হক খান দুলালের নির্বাচনী প্রচারণা কার্যালয়ে রাতে বিএনপির সমর্থকরা অগ্নিসংযোগ করে। একই সময় বিএনপির সমর্থকরা সভুকুড়া ব্রিজ মোড়ে একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় মামলার পর পুলিশ ইসলামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে।

রাজাপুর (ঝালকাঠি) : আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পথসভায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কলেজছাত্রসহ ৪ জন আহত হয়েছে। গত রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার উত্তমপুর বাজার এলাকার বড়ইয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) : নৌকার পক্ষে নির্বাচনী পথসভাকে কেন্দ্র করে গতকাল সোমবার পৌরসভার আরামনগর বাজারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় উপজেলা বিএনপির কার্যালয় পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া অন্তত ৩০টি দোকান ও ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।

সেনবাগ (নোয়াখালী) : নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আলহাজ মোরশেদ আলমের তিনটি নির্বাচনী অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। গত রোববার রাতে উপজেলার কাদরা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের আহম্মদপুর ও উপজেলার বীজবাগ ইউনিয়নের জয়নগর হাই স্কুল এবং উপজেলার ডমুরুয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মইশাই এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।

দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) : উপজেলার শিল্পনগরী দর্শনা তেল পাম্পের সন্নিকটে পুলিশের এএসপি সার্কেল (দামুড়হুদা-জীবননগর) আবু রাসেলের গাড়িতে বোমা হামলা হয়েছে। গত রোববার রাত ৯টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশ বোমা হামলাকারী খালেকুজ্জামান টিটুকে আটক করেছে।

আটঘরিয়া (পাবনা) : উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের হিদাসকোল আনসার ভিডিপি ক্লাব মাঠে আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর ও ককটেল বোমা ফাটিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটে গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে।

চাঁদপুর : জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সলিম উল্লাহ সেলিমকে পুলিশ আটক করার পর উত্তেজিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এই ঘটনায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর ১টার দিকে বিএনপি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী দীপু মনির বাসার মাঝামাঝি স্থানে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

বগুড়া : বগুড়া-৫ আসনের শেরপুর উপজেলায় গতকাল সোমবার বিকালে নির্বাচনী প্রচার নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া ও গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এতে গাড়ির গ্লাস ভাঙচুরসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর হয়।

খুলনা : বিএনপির গণসংযোগ চলাকালে হামলায় ১০ জন আহত হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে নগরীর খালিশপুর এলাকায় বিএনপির প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুলের কর্মীদের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।

নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) : আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের হেলমেট বাহিনীর হামলায় অগ্নিসংযোগসহ অন্তত ৫০টি বসতঘর ও দোকান ভাঙচুর করা হয়। এতে যুবলীগ নেতাসহ আহত হয়েছে চারজন। গত রোববার রাতে উপজেলার রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের বেতাগাঁও গ্রাম ও ইলকশান বাজার এ ঘটনা ঘটে।

সেনবাগ (নোয়াখালী) : নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে বিএনপির দলীয় ধানের র্শীষ মার্কার প্রার্থী জয়নুল আবদিন ফারুক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, তার একটি নির্বাচনী গণসংযোগে অতর্কিতে হামলা ও গুলি বর্ষণ করেছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গতকাল সোমবার বিকালে সেনবাগ উপজেলার কালিপুর ইউনিয়নের ইয়ারপুর গ্রামস্থ এমপি ভিলায় ওই সাংবাদ সম্মেলন হয়। গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা কাবিলপুর ইউনিয়নের উত্তর সাহাপুর ৪নং ওয়ার্ডে সন্ত্রাসীদের গুলিতে অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়।

নরসিংদী : পলাশে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নরসিংদী-২ (পলাশ) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ড. আবদুল মঈন খান। হামলায় তার ব্যক্তিগত সহকারী বাহাউদ্দিন ভূঁইয়া মিল্টন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার ২টার দিকে ইউএনওর কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় বাহাউদ্দীন ভূঁইয়া মিল্টনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর কিছুক্ষণ আগে একই উপজেলার পারুলিয়া দরগা মসজিদ এলাকায় মঈন খাঁনের গণসংযোগে পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি।

আহত বাহাউদ্দিন ভূঁইয়া মিল্টন জানান, ড. আবদুল মঈন খান ও আমি নির্বাচনী প্রচারণায় পুলিশি বাধা এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলার বিষয়ে অভিযোগ করতে রিকশা দিয়ে উপজেলা পরিষদে যাই। পরিষদের সিঁড়ি দিয়ে উপরে ওঠার সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা অতর্কিতভাবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে স্যারকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় আমি গুরুতর জখম হই। ওই সময় হামলাকারী প্রকাশ্যে গুলি ছুড়তে থাকেন।

কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ) : জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত বিএনপির প্রার্থী মো. শরীফুল আলমের গণসংযোগে পুুলিশ ও বিএনপির মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকালে কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের বিএনপি প্রার্থী মো. শরীফুল আলম নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলার বরখারচর গ্রামে গণসংযোগ ও পথসভায় যাওয়ার পথে কুলিয়ারচর থানার অদূরে টিঅ্যান্ডটি অফিসের সামনে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগানের ৭০ রাউন্ড  গুলি বর্ষণ করে। পুলিশের গুলিতে বিএনপির অন্তত ৯জন নেতাকর্মী আহত হয়। অপরদিকে বিএনপির ইট-পাটকেলের আঘাতে ২ পুলিশ অফিসারসহ ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়।