কোভিড-১৯ রোগীদের মারাত্মক জটিলতা রোধ করতে পারে ফ্লুভক্সামিন: গবেষণা

ফাইল ছবি

বিদেশ

কোভিড-১৯ রোগীদের মারাত্মক জটিলতা রোধ করতে পারে ফ্লুভক্সামিন: গবেষণা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৪ নভেম্বর, ২০২০

ফ্লুভক্সামিন নামের একটি ওষুধ কোভিড-১৯ রোগীদের সবচেয়ে মারাত্মক জটিলতা থেকে রক্ষা করে এবং হাসপাতালে ভর্তি করা ও পরিপূরক অক্সিজেন ব্যবহারের সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে পারে বলে জানিয়েছেন সেন্ট লুইসের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ১৫২ জন রোগীর ওপর গবেষণা চালিয়ে এ তথ্য জানান তারা।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা দুই সপ্তাহ ধরে ফোন বা কম্পিউটারের মাধ্যমে গবেষণা দলের সদস্যদের সাথে প্রতিদিন আলাপচারিতা করার সময় অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধ বা প্লাসেবো সুগার পিল গ্রহণ করেন।

এর মাধ্যমে রোগীরা তাদের লক্ষণ, অক্সিজেনের স্তর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণগুলোর বিষয়ে তথ্য প্রদান করেন। যদি রোগীদের শ্বাসকষ্ট হয় বা তারা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন অথবা তাদের অক্সিজেনের স্যাচুরেশন ৯২ শতাংশের নিচে নেমে যায় তাহলে তাদের অবস্থার অবনতি ঘটে বলে মনে করা হয়।  

১৫ দিন পরে, ওই ওষুধটি গ্রহণ করেছেন এমন ৮০ জন রোগীর মধ্যে কেউই গুরুতর কোনো স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়েননি।

তবে অন্য ৭২ জন রোগী যাদেরকে প্লাসেবো দেয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে ছয়জন বা ৮.৩ শতাংশ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল এবং যার মধ্যে চারজনকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয়।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সহযোগী অধ্যাপক এবং সিনিয়র লেখক অ্যাঞ্জেলা এম রেয়ারসেন বলেন, ‘এই ওষুধটি কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন উপায়ে কাজ করতে পারে। তবে আমরা মনে করি প্রদাহজনক অণুর উত্পাদন হ্রাস করার জন্য এটি সম্ভবত সিগমা-১ রিসেপ্টারের সাথে কাজ করছে।’

‘অতীত গবেষণা প্রমাণ করেছে যে ফ্লুভক্সামিন বিভিন্ন প্রাণীর শরীরে প্রদাহ হ্রাস করতে পারে এবং এটি আমাদের রোগীদের ক্ষেত্রেও হয়তো একই রকম কিছু করতে পারে,’ বলেন তিনি।

রিয়ারসেন বলেন, প্রদাহের ওষুধের প্রভাবগুলো রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া বাড়ানো থেকে বিরত রাখতে পারে, যা কিছু কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর মধ্যে দেখো গেছে, যারা আক্রান্ত হওয়ার কয়েকদিন পরে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন এবং পরে তাদের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। এসব রোগীদের অনেককেই পরে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং অনেকের মৃত্যুও হয়।

মোবাইল এবং ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুরো যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরিচালনা করতে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে গবেষকরা বড় পরিসরে একটি গবেষণা শুরু করবেন।

ফ্লুভক্সামিন সাধারণত মানসিক রোগ অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজঅর্ডার (ওসিডি), সামাজিক উদ্বেগ এবং হতাশার চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি সিলেটিভ সেরোটোনিন-রিউপটেক ইনহিবিটারস (এসএসআরআই) নামে পরিচিত ওষুধগুলোর একটি শ্রেণিতে থাকলেও, অন্যান্য এসএসআরআইয়ের বিপরীতে, ফ্লুভক্সামিন সিগমা-১ রিসেপ্টর নামক একটি প্রোটিনের সাথে দৃঢ়ভাবে যোগাযোগ করে। এই রিসেপ্টর শরীরের প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।

বৃহস্পতিবার আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালের অনলাইনে এ সংক্রান্ত সমীক্ষাটি প্রকাশ করা হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads