কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়টি (জাককানইবি) ২০০৬ সালে ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রতিষ্ঠিত হয়। গত ১৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমানের মেয়াদ শেষ হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছেন কোষাধ্যক্ষ মো. জালাল উদ্দিন।
কে হচ্ছেন আগামী উপাচার্য তা নিয়ে জাককানইবি পরিবারে চলছে নানা জল্পনাকল্পনা। কেমন উপাচার্য চান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা? সেই প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মতামতে উঠে এসেছে নানা সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা।
হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, এমন উপাচার্য চাই যিনি সৎ, আদর্শবাদ এবং একজন দক্ষ প্রশাসক। যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণে সার্বক্ষণিক কাজ করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ কর্ণধার নিয়ে ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের কানিজ ফাতিমা আন্নি বলেন, বর্তমান ক্যাম্পাসে এমন উপাচার্য দরকার যিনি নিজেদের অন্তঃকোন্দলে অধিক সময় ব্যয় না করে একাডেমিক দিকে মনোযোগ দিবেন। সেশনজট নিরসন, ছাত্রবান্ধব ক্যাম্পাস, স্বচ্ছ পদ্ধতিতে শিক্ষক নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী উপাচার্য চাই।
মাস্টার্স পড়ুয়া অর্থনীতি বিভাগের ছিদ্দিকুল করিম শামীম বলেন, আমাদের ছোট্ট ক্যাম্পাসে সমস্যার শেষ নেই। আমরা এ রকম অভিভাবক চাই, যার হাত ধরে অনেক দূর এগিয়ে যাবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, প্রশাসনিক কাজে গতিশীলতা বাড়ানো, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ এবং নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে যত অভিযোগ সব দূর করে শিক্ষা ও গবেষণার জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে যেন অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়।
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিনা জেবীন বলেন, এমন উপাচার্য চাই যিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ নিশ্চিত করবেন। ক্যাম্পাসে সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য, নিরাপত্তা, আধুনিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যবীমার ব্যবস্থা করবেন।
ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান শাকিল বলেন, জাতীয় কবির নামে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও এখন পর্যন্ত এ বিশ্ববিদ্যালয় সত্যিকার অর্থে একজন দুখু মিয়ার দেখা পায়নি। বিদ্রোহী চেতনায় উদ্ভাসিত হয়ে সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধ প্রতিমূর্তি একজন অভিভাবক থাকবেন এটাই প্রত্যাশা। যিনি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা, গবেষণা ও আবাসনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিবেন।
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহিন মিয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তবমুখী চিন্তা করবে এবং শিক্ষকদের আদর্শ হিসেবে থাকবে এমন একজন উপাচার্য এখন সময়ের দাবি। কথায় নয়, কাজ বাস্তবায়নের প্রতি জোর দিয়ে অন্যায় এবং দুর্নীতির সাথে আপোষহীনভাবে এগিয়ে যাবে এমন একজন প্রগতিশীল, শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য চাই।
মোকছেদুল মুমীন