কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়ন মারজানা বেগম (১২) নামে পঞ্চম শ্রেণির এক মাদরাসা ছাত্রী এবং ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন থেকে জনি বেগম (২২) নামে অপর এক গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে গৃহবধুর স্বামী সাইদুল ইসলাম লাকি পলাতক রয়েছে।
এদিকে ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের নওয়াগাঁও থেকে শনিবার ২৭ এপ্রিল রাত আনুমানিক ১১ জনি বেগম (২২) নামে এক গৃহবধুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মুসলিম এইড কমিউনিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গৃহবধুর চাচা সাইস্তা মিয়া ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবি করে থানায় মামলা দায়ের করবেন বলে জানান।
গৃহবধুর চাচা সাইস্তা মিয়া অভিযোগ করেন, জনি বেগমের স্বামী সাইদুল ইসলাম লাকির সাথে জনি বেগমের বিয়ের এক দেড় বছর পর থেকেই শুরু হয় সম্পর্কে টানাপোড়েন। যৌতুকের দাবিসহ কারণে অকারণে নির্যাতন চালাতো। ২৬ এপ্রিল জনি বেগমকে মারপিট করে এবং মৌলভীবাজার জেনারেল হাসপাতাল নামক একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। মৃত্যুর আগে জনি বেগমের হাতে সেলাইন এবং প্র¯্রাবের রাস্তায় কেথেটার লাগানো ছিলো। মৃত্যুর পর সেগুলো তার ননদ মুক্তা লাশ থানায় আনার আগেই খুলে ফেলে। মুক্তা ব্রাহ্মণবাজারের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কাজ করে।
ৱকুলাউড়া থানা পুলিশ এঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই গৃহবধুর শ্বশুর কাইয়ুম মিয়া, শ্বাশুড়ী মমতাজ বেগম, ননদ মুক্তা ও দেবর মাহিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নিহত গৃহবধু জনি বেগমের বাবার বাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জ থানার পূর্বগৌরিপুর ইউনিয়নের কায়েস্থঘাট গ্রামে।
কুলাউড়া থানার এসআই মাসুদ জানান, সুরতহাল রিপোর্টে গৃহবধুর ঘাড়ের দু’পাশে রক্ত জমাটের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের পরিবার অভিযোগ দিলে মামলা নেয়া হবে। নিহত গৃহবধু জনি বেগমের স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানায়, ইউনিয়নের কেওলাকান্দি গ্রামের মো. লিয়াকত আলী শনিবার ২৭ এপ্রিল সকালে প্রতিদিনের মতো কাজে বেরিয়ে যান। খবর পেয়ে তিনি বাড়িতে ফিরে মারজানার মৃতদেহ দেখতে পান। মা সেলিনা বেগম জানান, মারজানা গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে যে রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে, সেই রশি ছিড়ে মেঝেতে পড়ে যায়। মারজানা ভুঁইগাঁও মহিলা মাদরাসায় ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে কুলাউড়া থানায় নিয়ে আসে।
কুলাউড়ার থানার এসআই খসরুল আলম বাদল জানান, মারজানার পরিবার বলছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাটি রহস্যজনক। তার লাশ পরিবার ময়নাতদন্ত ছাড়া নিতে চাচ্ছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।
কুলাউড়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, দু’টি ঘটনাই রহস্যজনক। দুটি লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।