পরিশ্রম ও ইচ্ছাশক্তি কাজে লাগিয়ে সফলতা পাওয়া সম্ভব প্রমাণ করলেন কুলাউড়ার রুনা। এবার ব্রোকলি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন প্রশংসনিয় হারে। বাড়ির পাশের জমিতে শাক-সবজি চাষ করে হয়েছেন সাবলম্বী। ব্রোকলি এখনও সবাই সচরাচর ভাবে না চিনলেও খেতে অনেক সুস্বাদু জাতীয় একটি সবজি। রুনা ব্রোকলি ও অন্যান্য সবজি চাষে সফলতায় এলাকার আরো অনেক গৃহিনী আগ্রহী হচ্ছেন সবজি চাষে। কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের দক্ষিণ হিংগাজিয়া গ্রামের গৃহিনী রুনা বেগম (৩০)। ব্রোকলি চাষে সফলতার পেছনে অনুপ্রেরণা যুগিয়ে দেয়ার জন্য সিএনআরএস’র ‘সূচনা’ প্রকল্প সংশ্লীষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রুনা বেগম।
সরেজমিনে জানা যায়, স্বামীর একার আয়ে পরিবার চলছিল না। তাই স্বামীর পাশাপাশি পরিবারের আয়ে অংশীদার হতে চান রুনা বেগম। তখন পাশে এস দাঁড়ায় (২০১৭ সাল) এনজিও সংস্থা সিএনআরএস ‘সূচনা’ বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে। সেই ‘সূচনা’ কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও তাদের দেয়া সবজির বীজ, বিভিন্ন উপকরণে রুনা বেগম চাষাবাদ শুরু করেন। প্রথমে লালশাক, আলু, বেগুন, টমেটো, মিষ্টি-কুমড়া, সিম, গাজর প্রভৃতি সবজি চাষ করে সফল ও স্বাবলম্বী একজন কৃষক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এবছর তিনি ব্রুকলি চাষ করে আরো দ্বিগুন সফলতা পেয়েছেন। ব্রোকলির বাম্পার ফলন দেখে সূচনা কর্মকর্তা ছাড়াও স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাও রীতিমত অবাক।
রুনা বেগম জানান, ভালো পরামর্শ ও সহযোগীতায় যে কোন মানুষই লক্ষ্য অর্জন করতে পারে। আমি সূচনার অনুপ্রেরণায় সবজি চাষ শুরু করে সফল হয়েছি। এখন অনেকেই আমার সবজি চাষে সফলতা দেখে তারাও সবজি চাষে উৎসাহী হচ্ছেন। এছাড়া সূচনার কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে হাস-মুরোগ লালন-পালন করছেন বলে জানান তিনি।
সিএনআরএস সূচনা প্রকল্পের উপজেলা কো-অর্ডিনেটর তৌহিদুর রহমান জানান, কুলাউড়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে কৃষি, পুষ্টি, হাঁস-মুরগ, ছাগল-ভেঁড়া পালন, মাছ চাষ, সেলাই প্রশিক্ষণ ও মেশিন প্রদানসহ স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে সূচনা কাজ করছে। অন্যান্য সবজি বীজের পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের দু’জন কৃষককে পরীক্ষামূলক ব্রোকলি জাতীয় সবজি বীজ দেয়া হয়। এতে তারা দু’জনই সফল। তবে দক্ষিণ হিংগাজিয়া এলাকার রুনা বেগম ব্রোকলি চাষ করে বাজিমাত করেছেন।
কুলাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জগলুল হায়দার জানান, কৃষি বিভাগ থেকে সচরাচর সবজি বীজ দেয়ার সুযোগ থাকেনা। তবে আমাদের পক্ষ থেকে সবসময় কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দেয়া হয়। কৃষি অফিসের পরামর্শে সূচনা প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন কৃষককে নতুন জাতের সবজির বীজ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে হিংগাজিয়া এলাকার রুনা বেগম ব্রোকলি চাষ করে বেশ সফল হয়েছেন। তার চাষে ব্রোকলি গুলো অনেক বড় হয়েছে, যা এ উপজেলায় বিরল।