বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানো নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও কুমিল্লার তিনটি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মধ্যে চরম দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে ৪০ হাজার গ্রাহক এবং ৩ শত শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে আতংকের। কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দেওয়া স্থানীয় একটি সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২৮ফেব্রুয়ারী শুক্রবার অফিস বন্ধের দিন কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞাপনে কুমিল্লার তিনটি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও তাদের সকল গ্রাহকদের মধ্যে হই চই শুরু হয়। সমিতিগুলোকে কোন প্রকার পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রায় একশত কিলোমিটার এলাকার সাড়ে ৪ হাজার বৈদ্যুতিক খুঁটি সরিয়ে নেয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সরিয়ে না নিলে আগামী ৮ মার্চ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের মাধ্যমে ওই সব খুঁটিগুলো উচ্ছেদ করা হবে জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, উচ্ছেদের জন্য অতিরিক্ত কোন সময় দেয়া হবে না। উচ্ছেদকালে ক্ষতির জন্য সংশ্লিষ্ট পল্লী বিদ্যুত সমিতি দায়ী থাকবে।
এ বিজ্ঞপ্তিটি ওই স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশের পর মানুষ বিজ্ঞাপনের কপি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে তা ওই তিন সমিতি ও সাধারণ মানুষ জানতে পারে। এরপরই শুরু হয় হই চই। বিদ্যুত বিচ্ছিন্নের ভয়ে গ্রাহকদের মাঝে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ফলে গ্রাহকরা, বিশেষ করে শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক কর্তৃপক্ষ পল্লী বিদ্যুত অফিসগুলোয় যোগাযোগ করতে শুরু করলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোও দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে যায়। সমিতি গুলো গ্রাহকদের কোন প্রকার সন্তোষজনক জবাবও দিতে পারেনি।
তারা বলেন, আমরা কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা ১, ২ ও ৩ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম যথাক্রমে মোস্তাফিজুর রহমান, মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মো. আলী হোসেন জানান, এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে তারা কোন চিঠিও পাননি। এমনকি তাদের ফোনেও জানানো হয়নি। হঠাৎ করেই তারা বিজ্ঞপ্তিটি দেখে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। সেই সাথে গ্রাহকদেরও কোন সুষ্ঠু জবাব দিতে পারেননি তারা।
তারা আরো বলেন-এত স্বল্প সময়ের মধ্যে সাড়ে ৪ হাজার খুঁটি সরানো একটি দূরুহ ও খুব কঠিন ব্যাপার। মুজিব বর্ষে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো কাজ করছে এবং সরকারে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সূচক সবার জন্য মূল্য সাশ্রয়ী নির্ভরযোগ্য ও আধুনিক জ্বালানী নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো সরকারে নিয়ন্ত্রনাধীন প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে অফিসিয়াল ভাবে যোগাযোগ করে সমাধান করা যেত। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়টি যথাযথ হয়নি বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ এই প্রতিবেদককে বলেন- আপনার বাড়ির মধ্যে কেউ খুঁটি বসালে তা আপনি বসাতে দেবেন কি না? তিনি বলেন, তারা ভূমি নীতিমালা অনুযায়ী খুঁটিগুলো বসায়নি বলে আমরা তা সরিয়ে দেব। কোন প্রকার পূর্ব যোগাযোগ ছাড়া বহু বছরের পুরোনো খুঁটি গুলো সরানোর স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তিনি কোন জবাব দেননি।