সারিয়াকান্দির যমুনা নদীর চরাঞ্চলে এ বছরেও মিষ্টি কুমড়া অর্থাৎ কালো রত্নের ফলন ভালো হয়েছে। তবে এবার দাম আশা অনুরূপ না পাওয়ায় চাষিরা খুশি হতে পারছেন না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চরাঞ্চলে জমি থেকে মিষ্টি কুমড়া সংগ্রহের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে এই মিষ্টি কুমড়া।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সবখানে মিষ্টি কুমড়া চাষ হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি হয়েছে চরাঞ্চলের উর্বর জমিতে। এবার উপজেলায় ১০৫ হেক্টর অর্থাৎ ৭৮৭বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করা হয়েছে। আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি সময়ে চরের উর্বর পলি মাটিতে মিষ্টি কুমড়ার বীজ বপন করা হয়েছে। চাষ না দিয়ে খরা করে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চাষিরা বীজ বপন করেছিলেন। এরপর সেচ আর সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার দিয়ে এ ফসলের চাষ করার পর এ বছর জমিতে বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘায় ৫০ থেকে ৫৫ মণ পর্যন্ত এ বছর মিষ্টি কুমড়ার ফলন পাওয়া গেছে।
কাজলা ইউনিয়নের বেনীপুর চরের মিষ্টি কুমড়ার চাষি রোকন উদ্দিন জানান, তিনি প্রায় এ বছর চার বিঘা চরের জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছেন। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে বিঘা প্রতি ছয় হাজার টাকা। চার বিঘা জমি থেকে প্রায় ৮০ হাজার টাকা মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করেছেন তিনি। খরচ বাদে লাভ হয়েছে প্রায় ৫৫হাজার টাকার মতো।
ব্যবসায়ী রফিকুল আলম বলেন, চরের জমি থেকে মিষ্টি কুমড়া সংগ্রহের পর ঢাকা, বগুড়া, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হচ্ছে এ মিষ্টি কুমড়া।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কুদরত আলী বলেন, মিষ্টি কুমড়া উৎপাদনের সঙ্গে প্রায় ১২শ কৃষক সরাসরি যুক্ত হয়েছেন। এ বছর ১০৫ হেক্টর জমি থেকে ২০হাজার টন মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন হবে বলে আমরা আশাবাদী। ওই পরিমাণ মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করে প্রায় তিন কোটি টাকা পাওয়ার কথাও জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম জানান, এ বছর আবহাওয়া চমৎকার ছিল। এছাড়াও বন্যার পর মাটি ছিল উর্বর পলি। উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে জমিতে উন্নত জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হয়েছে।