কালীগঞ্জের পাটজাত জুতা রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপে

ছবি: বাংলাদেশের খবর

আমদানি-রফতানি

কালীগঞ্জের পাটজাত জুতা রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপে

  • টিপু সুলতান, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)
  • প্রকাশিত ১ এপ্রিল, ২০২১

উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে নারীদের হাতে পাটের তৈরি পরিবেশসম্মত বিভিন্ন ধরনের জুতা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। পাটের জুতার ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে। এই জুতা তৈরি করছে অ্যামাস ফুটওয়ার লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। আর এই প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান হয়েছে এলাকার প্রায় ৫শ জন নারীর। এর মধ্যে ৪শ নারীর অধিকাংশই গৃহিণী। বাড়ির কাজের পাশপাশি তারা হাতে তৈরি করছেন পাটের জুতা। অনেক নারী এখান থেকে আয় করে সংসার চালাচ্ছে। এখানকার উৎপাদিত জুতা ফ্রান্স, প্যারিস, জার্মানসহ বিভিন্ন দেশে ফ্যাশন শোতে ব্যবহূত হচ্ছে।

অ্যামাস ফুটওয়ার লিমিডেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবাইদুল হক রাসেল জানান, পড়াশোনা শেষ করে তিনি নিজে কিছু করতে চেয়েছিলেন। ঢাকায় প্রথম গার্মেন্ট ব্যবসা শুরু করেন। এরপর ২০১৬ সালে তিনি এলাকার মানুষের জন্য কিছু করার আগ্রহ নিয়ে এবং দেশের পাট শিল্পকে বিশ্বের তুলে ধরতে আগ্রহী হন। উপজেলার যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের রঘুনাথপুর বাজারের পাশে ৪৪ শতক জমি কিনে পাটের জুতা তৈরির কারখানা তৈরি করেন রাসেল। প্রথমে দেশ এবং বিদেশ থেকে কিছু মেশিন সংগ্রহ করে কাজ শুরু করেন। এরপর বিভিন্ন পাটের কারখানা থেকে উৎপাদিত পাটের কাঁচা মাল ক্রয় করে এনে এখানে পাটের জুতা তৈরি শুরু করেন। তার উৎপাদিত পাটের জুতা ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, স্পেন, চীন, জাপানসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ২০১৭ সাল থেকে এখানকার উৎপাদিত পাটের জুতা দেশের বাইরে রপ্তানি হচ্ছে। তিনি জানান, তার কারখানায় ৮০ জন নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। এছাড়াও এলাকার প্রায় ৪শ নারী এখান থেকে কাজ নিয়ে গিয়ে বাড়িতে কাজ করে। তাদের ফ্রি প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজ দেওয়া হয়। প্রতি জোড়া জুতায় জন্য তারা বিল পেয়ে থাকেন। একজন নারী বাড়ির অন্য কাজের পাশাপাশি হাতে এই জুতা তৈরি করে থাকেন। তারা চার হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেন।

ওবাইদুল হক রাসে বলেন, এই ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত জুতা বিভিন্ন দেশে দুই থেকে ১৫ ডলার পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। দুই ডলারের জুতা বিদেশে ১৫ থেকে ২০ ডলারে বিক্রি হয়। ইতোমধ্যে আমার কারখানায় উৎপাদিত পাটের জুতা দিয়ে প্যারিসে ফ্যাশন শো হয়েছে। আমি নিজেই এই জুতার মার্কেটিং করি। নিজেই বায়ারদের সঙ্গে কথা বলেন এবং রপ্তানি করি।

অ্যামাস ফুটওয়ার লিমিটেডের ম্যানেজার মাসুদ রানা জানান, এই কারখানায় ছয়টি ধাপে একটি জুতা তৈরি করা হয়। সোল্ড তৈরি হয় রাবার দিয়ে, জুতা তৈরি হয় পাট দিয়ে। আর এই কাজগুলো সম্পূর্ণ হাতের মাধ্যমে করা হয়। প্রতি মাসে তাদের কারখানা থেকে ৩০ থেকে ৪০ হাজার জুতা রপ্তানি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, পাটের উৎপাদিত জুতা দেশে কয়েকটি কারখানা থাকলে ও খুলনা বিভাগে এটিই প্রথম। এখানে কর্মরত নারীরা প্রথমে ফ্রি প্রশিক্ষন গ্রহণ করেন। এরপর কারখানা থেকে তারা সোল্ড এবং পাট নিয়ে যান। এরপর কাজের পাশাপাশি হাতে জুতা সেলাই করেন। একজন নারী প্রতিদিন ১৫ থেকে ২৫ জোড়া জুতা তৈরি করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads