কলারোয়া হাসপাতাল চলছে ৩ ডাক্তার দিয়ে, চরম ভোগান্তিতে রোগিরা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

কলারোয়া হাসপাতাল চলছে ৩ ডাক্তার দিয়ে, চরম ভোগান্তিতে রোগিরা

  • কে এম আনিছুর রহমান, সাতক্ষীরা
  • প্রকাশিত ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

সাতক্ষীরার কলারোয়া হাসপাতাল দীর্ঘদিন ধরে চলছে মাত্র ৩জন ডাক্তার দিয়ে। আর এ ডাক্তার সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলার একমাত্র সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি।

উপ-সহকারি মেডিকেল অফিসার দিয়ে জরুরী বিভাগের সেবা চালু থাকলেও কাঙ্খিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শত শত সাধারণ অসহায় মানুষ। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলিতেও পর্যাপ্ত কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যার সমাধান না হওয়ায় চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কলারোয়া উপজেলা সুশীল সমাজ। অবিলম্বে ডাক্তার সংকট সমাধানে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সু-দৃষ্টি কামনা করা হয়েছে।

কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানান- কলারোয়া ৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি এক সময় ২০ জন ডাক্তার কমর্রত থাকলেও এখন ৩৪টি পদের মধ্যে ৩১টি পদই শুন্য। কমরত ৩ জন ডাক্তার হলেন- স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. কামরুল ইসলাম, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিকুল ইসলাম ও মেডিকেল অফিসার ডা. বেলাল হোসেন।

হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম ও মেডিকেল অফিসার ডা. বেলাল হোসেন জরুরী বিভাগ, বহির্বিভাগ ও ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।

হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ডিউটি, বহির্বিভাগে ও ভর্তিকৃত রোগিদের সেবা দিতে ৩জন ডাক্তারকে ২৪ ঘণ্টাই ডিউটি করতে হচ্ছে। একই সাথে ফরাদ হোসেন, পিয়াস কুমার, সুজন দাস, শুভজিৎ রায়. নাজনিন নাহার, নারগীজ ফাতেমা সহ ৬জন সাব-এ্যাসিসস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার তাদের সার্বিক সহযোগিতা করছেন।

সূত্র জানায়, গত ১১ ডিসেম্বর প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডা. শান্তি মোহন ভদ্র অবসরে গেছেন। ফলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতালে গিয়ে প্রসূতি মায়েরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। পাশাপাশি এ্যানেস্থিশিয়া ডাক্তারসহ বিশেষজ্ঞ সার্জন না থাকায় সকল প্রকার অপারেশনও রয়েছে বন্ধ। যে কারণে স্থানীয় ক্লিনিকগুলো বেশ জমিয়ে ব্যবসা করছে। দাতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে পরিচালিত গর্ভবতী মায়েদের সিজারিয়ান অপারেশন কার্যক্রম ডাক্তার সংকটের কারণে প্রায় ৩ বছর বন্ধ রয়েছে। অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকায় নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রপাতি। সরকারের কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক বছর যাবত কলারোয়া সরকারি হাসপাতালটি ডাক্তার সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে সেবা বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও আজ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উপজেলার অসহায় মানুষের একমাত্র সরকারি চিকিৎসা সেবার ভরসা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি সচল করে উন্নত সেবা প্রদানের জন্য তারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আর্কশন করা হয়েছে।

কলারোয়া হাসপাতালের সহকারী সার্জন ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘চাহিদার তুলনায় এত কম ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। একদিকে অফিসিয়াল কাজ, অন্যদিকে জরুরী বিভাগ, ইনডোর-আউটডোর নিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে নিজেরাই অসুস্থ্য হয়ে পড়ছি। আমাদেরও তো বিশ্রামের প্রয়োজন আছে।’

তিনি আরো বলেন- ‘হাসপাতালে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক পদায়ন করা হোক যাতে অসহায় রোগীদের সুষ্ঠুভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা যায়।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads