কলমাকান্দায় নারী কঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

কলমাকান্দায় নারী কঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১

  • কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৯ নভেম্বর, ২০১৯

নেত্রকোণার কলমাকান্দায় সেই নারী কঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনায় প্রবাসী দিলোয়ারা (৪৫) নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।

আটক দিলোয়ারা বেগম (৪৫)উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের কয়রা গ্রামের মৃত আব্দুল গফুর ওরফে পুলিশ এর মেয়ে ও একই ইউনিয়নের গাংধরকান্দা গ্রামের প্রবাসী কামাল মিয়া মেম্বারের এর ২য় স্ত্রী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওমান প্রবাসী দেলোয়ারা প্রতি বছরে পাঁচ থেকে ছয় বার ছুটি নিয়ে এলাকায় আসা যাওয়া করতেন। সর্বশেষ ২ নভেম্বর উপজেলার কয়রা গ্রামের বাপের বাড়িতে আসেন। ৩০ নভেম্বর শনিবার ছুটির শেষে ওমানে যাওয়ায় কথা ছিল। বুধবার রাতে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের  উলুকান্দায় উব্দাখালি নদী থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি নারীর কঙ্কাল উদ্ধারের খবর হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে দেলোয়ারা ওই রাতেই নাইট কোচে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার চেষ্টা চালায়। পরে ওই রাতে সন্দেহজনকভাবে তাকে আটক করে থানা  নিয়ে আসেন পুলিশ। পরে পুলিশ বাদী হয়ে কলমাকান্দা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

নিখোঁজের সহোদর ভাই মো.শহিদ মিয়া  জানান, আমার বড় বোন মিনারা আক্তার চলতি বছরে গত ৪ মার্চ  দুপুর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি জানান, ওই দিন দুপুরে তার বোনের সতীন প্রবাসী দিলোয়ারা ওমান থেকে মোবাইলের মাধ্যমে বলে যে বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়েছে। বাড়ির সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে তার বোনের জামাই আলম ও তার মেয়ে জামাই সুজাত ব্যাংক থেকে টাকা তুলে দেবে। আমার বোন সেই টাকা তোলার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে যায়। কিন্তু আজও এখনো পর্যন্ত ফিরে আসে নাই। আমাদের আত্মীয় স্বজনের বাড়িসহ অন্যান্য সম্ভাব্য জায়গায় অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। আজও পর্যন্ত কোনো সন্ধান পাইনি। এবিষয়ে আমি কলমাকান্দা থানায় একটি নিখোঁজের জিডি করেছি।

তিনি  বলেন, গত বুধবার রাতে আমাদের গ্রামের পাশে উলুকান্দায় উব্দাখালি নদী থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি মানুষের কঙ্কাল উদ্ধারের খবর পেয়ে  ছুটে যাই ওখানে। বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি মানুষের কঙ্কালের সঙ্গে দুটি সিটিগোল্ড চুড়ি ও চুল দেখে আমি অনুমান করে বলতে পারি যে ওটা আমার বোনের সম্ভবত মরদেহের কঙ্কাল হবে।

কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল করিম আটক ও জিডি এর বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সতীন দিলোয়ারা মিনারা'র নিখোঁজের বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।  তার দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা দেখা হবে। জিজ্ঞাসাবাদে সন্দেহ হওয়ায় ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে তাকে আজ শুক্রবার বিকালে নারীর কঙ্কালের উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বুধবার রাতেই পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে কলমাকান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা করে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি  অনেক দিন আগে হয়তো কোন নারীকে হত্যা করে বস্তাবন্দি করে লাশটিকে উব্ধাখালি নদীর অংশে ফেলে দেওয়া হয়েছিল । প্রাথমিকভাবে কঙ্কালটির পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারের পর পরিচয় শনাক্তের জন্য  ডিএনএ টেস্ট ও ময়নাতদন্তের জন্য কঙ্কালটি বৃহস্পতিবার সকালে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। আমরা তদন্ত করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবো।

উল্লেখ্য, গত ২৭ নভেম্বর  সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের  উলুকান্দায় উব্দাখালি নদী থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি নারীর কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় ইউপির সদস্য শাহাদত আলী হিরণ বলেন, স্থানীয় তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী আলেক (১১) বিকেলে মাছ ধরতে গেলে উলুকান্দায় উব্দাখালি নদীর তলদেশে মাটিতে হাড়ের অংশ দেখতে পেয়ে একটি লাঠি দিয়ে খোঁচা দিলে আরো হাড় অংশগুলো বেরিয়ে আসে।  এতে করে সে ভয় চিৎকার শুরু করে। তার চিৎকারে এলাকাবাসীসহ আমরা ওখানে ছুটে যাই।  পরে আমরা কলমাকান্দা  থানা পুলিশকে খবর দেয়। ওই দিন সন্ধ্যায় বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি মানুষের কঙ্কালের সঙ্গে দুটি সিটিগোল্ড চুড়ি ও বেনি পাকানো চুল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads