মো. জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
ড্রাগন ফলের চাষাবাদ এখন সৈয়দপুরে হচ্ছে। উৎপাদন ও লাভজনক হওয়ায় এ উপজেলায় একাধিক গ্রামে গড়ে উঠেছে বিদেশি ড্রাগন ফলের বাগান। যে জমিতে অন্য কোনো ফসল হয় না, সে জমিতে চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফল চাষাবাদ করছেন। স্বল্প খরচে দ্রুত ফল উৎপাদন হওয়ায় এরই মধ্যে কয়েকটি এলাকায় চারা সৃজনের কাজ চলছে। চারা লাগানোর মাত্র ৭ মাসের মধ্যে ফল পাওয়া যায় বলে চাষিরা জানান।
রাশেদুন্নবী ওরফে মানিক নামের এক চাষি জানান, সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর পাখাতিপাড়ায় তিনি মাত্র ১০ শতক জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। ২০১৭ সালের জুনে ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করার পর ২০১৮ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে তিনি এ ফল বিক্রি করতে শুরু করেন। প্রথম মাসে এই ফলের দাম না জেনে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন তিনি। কিন্তু পরে ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত এ ফল তিনি বিক্রি করেছেন। ড্রাগন ফল বাগান থেকে ৬-৭ মাসে সব খরচ বাদে ২ লাখ টাকা লাভ করবেন, এটা তিনি ভাবতেই পারেননি। যাদের জমিজায়গা আছে, তাদের সবাইকে ড্রাগন ফল চাষের অনুরোধ জানান তিনি। খোজ নিয়ে
দেখা গেছে, উপজেলার উঁচু জমির পাশাপাশি নিচু জমিতেও ড্রাগন ফলের চাষাবাদ হচ্ছে। কম খরচে দ্বিগুণ লাভবান হওয়ায় চাষিদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
লেবু নামের এক যুবক জানান, ২০১৭ সালে তিনি তার ১০ শতক জমির ওপর ১০০ খুঁটিতে ২০০টি ড্রাগন চারা লাগিয়ে চাষ শুরু করেন। তার বাগান থেকে এক বছরে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা লাভ করেছেন। আগামীতে ১ বিঘা জমিতে ৬০০ খুঁটি লাগিয়ে ১২০০টি চারা রোপণ করবেন বলে জানান তিনি।
কামারপুকুর পাখাতিপাড়ার জয়নাল আবেদীন হিরো জানান, ড্রাগন চাষ করে কম খরচে দ্বিগুণ লাভ পাওয়া যায়- এটা এ এলাকার কৃষকরা জানতেন না। একে অপরের চাষাবাদ দেখেই তাদের ড্রাগন চাষাবাদে আগ্রহ বেড়েছে। হর্টিকালচারের সার্বিক সহযোগিতা পেলে এলাকার কৃষকরা ড্রাগন চাষে শতভাগ ঝুঁকে পড়বেন বলে তিনি মনে করছেন। তিনি বলেন, ১০-২০ শতক জমিতে অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করে ৬-৭ মাসের ব্যবধানে ৩-৪ লাখ টাকা আয় করা কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। এ জমিতে অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করে খরচের টাকাই ঘরে ওঠে না। কিন্তু কম খরচে ড্রাগনের চাষ করে ওই জমি থেকে ৬-৭ মাসের ব্যবধানে ৩-৪ লাখ টাকা আয় করা যে সম্ভব, তা অনেক চাষি প্রমাণ করেছেন। সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়রা মণ্ডল জানান, এ অঞ্চলের কৃষকরা নিজেদের উদ্যোগে ড্রাগন ফলের চাষ করছেন। এর চাষাবাদ আসলেই লাভজনক।