ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করে বিপাকে পড়েছেন লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মধ্য চরফলকন এলাকার প্রতিবন্ধী এক কিশোরীর পরিবার। মামলা তুলে নিতে পরিবারটিকে আসামির পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দেওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। ঘটনার ২১দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ অভিযুক্তকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে না পারায় সুষ্ঠু বিচার নিয়েও শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ধর্ষিতার স্বজনরা।
জানা যায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার মধ্য চরফলকন এলাকার রশিদ হাওলাদারের ছেলে মো. কাঞ্চন (৫২) একই বাড়ির বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে (সম্পর্কে নাতনী) বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় কিশোরীর পিতা বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করতে চাইলেও পুলিশ এজাহার গ্রহণ না করায় ১ অক্টোবর তিনি লক্ষ্মীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। বিচারিক হাকিম মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে নির্দেশ দেন। কিন্তু এ মামলা দায়েরের পর থেকে তা প্রত্যাহার করে নিতে অভিযুক্তসহ র লোকজন বাদি ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন।
ধর্ষিতা কিশোরীর মা জানান, ঘটনার সময় তিনি এনজিও’র ঋণের কিস্তির টাকা দেওয়ার জন্য পাশের বাড়িতে যান। এ সুযোগে তার চাচা কাঞ্চন ঘরে ঢুকে তার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েকে বিয়ের প্রলোভনে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পাশের বাড়ির কাজ শেষে ঘরে ঢুকে তিনি এ ঘটনা দেখে চিৎকার করলে বাড়ির অন্য সদস্যরা এগিয়ে আসলে ধর্ষক কাঞ্চন পালিয়ে যায়।
কিশোরীর দিনমজুর পিতা জানান, ঘটনার পর বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করার জন্য কাঞ্চন ও তার লোকজন বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে তার কাছ থেকে একটি অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। এসব ঘটনায় মামলা দায়েরের জন্য একাধিকবার তিনি এজাহার নিয়ে থানায় গেলেও অদৃশ্য কারণে তা গ্রহণ করা হয়নি। উপায়ান্তু না পেয়ে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
তিনি আরও জানান, মামলাটি দায়ের হওয়ার পরদিন থেকে অভিযুক্ত ও তার লোকজন প্রাণনাশের হুমকি, বাড়িঘর ছাড়া করাসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দিয়ে আসছেন। পাশাপাশি ধর্ষণের মেডিক্যাল রিপোর্ট নিজেদের পক্ষে করানোর জন্য তদবির চালাচ্ছেন। এতে করে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি প্রশাসনসহ সকলের কাছে এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।’
এদিকে, এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত মো. কাঞ্চনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মো. সোহাগ জানান, অভিযুক্তকে ধরতে তাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।