কপোতাক্ষ নদের ক্রসড্যাম স্থাপন নিয়ে তালা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

কপোতাক্ষ নদের ক্রসড্যাম স্থাপন নিয়ে তালা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

  • তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ৫ জানুয়ারি, ২০১৯

কপোতাক্ষ নদের উপর ক্রসড্যাম স্থাপন, পাখিমারা টিআরএম বিল ব্যবস্থাপনা ও পেরিফেরিয়াল বাঁধ পরিস্থিতি হুমকির মুখে। পানিউন্নয়ন বোর্ডের গড়িমসির কারনে একদিকে যেমন কপোতাক্ষ নদ পলি ভরাট হচ্ছে। অপরদিকে পাখিমারা বিলে পলিমাটি ব্যবস্থাপনায় বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষতি পুরন ও দ্রুতগতিতে ক্রসড্যাম দাবিতে তালা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আজ শনিবার সকাল ১১টায় উত্তরণ ও পানি কমিটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তালা উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি মোঃ ময়নুল ইসলাম।

তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, কপোতাক্ষ নদের নাব্যতা বৃদ্ধি ও জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানকল্পে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বিগত ২০১১ সালে ‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পে (১ম পর্যায়)’ মূলত দুটি কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। যার আওতায় একটি পাখিমারা বিলে টিআরএম স্থাপন এবং অন্যটি প্রায় ৯০ কি.মি. নদী খনন করা হয়। টিআরএম চলাকালে মূল নদের উপর ক্রসড্যাম দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে জোয়ারবাহিত পলি উপরাংশে না ঢুকিয়ে টিআরএম বিলে প্রবেশ করানো হয় এবং বর্ষা মৌসুমের শুরুতে পুনরায় ক্রসড্যাম তুলে দেয়া হয়। এই প্রকল্প গ্রহণের পরে ২০১৬-২০১৭ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত কপোতাক্ষ অববাহিকায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তি পায়। নদী রক্ষায় পলি ব্যবস্থাপনার আওতায় ক্রসড্যাম স্থাপন একটি নিয়মিত কার্যক্রম। কিন্তু এ বছর পলি মৌসুমের অনেক আগেই নদীতে পলির আগমন ঘটেছে এবং প্রচুর পরিমাণে পলি টিআরএম এর উজান অংশে প্রবেশ করে নদীর তলদেশ ভরাট হচ্ছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ডিসেম্বর-জানুয়ারীতে অর্থাৎ শুষ্ক মৌসুমের শুরুর এই সময়ে নদীতে ক্রসড্যাম না দিলে নদীকে রক্ষা করা যাবে না। যদিও সরকার ইতোমধ্যে ক্রসড্যাম স্থাপনের কাজ গ্রহন করেছে কিন্তু তা ধীর গতিতে বাস্তবায়ন হচ্ছে অর্থাৎ এখন পর্যন্ত কেবলমাত্র বাজেট অনুমোদন পেয়েছে কিন্তু এখনও টেন্ডার হয়নি। সেকারণে এসব কার্যক্রম সমাধান করে বাঁধ স্থাপনে কমপক্ষে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগবে। এভাবে পলির অবক্ষেপন ঘটলে নদী দ্রুত মারা যাবে। সেজন্য অতি দ্রুত যদি ক্রসড্যাম স্থাপন করা না হয় তাহলে এই প্রায় ২৬২ কোটি টাকার প্রকল্পের সুফল বেশিদিন থাকবে না।

ইতোমধ্যে সরকার ২০২১ সাল পর্যন্ত টিআরএম চালু রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সেজন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে উত্তরণ ও পানি কমিটি যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলনে অতিদ্রুত অর্থাৎ জানুয়ারী মাসের মধ্যে পাখিমারা টিআরএম বিলের বালিয়া কাটপয়েন্টে নদীর উজানমুখে ক্রসড্যাম স্থাপনের কাজ সমাপ্ত করা, শুষ্ক মৌসুমের শুরুতে অর্থাৎ ডিসেম্বরের মধ্যে ভবিষ্যতে প্রতি বছর নদীতে ক্রসড্যাম স্থাপনের কাজ সমাপ্ত করা এবং যথাসময়ে তা অপসারণ করা, জরুরীভাবে পাখিমারা টিআরএম বিলের পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কার, প্রকল্প সফলতার জন্য পাখিমারা টিআরএম বেসিনের দূরবর্তী পশ্চিমাংশে পলি অবক্ষেপনের ব্যবস্থা, পাখিমারা টিআরএম বিলের স্থায়ী ও অস্থায়ী অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণের অবশিষ্ট টাকা দ্রুত প্রাপ্তির ব্যবস্থা গ্রহণ, টিআরএম বিলের উপর নির্ভরশীল অধিবাসীদের মধ্যে যারা ক্ষতিপূরণ পায়নি এবং যারা আবেদন করতে পারেনি তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং টিআরএম কাটপয়েন্টের নিন্মাংশে নদীর ভাঙন রোধে যথোপোযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করর দাবী সমূহ উত্থাপন করেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি সিদ্ধান্তের সাথে অতিদ্রুত প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু করার দাবী জানান তিনি। সেজন্য মানুষের জীবন-জীবিকার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads