সকাল হতেই বেশ কজন শিক্ষার্থী সেতুর পুর্বপাড়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভাঙা সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পশ্চিম পাড়ে যাবে কি না। যদি সেতুতে উঠতেই ভেঙে পড়ে? ভয় শঙ্কা নিয়ে শিল্পি নামের এক শিক্ষার্থী ভাঙা সেতুটি এক লাফে পাড়ি দিল। পরে তাঁর দেখাদেখি দ্রুত অন্য শিক্ষার্থীরাও একই গতিতে সেতু পার হলো। তিন দিন ধরেই এমনি ভয় ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীসহ সাধারন পথচারি এ পথে চলছে। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের কাওরাইদ মধ্যপাড়া এলাকার জৈনা কাওরাইদ আঞ্চলিক সড়কের এ সেতুটি ভারি বাহনের চাপে পড়ে ভেঙে গেছে। অতিরিক্ত বালু বোঝাই ট্রাক পার হওয়ার পড়েই সেতুটি গত মঙ্গলবার রাতে ভেঙে পড়ে। এর পর থেকেই এ সড়কে সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। নিরুপায় পথচারিরা হেঁটে সেতু পার হয়ে কোনো ছোট যানবাহনে চলাচল করছে।এ ঘটনার পর থেকে শ্রীপুর গঁফরগাওসহ অন্তত ১৫ গ্রামের মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ বেড়েছে। তিন দিন ধরেই চরম দুর্ভোগে রয়েছে হাজারো মানুষ। এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি চলাচলের জন্য। সাধারন মানুষ এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
স্থানীয়রা জানান প্রায় পনের বছরের বেশি সময় ধরেই এ সেতুটি ঝুঁকিপুর্ন রয়েছে। বিভিন্ন সময় সড়কে কিছু কাজ করলেও এ সেতু মেরামতে কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। বিকল্প কোনো সড়ক ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই মানুষ এ সেতু ব্যবহার করেছে। কয়েক বছর ধরে বেশি ওজনের বালু বোঝাই ট্রাক চলে অবশিষ্ঠ সেতু ভেঙে পড়ল মঙ্গলবার রাতে। এর পর থেকে এ সড়কে সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমপাশের ১০-১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ পথেই চলাচল করত। এখনো কোনো আলাদা ব্যবস্থা না করে দেওয়া এ দুর্ভোগ চরমে রয়েছে। এখন ব্রিজের দুই পাশে বড় দুইটি গাছ বেঁধে রাখা হয়েছে যাতে কেউ ভুলে সেতুতে উঠে না পারে।
কাওরাইদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শরিফুল ইসলাম মামুন বলেন, এ বছরের শুরুতেই এ সেতুটি ব্যবহার অনুপোযুগি হয়ে পড়ে। বিকল্প কোনো না থাকায় জরাজীর্ন ঝুঁকিপুর্ন সেতু দিয়েই চলাচল করা হতো। তিনি আরো জানান, এ সেতু ব্যবহার করেই অন্তত ১০-১২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চলত।
শিক্ষার্থী শিল্পী জানান, ভয় নিয়ে সেতু পার হই। অনেকে ভয়ে সেতু পার হয়না। যদি সেতুতে উঠার পরে ভেঙে পড়ে। অনেকে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।
গয়েশপুর বাজারের ব্যবসায়ি শাহিন আলম বলেন, এ সেতু ভেঙে পড়ায় মালামাল পরিবহনে অন্তত বিশ কিমি পথ ঘরে দোকানে পৌঁছতে হচ্ছে যানবাহনকে। এতে অন্তত ২০ শতাংশ খবর বেড়ে গেছে। তিনি দাবি করেন অতিদ্রুত একটি বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহন করে মানুষের দুর্ভোগ কমাতে যেন কর্তৃপক্ষ নজর দেন।
কাওরাইদ ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল আজিজ বলেন, এ দুর্ভোগ কমাতে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে উপজেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী (এলজিইডি) এম মাসুদুল হক জানান, অল্প সময়ের মধ্যেই একটি টেকসই বেলিব্রিজ তৈরি করা হবে। বেলি ব্রিজ নির্মানের পরে দুর্ভোগ কমবে এ পথের চলাচলকারীদের।