বাংলাদেশে ২০২০ সালে নতুন করে ৬৫৮ জন এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৪১ জন। আর বর্তমানে এইচআইভি এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি। এর মধ্যে চিকিৎসার আওতায় এসেছে মাত্র আট হাজার ৩৩ জন। দেশে এ রোগে এখন পর্যন্ত মৃত্যু ১ হাজার ৩৮৩ জন। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমিতে বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এসটিডি প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, নতুন আক্রান্ত ৬৫৮ জন পজিটিভ রোগীর মধ্যে পরুষ ৭৬ শতাংশ, নারী ২১ শতাংশ ও তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী তিন শতাংশ। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ২১৮ জন, চট্টগ্রামে ১২৭ জন, খুলনা বিভাগে ৬৪ জন, সিলেট বিভাগে ৪৫ জন, বরিশাল বিভাগে ২৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫ জন ও রংপুর বিভাগে ১৫ জন রয়েছেন।
ডা. শামিউল ইসলাম জানান, নতুন আক্রান্তদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ, ২৫ থেকে ৪৯ বছররের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭৪ দশমিক ২০ শতাংশ, ১৯ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ, ১০ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে দুই দশমিক শূন্য সাত শতাংশ। ছয় থেকে নয় বছরের মধ্যে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। এবং শূন্য থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে এক দশমিক ৮৮ শতাংশ।
আক্রান্তদের মধ্যে বিবাহিতরাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত। এদের সংখ্যা ৭০ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। অবিবাহিতদের সংখ্যা ২৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। তিনি আরো জানান, ২০২০ সালে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ লাখ। এ বছর করোনার কারণে নমুনা পরীক্ষা কম হয়েছে। এর আগের বছর নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ৩৩ লাখের বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশে এখনও সাধারণ জনগণের মধ্যে সংক্রমণের হার শূন্য দশমিক ০১ শতাংশের নিচে। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী যেমন শিরায় মাদক গ্রহণকারী, যৌনকর্মী, সমকামী ও হিজড়াদের মধ্যে সংক্রমণের হার দুই শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। যা আগে ২৫ শতাংশের উপরে ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর বিশ্ব পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে বিশ্বের মোট এইডস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তিন কোটি ৮০ লাখ। এর মধ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে এক কোটি ৮০ লাখ। মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখ ৯০ হাজার মানুষের। এদের মধ্যে চিকিৎসার আওতায় এসেছে দুই কোটি ৫০ লাখের কিছু বেশি।
ডা. মো. শামিউল ইসলাম বলেন, সারা দেশে ২৩ জেলার ২৮টি হাসপাতালে এইচআইভি টেস্ট চলছে। জিন এক্সপার্ট মেশিন এইচআইভি ভাইরাস শনাক্তে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সচিব মো. আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ)সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য) মো. মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
‘সারা বিশ্বের ঐক্য, এইডস প্রতিরোধে সবাই নেবো দায়িত্ব’ স্লোগানে সারা দেশে বিশ্ব এইডস দিবস পালিত হচ্ছে।