প্রাণঘাতী কভিড-১৯ নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগে আছে ইউরোপের দেশ ইতালি। গতকাল পর্যন্ত ইতালিতে এই ভাইরাসে ২৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্ত হয়েছে আরো পাঁচ হাজার ৮৮৩ জন। তাই উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে লোম্বার্ডিসহ ১৪টি প্রদেশের এক কোটি ৬০ লাখ মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইনে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কন্টে।
রবিবার ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কন্টে বলেন, আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত কেউ এই প্রদেশগুলো থেকে বেরুতে পারবে না। এবং বাইরে থেকে কেউ সেখানে আসতেও করতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কন্টে আরো জানিয়েছেন, মোদেনা, পারমা, পিয়াসেনজা, রেজ্জিও এমিলিয়া, রিমিনি, পেসারো এবং আরবিনো, আলেসান্দ্রিয়া, অ্যাসটি, নোভারা, ভারবানো কিউসিও ওসোলা, ভারসেই, পাদুয়া, ট্রেভিসো এবং ভেনিসের মতো শহরগুলো আক্রান্ত হয়েছে।
উত্তর ইতালিতে ইতোমধ্যেই ৫০ হাজারের মতো মানুষ কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে বাণিজ্যিক কেন্দ্র মিলান এবং পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ভেনিসের মতো শহরও কোয়ারেন্টাইনের আওতায় থাকবে। আর করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ব্যায়ামাগার, সুইমিংপুল, যাদুঘর এবং স্কি রিসোর্টগুলোও বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
ওদিকে আক্রান্তের সংখ্যা ১২শ থেকে বেড়ে পাঁচ হাজার ৮৮৩ জনে পৌঁছানোর পর লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তাই এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির ১৫টি প্রদেশকে কোয়ারেন্টাইন করে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে কভিড-১৯ এর সংক্রমন ঠেকাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে দেশটি। পদক্ষেপগুলো- বিয়ের অনুষ্ঠান ও শেষকৃত্যসহ ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান স্থগিত। সিনেমা, নাইট-ক্লাব, ব্যায়ামাগার, সুইমিং পুল, যাদুঘর এবং স্কি রিসোর্টগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। রেস্তোরাঁ এবং ক্যাফে খোলা থাকতে পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে ক্রেতাদেরকে অবশ্যই এক মিটার দূরত্ব রেখে বসতে হবে। মানুষজনদের বলা হবে যাতে করে তারা যতটা সম্ভব ঘরে থাকে। যদি কেউ কোয়ারেন্টিন ভঙ্গ করে তাহলে তাকে তিন মাস জেলে কাটাতে হবে। সব ধরণের খেলাধুলার আসর বন্ধ থাকবে। ইতালির ফুটবল প্লেয়ার ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট সব ম্যাচ পিছিয়ে দেয়ার আহ্বানও করেছেন।
আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতালিকে পরামর্শ দিয়েছে যাতে করে দেশটি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে কঠিন নিয়ন্ত্রণ নেয়। এই ব্যাপক মাত্রায় কোয়ারেন্টাইন করার পরিকল্পনা চীনও করেছিল। ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে কাজে আসায় ওই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।