বিশেষ প্রতিনিধি
নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় মাঠে নামতে প্রশাসন নিষেধ করেছে এমন অভিযোগ করে ঢাকা-৯ আসনে বিএনপির প্রার্থী আফরোজা আব্বাস বলেছেন, ভেবেছিলাম সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতি ভালো হবে বরং উল্টো বেশি হামলা হচ্ছে।
মঙ্গলবার নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসকল অভিযোগ করেন।
আফরোজা আব্বাস বলেন, "আমি প্রথম দিন থেকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় নামার আগে নির্বাচন কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট থানায় লিখিতভাবে জানিয়ে তারপর নামি। কিন্তু এরপরও প্রতিদিনিই হামলার শিকার হচ্ছি। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে আমার শতশত নেতাকর্মী আহত হচ্ছেন"।
তিনি আরো বলেন, "আজকে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। আমি থানায় ও নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছি। কিন্তু সকাল থেকে সবুজবাগ থানার পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হল আজকে তারা আমাদের কোনো দায়িত্ব নিতে পারবে না। আজকে নাকি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী এখানে প্রচারণা চালাবেন। যুবলীগের মিছিল হবে। আমি বললাম তাদের মিছিলের আগে কিংবা পরে আমরা প্রচারণায় নামি। পরে থানা থেকে বলা হলো আজকে নিরাপত্তা দিতে পারবে না। এখন প্রশাসন যদি নিরাপত্তা দিতে না পারে। তাহলে আমি কী করবো। এর আগে যতবার প্রশাসনকে আমি জানিয়েছি ততবারই প্রসাশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আপনি নামেন আমরা দেখব। তারপরও হামলা হয়েছে। আজকে প্রশাসনই নামতে মানা করছে।
আমার নেতাকর্মীরা প্রচারণায় নামতে প্রস্তুত। কিন্তু আমি চাই না তাদের রক্ত ঝরুক। কারণ আজকে প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। আমি নামলে দেখা যেত প্রশাসন নিজেই হামলা করতো। সেই দায়িত্ব আমি নিতে চাই না।
আমরা গণসংযোগে যদি নাও যাই এটি বড় বিষয় না উল্লেখ করে আফরোজা বলেন, আমরা পোস্টার লাগাতে পারছি না ব্যানার লাগাতে পারছি না। কোনো কিছুর দরকার নেই। জনগনের মনের ভিতর আমাদের পোস্টার, ব্যানার ধারন করে রেখেছে, ধানের শীষ তাদের অন্তরে আছে। আমরা কিছুই চাই না শুধু ৩০ তারিখ জনগণ যেন নির্বিঘ্নে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে, এবং ভোটের অধিকার রক্ষা করতে পারে।
যদি আজকে প্রশাসন আর অনুমতি না দেয়; তাহলে কালকে থেকে আমি নামব। আমি বসে থাকব না।’
আফরোজা আব্বাস বলেন, আমি আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি। কিন্তু আমার ওপরই হামলা হচ্ছে। সারাদেশে ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হচ্ছে। গতকালও সরাসরি প্রার্থীর ওপর হামলা করা হয়েছে।
আমরা ভেবেছিলাম সেনাবাহিনী নামলে নিরাপদ থাকব, নিরাপদে কাজ করতে পারব। কিন্তু প্রেক্ষাপট বলছে ভিন্ন কথা। প্রশাসনই উল্টো প্রচারণায় নামতে মানা করছে।
তিনি বলেন, এখনও নিজের চোখে সেনাবাহিনী দেখিনি। শুনেছি নেমেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভালো ফল পাইনি। উল্টো আরও বেশি হামলা হচ্ছে। কিন্তু আমরা আশা করছি আগামী দিনগুলোতে দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনী আমাদের নিরাপত্তা দেবে।
হামলার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অভিযোগ কিনা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে আফরোজা আব্বাস বলেন, নির্বাচন কমিশনে অনেক অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখিনি। আমি নিরাপত্তা পাইনি। একজন নারী প্রার্থী হিসেবেও নিরাপত্তা পাইনি।
উল্লেখ্য, ঢাকা-৯ আসনটি রাজধানীর খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা থানাধীন নাসিরাবাদ ইউনিয়ন, দক্ষিণগাঁও ইউনিয়ন ও মান্ডা ইউনিয়ন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। যেখানে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ভোটার রয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার।
এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন বর্তমান এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের সহধর্মিনী।