আসন বঞ্চনায় হতাশ ইসলামী ঐক্যজোট

ছবি : সংগৃহীত

রাজনীতি

আসন বঞ্চনায় হতাশ ইসলামী ঐক্যজোট

  • কামাল মোশারেফ
  • প্রকাশিত ২৬ নভেম্বর, ২০১৮

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সঙ্গে সমঝোতা করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আশা থাকলেও তা হচ্ছে না মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ইসলামী ঐক্যজোটের। আওয়ামী লীগ দুটি আসনের আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত তা পাচ্ছে না বলেই ধরে নিচ্ছে দলটির নেতাকর্মী। দলটির নেতারা বলছেন, আজ পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে। তবে তাদের দলের প্রার্থীরা মিনার প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

সূত্র জানায়, ১৭ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর ইসলামী ঐক্যজোট বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে আসে। এরপর আওয়ামী লীগের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। ২০১৭ সালে আওয়ামী লীগের কাছে আসন চেয়ে চিঠিও দেয় দলটি। গত ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত কওমি সনদের স্বীকৃতির জন্য শোকরানা মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় দেখতে চেয়ে বক্তব্য দেন দলটির নেতারা। এরপর গত ৬ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপে অংশ নিতে গণভবনে গিয়েছিলেন দলের ১২ নেতা। পাশাপাশি তফসিল ঘোষণার পর স্বাগত জানিয়েছেন তারা। নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সঙ্গে দেন দরবার করে ইসলামী ঐক্যজোট। প্রথম অবস্থায় ১২টি আসনের প্রস্তাব দেয় তারা। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের কাছে ৪টি আসন চায় দলটি। আসনগুলো হলো— ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী নরসিংদী-৩, মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ চট্টগ্রাম-৭, ভাইস চেয়ারম্যান ও মরহুম মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ অথবা ৩ এবং সহকারী মহাসচিব মাওলানা আলতাফ হোসাইন কুমিল্লা-১।

এদিকে গতকাল রোববার ২৩০ আসনে নিজ দলের মনোনীত প্রার্থীদের চিঠি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-এ আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি। তবে এখানে বর্তমানে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ নরসিংদী-৩ আসনে জহিরুল হক ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম-৭ ড. হাছান মাহমুদ এবং কুমিল্লা-১-এ মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সুবিদ আলী ভূঁইয়াকে।

দীর্ঘদিন যাবৎ রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন ছিল মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ অথবা ৩ এবং সহকারী মহাসচিব মাওলানা আলতাফ হোসাইনকে কুমিল্লা-১ ছেড়ে দেবে আওয়ামী লীগ। তবে বিজয় নিশ্চিত করতে তাদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে।

ইসলামী ঐক্যজোটের একজন শীর্ষ নেতা জানান, নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রায় দুবছর ধরে আমাদের বৈঠক এবং আলোচনা হয়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের একটা সম্পর্কও তৈরি হয়েছে। এখন আমরা ১৪ দলেও নেই, মহাজোটে নেই। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে দুটি আসনের আশ্বাস পাওয়া গিয়েছিল। আসন দুটিতে দলীয় প্রতীক মিনারের পরিবর্তে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার চিন্তাভাবনা ছিল। কিন্তু এখন সবকিছুই ওলটপালট হয়ে গেছে। এখন সোমবারের মধ্যেই পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

ইসলামী ঐক্যজোটের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আলতাফ হোসাইন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছিল, এখন সোমবারের মধ্যেই পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে। এরপরই দলীয় ফোরামে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী বলেন, আমরা দুই-তিনটি আসনের আশ্বাস পেয়েছিলাম। কিন্তু একটিও পাব না বলে মনে হচ্ছে। এখন আমরা আমাদের দলীয় প্রতীকে ৬৪টি আসনে নির্বাচন করব।

এদিকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস-চেয়ারম্যান মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ দল ছেড়ে ২০ দলীয় জোটের শরিক জমিয়তে ইসলামে যোগ দিয়েছেন। তিনি মুন্সীগঞ্জ-১ আসন থেকে নৌকা মার্কায় নির্বাচন করতে আগ্রহী ছিলেন। আওয়ামী লীগের কাছে আসনবঞ্চিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে দল ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। আওয়ামী লীগ থেকে একটি আসনও পায় ইসলামী ঐক্যজোট, সেটিকে তাকে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

অন্যদিকে দলীয় প্রতীকে ইসলামী ঐক্যজোটের অন্তত ৬০ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এদের মধ্যে মাওলানা মেহেদী হাসান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫, মুফতী তৈয়্যব হোসাইন ময়মনসিংহ-২, মাওলানা আলতাফ হোসাইন কুমিল্লা-১, মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী চট্টগ্রাম-৫, মাওলানা ফজলুর রহমান গাজীপুর-১, মাওলানা একেএম আশরাফুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ প্রমুখ রয়েছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads