গাইবান্ধায় স্বারণকালের ভয়াবহ বন্যায় চলতি আমনের বীজতলাসহ আমন চারার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দীর্ঘদিন পানির নিচে থাকায় আমনের চারা নষ্ট হয়েছে। আমন ধান রোপনের সময় হলেও চারা সংকটে ধান লাগাতে পারছে না বানভাসী কৃষকরা। সরকারি বেসরকারি ভাবে বীজ সংগ্রহ করতে পারলেও নতুন করে চারা রোপনের জায়গাটিও পানিতে ডুবে থাকায় চারা বপন করা সম্ভব হচ্ছিল না। এমন সংকটময় অবস্থায় জেলার ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি বিভাগের উদ্যোগে কলার গাছের ভেলা বানিয়ে তার উপরে ভেজা মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ১০ টি ভাসমান বীজতলা। কৃষি বিভাগের তৈরি এসব ভাসমান বীজতলা দেখে ও তাদের পরামর্শে উৎসাহিত হয়ে কৃষক পর্যায়েও ব্যাক্তিগত ভাবে তৈরি করা হয়েছে আরও ৪২টি ভাসমান বীজতলা। সাধারণ বীজ তলার মতই এ ভাসমান বীজতলা।
চলতি আমন চাষের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে এসব ভাসমান বীজতলায় তৈরি চারা। চলছে পরিচর্যার কাজ। এসব বীজতলায় নাভি জাত ও বিনা-১১ জাতের বীজ বপন করে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের চারা সংকট মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ডুবে থাকা জমির পাশাপাশি পুকুর ও ডোবায় স্বল্প সময়ে ও কম খরচে এই পদ্ধতিতে বীজ তলা তৈরি করে চারা উৎপানে করতে পেরে খুশি কৃষকরা।
কৃষক ফরিদুল ইসলাম বলেন, বন্যায় আমন চারা সব নষ্ট হয়েছে। প্রত্যেক বছর যেখানে চারা বপন করা হয় সেখানে অনেক পানি রয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়েছে । এই পদ্ধতিতে খরচ কম হয় চারাও খুব তারাতাড়ি বড় হচ্ছে। ভাসমান বীজতলার চারা জমিতে লাগার উপযোগি হয়েছে। জমির পানি নেমে গেলে এই চারা দিয়ে আমন ধান লাগাতে পারবো।
এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের চারা সংকট মেটাতে ভাসমান বীজতলার পাশাপাশি ১৪ একর কমিউনিটি বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। নিয়মিত পরিচর্যার মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে এ সব চারা। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত জমিতে এ ধরনের ভাসমান বীজতলা খুবই গুরুতপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানালেন ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান।
বন্যা কবলিত ও নিম্মাঞ্চলে এ ধরনের বীজতলা ধানের পাশাপাশি অন্যান্য ফসল উৎপাদনে কৃষি বিভাগ কৃষকদের উৎসাহিত করবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। বন্যা পরবর্তী সময়ে পানি কমার সাথে সাথে কৃষক তার জমিতে ধান লাগাতে পারবে।