আবারো স্বপ্ন বুননে ব্যস্ত কৃষক

চর চিতুলিয়া থেকে ছবি তুলেছেন আব্দুল লতিফ তালুকদার

ছবি: বাংলাদেশের খবর

কৃষি অর্থনীতি

বন্যায় ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে

আবারো স্বপ্ন বুননে ব্যস্ত কৃষক

  • ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৪ নভেম্বর, ২০২০

এ বছর পর পরচার দফা বন্যায় বসতভিটাসহ সব কিছু হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের যমুনার চরাঞ্চলের কৃষকরা। সম্প্রতি বন্যার পানি নেমে যাওযায় চারদিকে জেগে উঠেছে বিস্তীর্ণ বালুচর। দীর্ঘস্থায়ী বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আবারো যমুনার চরাঞ্চলে বাদাম চাষে স্বপ্ন বুনছেন  কৃষকরা। তারা তাদের পরিবারের লোকজন নিয়ে বাদাম বীজবপন শুরু করেছেন। এবার উপজেলার চর চিতুলিয়া, খানুরবাড়ি, কোনাবাড়ি, গোপালগঞ্জ, কালিপুর, গোপিনাথপুর, বলরামপুর, বেলটিয়াপাড়া, রুলীপাড়া, জুঙ্গীপুর, সরইপাড়া, বাসুদেবকোল, ভদ্রশিমুল, শুশুয়া, মেঘারপটল, গোবিন্দপুর,  রামপুরসহ এসব চরাঞ্চলের গ্রামের কৃষাণ- কৃষাণিরা বাদাম চাষ করছেন।

সরজমিনে চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, বাদাম চাষের জন্য কৃষকরা জমি প্রস্তুত করছেন, কেউ বাদামের বীজবপন করছেন, কেউ লাঙল টানছেন আবার অনেকে বীজবপন করা জমি পরিচর্যা করছেন। সাথে যোগ দিয়েছেন গ্রামীণ নারীরাও। করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানবন্ধ থাকায় কাজ করছে স্কুল পড়ুয়া ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও। ভোর-সকালে সূর্য উঠতে না উঠতেই শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাদামবীজ বপনে ব্যস্ত এখন চাষিরা।

বাদামচাষি মোঃ নওশেরআলী সেখ বলেন, এবার বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাদামবীজবপন শুরু করছি। তিনি আরো বলেন, এবার বন্যায় বোরো আমনসহ অন্যান্য ফসল তলিয়ে যাওয়ায় বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।

খানুর বাড়ি গ্রামের বাদামচাষি আবদুস সালাম বলেন, স্বল্প খরচ, কম পরিশ্রমে বাদাম চাষে অধিক লাভবান হওয়া যায়। বাদাম চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয়  ৪-৫ হাজার টাকা এবং বিঘা প্রতিফলন পাওয়া যায় প্রায় ৮ থেকে ১০ মণ। বাজারে বাদামের ভালো চাহিদা থাকায় খরচ বাদে প্রতি বিঘায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা লাভ হয়। এবার আমি ৪ বিঘায় বাদাম চাষ করেছি।

সরই পাড়া গ্রামের বাদাম চাষি কোবাত আলী বলেন, গত বছরআমি ৪ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছিলাম। তাই এ বছর প্রায় ৬ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকুলে  থাকলে এবারো ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার আল মামুন রাসেল বলেন, যমুনা চরাঞ্চলে বাদাম ও অন্যান্য ফসল চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এরই মধ্যে যমুনার চরাঞ্চলে বাদাম চাষ শুরু করছেন কৃষকেরা। মাত্র ৭০-৯০ দিনের মধ্যে কৃষকের ঘরে উঠে ফসল। সুস্বাদু ও ভিটামিন সমৃদ্ধ এই ফসল একদিকে যেমন পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে তেমনি বাদাম থেকে তেলও তৈরি হচ্ছে। এছাড়াও বাদামের কচি পাতা গো-খাদ্য হিসেবেও এর চাহিদা রয়েছে। অন্য ফসলের মতো বাদাম চাষে  সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। ফলে স্বল্প খরচে বেশি লাভবান হওয়া যায়। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে ১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা সম্ভব হবে। তিনি আরোবলেন,  উপজেলায় এ বছর  ১হাজার ৬'শ কৃষকপরিবারেরতালিকা তৈরি করা হয়েছে তা কিছু দিনের মধ্যে সরকারের বরাদ্দকৃত প্রণোদনা কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads