সংসদে পাস হওয়া ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’-এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। গতকাল শনিবার রাতে সংগঠনটির সভাপতি সংসদ সদস্য ওয়াজিউদ্দিন খান ও সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
পরিবহন শ্রমিকদের আট দফা দাবি হলো, সড়ক দুর্ঘটনায় মামলা জামিনযোগ্য করতে হবে। শ্রমিকদের অর্থদণ্ড পাঁচ লাখ টাকা করা যাবে না। ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটসড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্সে শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করতে হবে। ওয়েটস্কেলে (ট্রাক ওজন স্কেল) জরিমানা কমানোসহ শাস্তি বাতিল করতে হবে। সড়কে পুলিশের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের সময় শ্রমিকদের নিয়োগপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সত্যায়িত স্বাক্ষর থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। সব জেলায় শ্রমিকদের ব্যাপক হারে প্রশিক্ষণ দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করতে হবে এবং লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। ফেডারেশনের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে যুগোপযোগী আধুনিক ও উন্নত সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়নের দাবি করে আসছে। সেই দাবিকে গুরুত্বসহ বিবেচনায় নিয়ে সরকার আইন পাস করলেও বেশ কিছু ধারা শ্রমিকস্বার্থের বিরুদ্ধে করা হয়েছে। যে কারণে পরিবহন শ্রমিকদের চরম অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আইনে সড়ক দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে গণ্য না করে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে জামিন অযোগ্য করা হয়েছে। আমরা জানি, দুর্ঘটনা পরিকল্পিতভাবে ঘটে না কিন্তু অপরাধ পরিকল্পিতভাবেই ঘটে।
এদিকে শুক্রবার কেরানীগঞ্জে ট্রাকচালক-শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক শ্রমিক নিহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবার একই দাবি নিয়ে ফুঁসে উঠেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। এরপরই এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন।
এ ছাড়া শনিবার এ দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দুপুর ২টায় পরিবহন শ্রমিকরা জড় হয়ে ৩টা থেকে রাস্তা অবরোধ করে সমাবেশ পালন করেন। ওই সমাবেশ থেকে রবি ও সোমবার শ্রকিক কর্মবিরতি পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে ৩০ অক্টোবর মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। পরে রাতে একই সংগঠন রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়।
এদিকে এ ধর্মঘটকে অবৈধ উল্লেখ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগসহ বিভিন্ন পরিবহন সংশ্লিষ্ট সংগঠন থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।