বসনিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ১২০০ অভিবাসী আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন। গত বুধবার উত্তর-পশ্চিম বসনিয়ার লিপা শরণার্থী শিবিরে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বসনিয়া প্রশাসন এবং শরণার্থী শিবির পরিচালকদের অভিযোগ, ওই ক্যাম্পের মানুষই আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। কারণ, বুধবারই ওই শিবির বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এ খবর জানিয়েছে।
এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিপুল পরিমাণ শরণার্থী বসনিয়ায় আটকে পড়েছেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার জন্য তারা রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু বসনিয়ায় পৌঁছানোর পরে তারা আর এগোতে পারেননি। প্রাথমিকভাবে অধিকাংশ শরণার্থীই জঙ্গলে বসবাস করছিলেন। কেউ কেউ বেছে নিয়েছিলেন বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার শেড অথবা ভাঙা বাড়ি। পরে সংবাদমাধ্যমে সে খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে অধিকার আন্দোলনকারীরা সরব হন। কয়েকটি ক্যাম্প তৈরি করা হয় শরণার্থীদের জন্য। যদিও তা মোট শরণার্থীর তুলনায় নেহাতই অপ্রতুল।
লিপার শিবিরও তেমনই একটি ক্যাম্প ছিল। তৈরির সময়েই বলা হয়েছিল, এই শিবির সাময়িক। বুধবার যে ক্যাম্প গুটিয়ে নেওয়া হবে, তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অথচ ক্যাম্পে বসবাসকারীরা এই শীতের মধ্যে কোথায় গিয়ে থাকবেন, সে বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। ফলে বুধবার ক্যাম্প ছাড়ার সময় ক্ষুব্ধ বসবাসকারীরা সেখানে আগুন লাগিয়ে দেন বলে অভিযোগ।
আশ্রয় হারানো এই শরণার্থীরা ইউরোপের প্রবল শীতে ফের জঙ্গলে গিয়ে থাকবেন। বসনিয়া-ক্রোয়েশিয়া সীমান্তে আরো বহু আশ্রয়হীন মানুষের সঙ্গে যোগ দেবেন। ভাঙা বাড়ি, কারখানার শেডে দিন কাটাবেন। অভিবাসীদের অভিযোগ, যে শিবিরে তারা ছিলেন, সেখানেও বিদ্যুৎ ছিল না। ব্যবস্থা ছিল না হিটিংয়েরও।
বসনিয়ায় আটকে পড়া শরণার্থীদের এখন পর্যন্ত আশ্রয় দিতে রাজি হয়নি ইউরোপের কোনো দেশ। বসনিয়াও স্থায়ীভাবে এই শরণার্থীদের রাখতে আগ্রহী নয়। ফলে তাদের জন্য কোনো স্থায়ী ব্যবস্থাও করা হচ্ছে না।
শরণার্থীদের অভিযোগ, ক্রোয়েশিয়া সীমান্তে তাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে সেখানকার পুলিশ। সব মিলিয়ে এই প্রবল শীতে দুর্বিষহ অবস্থায় পড়তে হয়েছে তাদের।