অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশনের অনন্য উদ্যোগ

সংগৃহীত ছবি

ফিচার

অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশনের অনন্য উদ্যোগ

  • তাবাসসুম তৈয়বা
  • প্রকাশিত ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

জামালপুরের অন্ধ হাফেজ চাঁন সওদাগরের পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন’। তাদের সক্ষম স্থায়ী জীবিকা প্রকল্পের মাধ্যমে অন্ধ হাফেজের একমাত্র ছেলে সিরাজুলের জন্য ব্যবস্থা করা হলো দোকানের। জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার হাতীভাঙ্গা ইউনিয়নের পূর্ব আমখাওয়া গ্রামে সক্ষম প্রকল্পের সহকারী সিনিয়র অফিসার নাভিদ আনজুম হাসান ও সহকারী অফিসার সৌখিন বিশ্বাস সিরাজুলের হাতে দোকানের চাবি তুলে দেন। দোকানের চাবি হাতে পেয়ে আনন্দে অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠে সিরাজুল চোখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন অন্ধ হাফেজ চাঁন সওদাগর।

এ বিষয়ে সক্ষম প্রকল্পের সহকারী অফিসার সৌখিন বিশ্বাস বলেন, গণমাধ্যমে পাওয়া সূত্র ধরে আমরা তার খোঁজ পাই, পরে চাঁন সওদাগরের সাথে কথা বলে তার চাওয়া ছেলের জন্য একটি ফুল সটআপ  কম্পিউটারসহ দোকানের ব্যবস্থা করা দেই। তাকে সহযোগিতা করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। ভবিষ্যতে তার জন্য একটি ব্রেইল মেশিনেরও ব্যবস্থা করে দেওয়ার চেষ্টা করবে বলেও জানান তিনি। চাঁন সওদাগর জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার হাতীভাঙ্গা ইউনিয়নের পূর্ব আমখাওয়া গ্রামের মৃত মনছুর আলীর ছেলে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই ইউনিয়নে বসবাস করে আসছেন। পারিবারিক সূত্র জানায়, ব্রেইল মেশিন দিয়ে অন্ধদের জন্য পবিত্র কোরআন ও হাদিসের বই লিখে সংসার চলতো অন্ধ হাফেজ চাঁন সওদাগরের। কিন্তু ছয়মাস ধরে মেশিনটি বিকল হয়ে পড়ে আছে। বিকল হয়ে যাওয়া মেশিনটি সারাতে বহু জায়গায় ঘুরেছেন চাঁন সওদাগর। কিন্তু কারো কোনো সহযোগিতা পাননি। চাঁন সওদাগরের সংসারে স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে। ছেলেটি এবার এসএসসি পাস করেছে। এখন কলেজে ভর্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১০ বছর আগে কিছুলোক তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করেছিলেন একটি ব্রেইল মেশিন কেনার জন্য। সেই মেশিনটি অকেজো হয়ে গেছে। বর্তমানে একটি ব্রেইল মেশিন কিনতে ৬০ হাজার টাকা লাগতে পারে। কিন্তু অর্থের অভাবে নতুন মেশিন কিনতে পারছেন না।

ফলে কর্মহীন হয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েন। সমপ্রতি প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন তার সাথে যোগাযোগ করে তার পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ায় পরিবারে আশার আলো দেখা দেয়। এ বিষয়ে চাঁন সওদাগর বলেন, আমার কথা শুনে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন বাড়িতে ছুটে এসেছিলেন। এছাড়াও সক্ষম প্রকল্পের মাধ্যমে আমার ছেলের জন্য একটি কম্পিউটারের দোকানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এখন আর মানুষের কাছে হাত পাততে হবে না। ছেলের রোজগারে আমি অন্তত দুবেলা দুমুঠো ভাত খেয়ে চলতে পারবো। এজন্য গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, উপজেলা প্রশাসন আমাকে আশ্বস্ত করেছেন সকল সমস্যা সমাধানের। যে হতাশায় জীবনযাপন করেছি তা বোধ হয় আল্লাহর অশেষ রহমতে থাকবে না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads