অব্যবস্থাপনায় চলছে জাবির ভর্তি পরীক্ষা

ছবি: বাংলাদেশের খবর

শিক্ষা

অব্যবস্থাপনায় চলছে জাবির ভর্তি পরীক্ষা

  • জাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সঠিক ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা নেয়ার কথা জানানো হলেও এখন দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র।  প্রতি বছর পরীক্ষার্থীরা একই ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। সেই তীব্রতা চলতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় আরও বেড়েছে কয়েকগুণ। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন হাজার হাজার ভর্তি ইচ্ছুক বিভিন্ন ইউনিটে শিফটভিক্তিক পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রতি শিফটের মধ্যে ফাঁকা সময় মাত্র ২০-২৫ মিনিট। এই সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষার্থীদের হল থেকে বের হওয়া ও পরবর্তী শিফটের পরীক্ষার্থীদের হলের ভেতরে প্রবেশে রীতিমতো তোড়জোড় শুরু হয়। 

এদিকে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে রীতিমতো ব্যবসায় নেমে পড়েছে কতিপয় স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। নিজের অসৎ উদ্দশ্যে হাসিল করার জন্য যেন ভর্তি পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকেন তারা। পরীক্ষা এলেই শুরু হয় তাদের দৌরাত্ম্য। পরীক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে অংশগ্রহণ করতে। তাদের সাথে থাকা ব্যাগ বা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখার জায়গা দিতে ব্যর্থ প্রশাসন। ফলে তারা কোনো উপায় না পেয়ে লোভাতুর গোষ্ঠীর ফাঁদে পা দেয়। ব্যাগসহ যেকোনো জিনিস সংরক্ষণের নাম করে সুলভ মূল্যের কথা বলে যেন টাকা তোলার পসরা নিয়ে বসে। প্রতিটা ব্যাগ বা মোবাইল রাখতে নিয়মিতভাবে নিচ্ছে ৫০/৬০ টাকা। 

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেটের প্রবেশ পথ সহ যেখানে সেখানে যেন শিট বিক্রির মেলা বসেছে। ১০ পৃষ্ঠার শিট ৮০ টাকা। ৫০ পৃষ্ঠার বই ২৫০ টাকা। বসে না থেকে পড়ুন, পড়লেই চান্স। চান্স না পেলে টাকা ফেরত ইত্যাদি মোড়কে শিট, বই বিক্রির মহড়া চলছে। এসব ভূঁয়াবাজিদের সরানোর কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ প্রশাসন।

অস্থায়ী খাবারের দোকানগুলোতে হৈ চৈ পড়ে গেছে। নেই মানসম্মত খাবার। বিরানি, তেহারি, মোরাব্বা ও কাচ্চি বিরানির নাম করে আড়ালে চলছে বাসি খাবার অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রির অশুভ প্রতিযোগিতা। রিকসা ভাড়া বেড়েছে দফায় দফায়। ৫ মিনিটের রাস্তা যাতায়াতে ভাড়া ৮০ টাকা। নেই কোনো পদক্ষেপ।

এদিকে অভিভাবকদের যত্রতত্র অবস্থান ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিবেশকে অস্থির করে তুলেছে। অভিভাবকসহ পরীক্ষার্থীদের জন্য নেই অস্থায়ী টয়লেট। ফলে পরীক্ষার হলে ঢুকেই বাথরুম খুঁজতে হয় পরীক্ষার্থীদের। যেখানে দীর্ঘ লাইন আর অপরিস্কার টয়লেট ব্যবস্থায় নাভিশ্বাস উঠার মতো অবস্থা। অভিভাবকরা পড়ছেন আরও বিপাকে। বসার মতো ঠাই পাচ্ছেন না কোথাও।

এদিকে পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেই কোনো যাতায়াতের সুবিধা। অতিরিক্ত লোকসমাগমের ফলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে লেগে যাচ্ছে দীর্ঘ যানজট। যার ফলে ভোগান্তির কবলে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক সহ পথচারীরা। ক্যাম্পাস থেকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় যেতে যেখানে ১ ঘণ্টা যথেষ্ট সময়। সেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা দীর্ঘ যানজটের লাইনে থাকতে হয় তাদের। অভিভাবকদের দাবি এ সব সমস্যার সমাধান করার পূর্বে কেন জাবি প্রশাসন ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে? প্রশাসনের সঠিক ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া উচিত বলে অভিমত তাদের।

এসব সমস্যা ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজরে আনার চেষ্টা করেছে কর্মরত সাংবাদিকরা। সে সময় প্রশাসন বিষয়গুলোকে গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়ে সমাধানের আশ্বাস দিলেও তার দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে নি।  

এসব বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কার্নিজের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনের সুইচ অফ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads