অবৈধ ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

অবৈধ ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ

  • প্রকাশিত ১০ এপ্রিল, ২০২১

শামীম আনসারী, নওগাঁ 

জেলার মহাদেবপুরে অনুমোদন ছাড়াই গড়ে ওঠা ইটভাটাগুলো পরিবেশের বিপর্যয় ডেকে আনছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর এসব ভাটা বন্ধে তেমন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। ফলে ইটভাটা মালিকরা আরো বেপরোয়া। কিছু কয়লা রাখা হলেও কয়েকটি ভাটায় দেদার পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। এর ফলে একদিকে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, অন্যদিকে উজাড় হচ্ছে গাছপালা। ধংস হচ্ছে তিন ফসলী কৃষি জমি।

উপজেলার চাঁন্দাশ ইউনিয়নের বাগডোব এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের পাশেই ফসলি জমি নষ্ট করে তৈরি করা হয়েছে বিশাল ইটভাটা। চারিদিকে বোরো ধানের ক্ষেত। সেসব জমির সঙ্গে লাগোয়া জায়গায় তৈরি কাঁচা ইট শুকানো হচ্ছে। ভাটায় কয়লা থাকলেও চারপাশে জমা করে রাখা হয়েছে হাজার মণ বিভিন্ন গাছের গুঁড়ি।

ভাটায় দেখা যায়, পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। সেখানে কাজ করা শ্রমিকরা জানালেন, ভাটায় আগুন জ্বালানোর জন্য কাঠের প্রয়োজন হয়। প্রতিবার আগুন জ্বালাতে সাতশ থেকে আটশ মণ কাঠ লাগে।

এই ইটভাটাটির নাম আল আমিন ব্রিকস। মালিক মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা ইউসুফ আলী। তিনি বললেন, সবাই কাঠ পোড়ায়, তাই আমিও পোড়াচ্ছি। ইটভাটার কাছেই বাগডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, মসজিদ, বাজারসহ অনেক বসতবাড়ি। ভাটার পাশ দিয়েই চলে গেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের মহাদেবপুর-ছাতড়া পাকা সড়ক। ইটভাটার জন্য সামান্য দূর থেকে ভেকু মেশিন দিয়ে ফসলি জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে এনে, তা দিয়েই ইট তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিদিন মাটি বোঝাই অসংখ্য ট্রাক্টর চলাচলের ফলে সড়কটির সংস্কার কাজ মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।

ভাটা সংলগ্ন জমির মালিকেরা জানালেন, প্রতিবছর ভাটার কালো ধোঁয়ায় ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়। কিন্তু ভাটা মালিক এর জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ দেন না। এই ইটভাটা পরিবেশের মারাত্মক দূষণ করছে বলেও তারা জানান।

মহাদেবপুর ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও খাজুর ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন বলেন, মহাদেবপুরে ১৭টি ইটভাটার মধ্যে ১০টি উন্নত ঝিকঝাক ভাটা হলেও বাকী সাতটি এখনও ফিক্সড চিমনির ভাটা। এগুলোতে জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করা প্রয়োজন হয়। কিন্তু কাঠ পোড়ানোর দায় সমিতির নয়। যারা কাঠ পোড়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মকবুল হোসেন বলেন, মহাদেবপুরের ১৭ ইটভাটার একটিরও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মিলন বলেন, ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর সুযোগ নেই। ইটভাটাগুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads