একদিকে চরাঞ্চলে চলছে কৃষাণ-কৃষাণিদের নানান কর্মযজ্ঞ। কেউ ডাল ফসল উত্তোলন করছে, কেউ ধান কাটছে, কেউবা ধান মাড়াই ঝাড়াই করছে। অন্যদিকে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় প্রত্যাশানুযায়ী ফসল ওঠেনি কৃষকের ঘরে। রবি মৌসুমে সাধারণত দেশে বৃষ্টিপাত কম হয়ে থাকে। কিন্তু অন্য বছরের চেয়ে এ বছর একেবারই বৃষ্টি হয়নি। ফলে অনাবৃষ্টির কারণে কৃষি অঞ্চল খ্যাত টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের যমুনার চরাঞ্চলের কৃষকদের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে।
কৃষকেরা আশা করে রবি মৌসুমে রোপন/ বপন করেছিলেন বিভিন্ন প্রকারের বীজ। আশা করেছিল তিন মাস পরেই ঘরে তুলবেন সোনার ফসল। কিন্তু আশা নিরাশায় পরিণত হলো। এ মৌসুমে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আশানরূপ ফসল হয়নি। বিশেষ করে ডাল জাতীয় ফসল খেসারির ফলন কিছুটা হলেও একেবারেই ভালো হয়নি মসুরের ফলন। এছাড়াও বোরো ধান, মসলা জাতীয় ফসলের আবাদও ভালো হয়নি। এদিকে বোরো ধান ঘরে তুললেও চিটা হওয়ায় হতাশ কৃষক। এদিকে অন্যান্য বছর বাদামের বাম্পার ফলন হলেও এবার ফলন ভাল না হওয়ায় কৃষকের কপালে ভাজ পড়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার কালিপুর, কোনাবাড়ি, গোপারগঞ্জ, জয়পুর, রুলিপাড়া, খানুরবাড়িঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের হতাশার কথা।
খানুরবাড়ি গ্রামের কৃষক শাহাদৎ হোসেন সাধু বলেন, এবারই প্রথম সাড়ে তিন বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলাম কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে ভালো ফলন পায়নি।
কালিপুরগ্রামের কৃষক আমির আলী বলেন, এবার পাঁচবিঘা জমি বর্গা নিয়ে মসুর ও খেসারি ডাল বুনেছিলাম কিন্তু বৃষ্টির কারণে ডাল একেবারেই ভালো হয়নি বিশেষ করে মসুর ক্ষেত পুড়ে গেছে। গত বছর বর্গা নিয়ে প্রায় এক লাখ টাকার ডাল বিক্রি করেছিলাম। কিন্তু এবার অনাবৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলাম।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাসেল আল মামুন বলেন, এবার রবি মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় মসুরের ফলন কম হলেও খেসারির ফলন ভালো হয়েছে। তবে গত বছর ডাল ফসলের ফলন ভালো হওয়ায় আবাদী জমির পরিমাণ বেড়েছে। এবার মসুর ২ হাজার ও খেসারি ২২'শ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এছাড়া ৭ হাজার ৯৮ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। তাছাড়া খড়ের দাম বেশি থাকায় দিনদিন বোরো চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে।